দেবশ্রী মজুমদার, শান্তিনিকেতন : এ বছর গ্লোবাল রিসার্চ ফাউণ্ডেশন (GRF) ও ইন্দোনেশিয়ার ত্রুনোময়া বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত আন্তর্জাতিক পুরস্কার ও সম্মানে ভূষিত হলেন বিশ্বভারতীর দর্শন ও তুলনামূলক ধর্মতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম। এই সম্মান তাঁর কর্মভূমি বিশ্বভারতীর কাছে নিশ্চিতরূপে গরিমার বলে মনে করছেন আশ্রমের অনেকেই। গত ৫ই সেপ্টেম্বর কতৃপক্ষ তাঁকে এ ব্যাপারে সূচিত করা হয়। সদ্য সে পুরস্কার-স্মারক ও মানপত্র সহ তাঁর কাছে এসে পৌঁছায়। এই আন্তর্জাতিক সংস্থা ড. ইসলামকে শিক্ষা, প্রকাশনা ও গবেষণায় সৃজনশীল এবং উল্লেখযোগ্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ এই পুরস্কারে মনোনীত করেছে।
জানা যায় যে, দেশ-বিদেশের কয়েক হাজার মনোনয়ন এবার জমা পড়েছিল, কিন্তু তার মধ্যে থেকে সারা পৃথিবী হতে মাত্র ৭০ জনকে কতৃপক্ষ মনোনীত করেছে এবং ড. সিরাজুল ইসলাম তার মধ্যে অন্যতম। স্বভাবতই ড. ইসলাম জানান, এই স্বীকৃতি দেশের, তথা রাজ্যের এবং তাঁর পরিবার-পরিজন, বন্ধু-বান্ধব ও বিশ্বভারতী এবং শান্তিনিকেতনের জনগণের। জানা গেছে, ড. ইসলাম একজন আন্তর্জাতিক অধ্যাপক ও স্কলার হিসেবে সর্বজন বিদিত।
এর আগেও তিনি অনেকগুলি পুরস্কার লাভ করেছেন, যেমন- রাষ্ট্রীয় গৌরব পুরস্কার, সিদ্ধার্থ আন্তর্জাতিক মিশন কতৃক স্বর্ণপাদক, ড. বি.আর.আম্বেদকর মহাপ্রজ্ঞা পুরস্কার ইত্যাদি। তাছাড়াও ড. ইসলাম তাঁর কাব্য, প্রবন্ধ ও সাহিত্যে অবদানের জন্য অনেকগুলি পুরস্কার ইতিমধ্যেই পেয়েছেন। ড. ইসলাম ১৯৯৭ সালে দ্য ক্যথলিক ইউনির্ভাশিটি অব আমেরিকা, ওয়াশিংটন, ডি.সি-তে ভিটিটিং রিসার্চ প্রফেসর ছিলেন, তিনি পার্লামেন্ট অব ওয়াল্ডস রিলিজিয়ন, শিকাগোর তিন বছর অ্যাম্বসাডার ছিলেন, যেখান স্বামী বিবেকানন্দ ১৮৯৩ সালে বক্তৃতা দিয়ে ভারতীয় ধর্ম ও সংস্কৃতির পুর্ণজাগরণ ঘটিয়েছিলেন। ড. ইসলাম রামকৃষ্ণ মিশন, বেলুড়, রামকৃষ্ণ মিশন ইনস্টিটিউশন অব কালচার, গোলপার্ক ও ইউনেস্কোর বহু আলোচনায় অংশ গ্রহণ ও বক্তৃতা প্রদান করেছেন।
তিনি শুধু একজন দার্শনিক বা ধর্মতত্ত্ববিদ নন, তিনি কবি, সাহিত্যিক ও একজন তুখোড় বক্তা হিসেবে সর্বত্রই প্রশংসা কুড়িয়েছেন। তিনি সারা বিশ্বের বহু দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে বক্তৃতা ও সেমিনারে অংশ গ্রহণ করেছেন। সেগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো- দক্ষিণ আফ্রিকা, তুর্কী, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, থাইল্যাণ্ড, সিঙ্গাপুর, ইরান, নেপাল, বাংলাদেশ, গ্রীস, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপিন্স, হংকং, স্পেন, কাতার, মালয়েশিয়া, চীন, জার্মানী, আর্জেন্টিনা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রভৃতি।