পুবের কলম, ওয়েবডেস্কঃ করোনা নতুন ভাইরাসের নাম ওমিক্রন বা বি.১.১৫২৯। এবার সেই আতঙ্ক কি এল রাজ্যে! দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে দিল্লি হয়ে মুম্বইয়ে আসা এক যাত্রীর মধ্যে করোনা পজিটিভ ধরা পড়ল। তবে ওই ব্যক্তির ওমিক্রনে আক্রান্ত কিনা তা এখনও জানা যায়নি। ওই ব্যক্তির সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের খোঁজ চলছে।
মুম্বইয়ের ডোম্বিভলির ৩২ বছর বয়সী বাসিন্দা ২৪ নভেম্বর দক্ষিণ আফ্রিকার কেপ টাউন থেকে দিল্লি হয়ে মুম্বই পৌঁছন। সেখানেই তাঁর করোনা পরীক্ষা হয়। এর পর তিনি মুম্বইয়ে আসেন। পরীক্ষার পরই জানা যায় ওই ব্যক্তির শরীরে করোনা পজিটিভ। তবে আক্রান্ত আক্রান্ত উপসর্গহীন। মুম্বইয়ে হোম কোয়ারেন্টাইনে ছিলেন ওই ব্যক্তি। পরে পুরসভার তরফে তাকে পাঠানো হয় তাকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে। তার সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের খোঁজ করা হচ্ছে। পুরো বিষয়টি এয়ারপোর্ট অথরিটিকেও জানানো হয়েছে জানিয়েছেন কল্যাণ ডোম্বিভলি পুরসভার স্বাস্থ্য আধিকারিক।
মহারাষ্ট্রের অতিরিক্ত সচিব (স্বাস্থ্য) ডাঃ প্রদীপ ব্যাস বলেছেন, ‘জেনোম সিকোয়েন্সের জন্য ওই ব্যক্তির নমুনা পাঠানো হয়েছে। পরীক্ষাতেই বোঝা যাবে ওই ব্যক্তি ওমিক্রনে আক্রান্ত কিনা’।
করোনার নতুন প্রজাতি ওমিক্রন ক্রমশই উদ্বেগ বাড়িতে তুলছে। রাজ্য ও কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলগুলিকে নির্দেশিকায় বলা হয়েছে বিদেশ থেকে আসা যাত্রীদের আগের ১৪ দিনের ট্রাভেল হিস্ট্রি জমা করতে হবে। পাশাপাশি আগের মতোই কোভিড নেগেটিভ রিপোর্টও বাধ্যতামূলক। নতুন গাইডলাইন অনুসারে, যেসব দেশে ওমিক্রন নিয়ে ‘ঝুঁকি’ রয়েছে, সেসব দেশ থেকে এলে শুধু কোভিড নেগেটিভ রিপোর্টেই হবে না। সাত দিনের কোয়ারেন্টিনও বাধ্যতমূলক। ১ ডিসেম্বর থেকে চালু হচ্ছে এই নতুন নিয়ম। বিদেশ থেকে ভারতে আসা যাত্রীদের আরটিপিসিআর পরীক্ষার নেগেটিভ রিপোর্ট জমা করতে হবে। যাত্রার আগের ৭২ আগে করোনা আরটিপিসিআর টেস্টই বৈধ হবে।
১২টি দেশকে আপাতত ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ বলে ধরা হয়েছে। সেগুলো হল দক্ষিণ আফ্রিকা, ব্রাজিল, বৎসোয়ানা, বাংলাদেশ, ব্রিটেন, চীন, মরিশাস, নিউজিল্যান্ড, জিম্বাবোয়ে, সিঙ্গাপুর, হংকং, ইজরায়েল। এই দেশগুলো থেকে যাঁরা আসবেন, তাঁদের এদেশের বিমানবন্দরে অবতরণের পর ফের পরীক্ষা করাতে হবে। সেই রিপোর্টের জন্য বিমানবন্দরে বসেই অপেক্ষা করতে হবে। রিপোর্ট নিয়ে তবেই বিমানবন্দর থেকে বেরোতে পারবেন, নয়তো কানেকটিং ফ্লাইট ধরা যাবে না।
করোনা ভাইরাসের নতুন ‘সবচেয়ে খারাপ ও উদ্বেগ সৃষ্টিকারী ধরণ’টির কথা প্রকাশ করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, যার নাম দেওয়া হয়েছে ওমিক্রন। ভ্যারিয়েন্টটির বিপুল সংখ্যক মিউটেশন রয়েছে, যার মধ্যে বেশ কয়েকটি উদ্বেগের বলে উল্লেখ করা হয়েছে। গত ২৪ নভেম্বর দক্ষিণ আফ্রিকায় এই ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হওয়ার খবর জানতে পারে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
এই ভেরিয়েন্টকে উদ্বেগজনক বলার কারণ, এটির বিপজ্জনক মিউটেশন ঘটে চলেছে এখনও। বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন ইতিমধ্যেই ৫০ বার জিনগত পরিবর্তন ঘটেছে৷ এর মধ্যে স্পাইক প্রোটিনে বদল হয়েছে প্রায় ৩০ বার৷ এই ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে ইতিমধ্যেই জোরকদমে গবেষণা চলছে। ইতিমধ্যেই দক্ষিণ আফ্রিকা ও তার পার্শ্ববর্তী দেশগুলির সঙ্গে উড়ান বাতিল করেছে একাধিক দেশ।