পুবের কলম ওয়েবডেক্স : সোমবার সন্ধ্যায় কলকাতায় নিজস্ব বাসভবনে ইন্তেকাল করেন আবদুল আযীয আল আমানের সহধর্মিনী মরিয়ম আযীয (ইন্না লিল্লাহে ওয়া ইন্না ইলাইহে রাজেউন)। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর। বয়সজনিত কারণে তাঁর মৃত্যু বলে জানিয়েছে পরিবার। বারাসতের সোলেমানপুরে পারিবারিক গোরস্থানে দাফন হয় মরহুমার। মঙ্গলবার তাঁর জানাযায় অংশ নেন বহু মানুষ।
বেগম মরিয়মের জন্ম দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাটানগরের এক বর্ধিষ্ণু পরিবারে। আবদুল আযীয আল আমানের সঙ্গে বিবাহ সূত্রে আবদ্ধ হওয়ার পর সাহিত্য ও প্রকাশনার জগতে যথেষ্ট সুনামের অধিকারী হয়ে ওঠেন তিনি। আবদুল আযীযের কলেজস্ট্রিটে নিজস্ব প্রকাশনা হরফ প্রকাশনী থেকে নিয়মিত প্রকাশিত হত কাফেলা ও বেগম পত্রিকা। বেগম পত্রিকার সম্পাদনার দায়িত্ব ছিল বেগম মরিয়মের উপর। সেইসময় মহিলাদের জন্য প্রকাশিত মাসিক কাফেলা পত্রিকা ঠাঁই পেয়েছিল সাহিত্যনুরাগী মুসলিমদের ঘরে ঘরে– লাইব্রেরি ও ক্লাবের পাঠভবনে। আবদুল আযীযের সাহিত্যকর্মেও তিনি সমান যোগদান করেছিলেন। আবদুল আযীয তাঁর অধিকাংশ পুস্তক উৎসর্গ করেছেন নিজ সহধর্মিনীকে। এছাড়াও হরফ প্রকাশনীর প্রকাশনার সঙ্গেও নিবিড় সম্পর্ক ছিল বেগম মরিয়ম আযীযের।
আবদুল আযীযের ইন্তেকালের পর সুযোগ্য পুত্র মীরাজুল আযীয ও মনিরুল আযীযকে সঙ্গে নিয়ে হরফ প্রকাশনীর প্রকাশনা ও প্রিন্টিংয়ের দায়িত্ব সামলে নিয়েছিলেন তিনি। মরিয়ম আযীযের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন সাহিত্য ও প্রকাশনা জগতের বহু মানুষ।
পুবের কলম পত্রিকার সম্পাদক আহমদ হাসান ইমরান মরিয়ম আযীযের ইন্তেকালে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, বেগম মরিয়ম আযীয ছিলেন বাংলার সাহিত্য ও সংবাদমাধ্যমের কাছে প্রেরণা। আবদুল আযীয আল আমান ও বেগম মরিয়ম আযীয সেই ৭০-এর দশকে মুসলিম সাহিত্য ও মিডিয়া প্রেমিদের উদ্বুদ্ধ করেছিলেন আন্তরিকভাবে। তাঁরা চেয়েছিলেন কলকাতায় মুসলিম সংবাদ ও সাহিত্য প্রেমিদের জন্য এক মজবুত প্ল্যাটফর্ম তৈরি হোক। আর সেই কাজে সফল হয়েছিলেন তাঁরা। বাংলার সাহিত্য প্রেমিদের কেন্দ্রবিন্দু ছিল কলেজস্ট্রিটের হরফ প্রকাশনী ও তাঁদের ইলিয়ট রোড সংলগ্ন বাসভবনটি। ১৯৯৪ সালে হরফ ‘তাঁর সাহেবকে’ হারিয়েছিল আর ২০২১ সালে হারালো স্বনামধন্য বেগমকেও।