“আমি যাইমু ও যাইমু আল্লাহর সঙ্গে
হাছন রাজা আল্লাহ বিনে কিছু নাহি মাঙ্গে ।
আল্লাহ রূপ দেইখা হাছন হইয়াছে ফানা ,
নাচিয়া নাচিয়া হাছন গাইতে আছে গানা”
পুবের কলম ওয়েবডেস্কঃ আজ ৬ ডিসেম্বর মরমি কবি, গায়ক হাসন রাজার ৯৯ তম প্রয়াণ বার্ষিকী। ১৮৫৪ সালের ২১ ডিসেম্বর অবিভক্ত বাংলার বর্তমানে বাংলাদেশের সুনামগঞ্জ শহরের লক্ষণশ্রীর ধনী জমিদারপরিবারে জন্ম নেন হাসন রাজা।
সঙ্কীর্ণ ধর্মীয় ভেদাভেদ অতিক্রম করে হাসন গেয়েছেন মানবতার গান। মরমীয়া হাসনের গানে মুগ্ধ হন স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। ১৯২৫ সালে কলকাতায় এবং ১৯৩৩ সালে লন্ডনে দেওয়া বক্তব্যে হাসন রাজার দুটি গানের প্রশংসা করেছিলেন।
সুনামগঞ্জ শহরের তেঘরিয়ার জন্মভিটায় হাসন রাজার নামে একটি পূর্ণাঙ্গ মিউজিয়াম করার দাবি উঠছে দীর্ঘদিন ধরেই।
পিতা ছিলেন, প্রতাপশালী জমিদার দেওয়ান আলী রাজা চৌধুরী ও মায়ের নাম হুরমত বিবি। তাদের তৃতীয় পুত্র ছিলেন হাসন । সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা, রামপাশা, লক্ষণশ্রী আর সিলেটের একাংশ নিয়ে পাঁচ লাখ বিঘার বিশাল অঞ্চলের জমিদার ছিলেন মরমী গীতিকবি হাসন রাজা। পিতা ও মাতা উভয়ের কাছ থেকে পাওয়া বিশাল জমিদারীর মালিকানা চলে আসে কিশোর বয়সে তাঁর হাতে। বেহিসাবী সম্পদ আর ক্ষমতার দাপটে বেপরোয়া জীবন যাপনে অভ্যস্ত হয়ে পড়েন তিনি। কিন্তু এক সময় তার ভেতরের ভ্রান্তি ঘুচে যায়।
তিনি তাঁর সম্পদ জনকল্যাণের জন্য উইল করে দিয়ে কয়েকজন সঙ্গিনীকে নিয়ে হাওরে হাওরে ভাসতে থাকেন। আর এর মধ্যে খুঁজতে থাকেন সেই মহা পরাক্রমশীলকে। সৃষ্টিকর্তাকে খুঁজতে খুঁজতে এক সময় আবিষ্কার করেন, তাঁর নিজের মধ্যেই তাঁর বাস। সৃষ্টিকর্তার প্রেমে পাগল হাসন রাজা সেই সময় থেকেই নিজের সৃষ্টি গান গেয়েই বিখ্যাত হয়েছেন দেশে-বিদেশে। মৃত্যু শতবর্ষের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়েও আজও যেন কিছুটা উপেক্ষিত মরমীয়া কবি হাসন রাজা।