দেবশ্রী মজুমদার, শান্তিনিকেতন : মামা দু:খ শ্যাম চিত্রকরের কাছে পটে হাতেখড়ি মন্টু মিঞা ওরফে মন্টু চিত্রকরের। জুলাই মাসে ছাপান্ন বছরে দাদাকে কোভিডে হারিয়ে কোভিড সচেতনতার গান গাইতে এসেছেন ডাকবাংলোমাঠের পৌষমেলায়। গান ও সুর দাদার নিজের। শুধু পেশা নয়, মনের তাগিদে এসেছেন বোলপুরের পৌষ মেলায়। দাদা গুণধর চিত্রকর এপিজে আব্দুল কালামের হাত থেকে পুরস্কার পান পট শিল্পের জন্য । ” শুনো শুনো বাবুমশাই! সবাইকে বলা চাই। দূরত্ব বজায় রাখা চাই। বিয়ে বাড়ি জমায়েতে না যাওয়াই ভালো। বন্ধু বান্ধবদের বেশি বেশি করে বলো”। এই গান গেয়ে ডাকবাংলো মাঠে প্রচারে করোনা যোদ্ধার ভূমিকা পালন করছেন মিন্টু চিত্রকর।
কলের গানের যুগে পট খেলার চল আর নেই। হয়তো আর পেট চলতো না। যদি মাথায় মায়ের মতো মমতা না থাকতো। কথাগুলো আবেগমথিত হয়ে বললেন, পটুয়া মন্টু চিত্রকর। মন্টু চিত্রকরের বাড়ি পশ্চিম মেদনীপুরের পিংলা থানার নয়া গ্রামে। মন্টু চিত্রকরের পরিবারের দুই মেয়ে ও এক ছেলে এবং স্ত্রী নিয়ে তাঁর সংসার। ডাকবাংলো মাঠে স্ত্রী জবা চিত্রকর, ছোট মেয়ে সোনিয়া চিত্রকর এবং সঞ্জয় চিত্রকরেরা মেলায় পটের খেলা দেখিয়ে মনোরঞ্জন করেন। রবিবার পূর্ণেন্দু বসুর সামনে পটের খেলা দেখান। মন্টু চিত্রকর বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মাসে আমাদের হাজার টাকা ভাতা দেন।
শুধু তাই নয় সরকারি অনুষ্ঠানে বিদেশেও পাড়ি দিয়েছি। মন্টু চিত্রকর অস্ট্রেলিয়া গিয়েছেন একবার । বাংলা ডট কমের সহযোগিতায় তাঁর মেয়ে সোনিয়া জার্মানি ও স্ত্রী জবা চিত্রকর দুইবার প্যারিস ও একবার জাপান গেছেন। ছেলেমেয়েদের আট ক্লাস আর নিজের চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা বলে জানান তিনি । নিজে মুসলিম সম্প্রদায় ভূক্ত কিন্তু হিন্দু দেবদেবী নিয়ে পট আঁকা ও পটের গান গেয়ে চলেছেন বছরের পর বছর। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির আলোকে বহু পটের গান নিজেও লিখেছেন। গোধরা কাণ্ড গুজরাট দাঙ্গা নিয়েও পটের গান গেয়ে সম্প্রীতির বার্তা বাহক হয়েছেন গ্রামগঞ্জে। আঠারো সালে ইণ্ডিয়া গেটে প্রধান মন্ত্রী দফতর আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্লাসটিক বিরোধী সচেতনতা নিয়ে পট খেলা বা পটের গান গেয়েছেন।