আঁকাবাঁকা– উচুনীচু দাঁত থাকলে যে শুধু দেখতে খারাপ লাগে তা কিন্তু নয়। তা মুখের স্বাস্থ্যের পক্ষেও ক্ষতিকর। শ্বাসে দুর্গন্ধ– মাড়ি থেকে রক্তপাত বা দাঁত নড়ে যাওয়া যে-কোনওটাই হতে পারে। তাই এই ধরনের সমস্যা ফেলে না রাখাই ভালো বলে জানাচ্ছেন বিশিষ্ট ডেন্টাল সার্জেন ডা. দীপাঞ্জয় ঘোষ।
আঁকাবাঁকা দাঁত থাকা মানে দাঁত পরিষ্কার করার সময় বেশ কিছু জায়গায় ব্রাশ পৌঁছতে অসুবিধা হওয়া বা একেবারেই না পৌঁছন। সেখানে খাবারের কণা একবার ঢুকলে তা সহজে বেরোয় না। ফলে সেই জায়গা নোংরাই থেকে যায়। আর একথা ঠিক– দাঁতের বেশিরভাগ সমস্যার কারণ দাঁতের ফাঁকে জমে থাকা খাবার।
জমে থাকা খাবারের জন্য যেমন মুখে দুর্গন্ধ হয়। তেমনই ক্যালকুলাস জমে। ক্যালকুলাস যদিও পাথর নামেই বেশি পরিচিত। আসলে ক্যালকুলাস হল দাঁতের ওপরে পাথরের মতো জমে থাকা অবাঞ্ছিত হলুদ শক্ত আস্তরণ– যার জন্য মাড়ি ও তার নিচের হাড়ের রোগ হতে পারে। এই ক্যালকুলাসের জন্য মাড়িতে সংক্রমণ হয়। সেখান থেকে রক্তপাত হতে পারে।
এবড়ো-খেবড়ো দাঁতে সবচেয়ে বেশি হয় কেরিসের (দন্তক্ষয়) সমস্যা। যাকে আমরা সাধারণভাবে দাঁতে পোকা লাগা বলি। কেরিস হলে দাঁতে ফুটো হওয়া থেকে শুরু করে দাঁতে ব্যথা– এমনকী Alveolar abscess পর্যন্ত হতে পারে।
দাঁতের সারফেস শুধুমাত্র দাঁতের জন্যই কাজে লাগে– তা নয়।
ওপরের ও নীচের দাঁত খাপে খাপ বসে যাওয়াকে Occlusion বলে। আঁকাবাঁকা দাঁত হলে তা হয় না– একে তখন Malocclusion বলা হয়।
Malocclusion হলে খাবার চিবানোর সময় যে দাঁতের যে অংশে যতটা ফোর্স বা চাপ পড়া উচিত— তা পড়ে না। ভুল জায়গায় সেই চাপ পড়ে। ফলে সেই চাপ দাঁত ও চোয়ালের হাড়ের সকেটের মধ্যে থাকা লিগামেন্টের মাধ্যমে সকেটের হাড়ে চলে যায়। ভুলভাবে আসা ফোর্সের ফলে সকেটের হাড় ক্ষয়ে যেতে থাকে। এর ফলে মাড়ি নেমে আসে– ও দাঁত আলগা হয়ে যায়।
একইভাবে Malocclusion এর ফলে চোয়ালের জয়েন্ট তথা Temporo-Mandibular Join-এ চাপ পড়ে– যার ফলে সেখানকার হাড়– লিগামেন্ট ও পেশিতে নানারকম সমস্যা দেখা দিতে পারে। কাজেই আঁকাবাঁকা বা এবড়োখেবড়ো দাঁত থাকলে অভিজ্ঞ ডেন্টাল সার্জেনের পরামর্শ নিন।
যোগাযোগ ৯৮০৪৮০৪৪০২
অনুলিখনঃ শ্যামলী বন্দ্যোপাধ্যায়