কৌশিক সালুই,বীরভূম: রাজ্য সরকার সদয় হলেও কেন্দ্র সরকারের বিভিন্ন নীতির ফলে সমস্যায় ইট শিল্পের সঙ্গে যুক্ত কারবারিরা। কয়লার দাম বৃদ্ধি, সরকারি প্রকল্পের বাড়ির টাকা বরাদ্দ বন্ধ করে দেওয়া এবং জিএসটি বাড়ানোর ফলে প্রবল সমস্যার মধ্যে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা বলে দাও। প্রতিবাদে বীরভূম জেলার ইট ব্যবসায়ীরা অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য কারবার বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার বীরভূম জেলার ইট ব্যবসায়ীরা সিউড়িতে সমবেত হয়ে কারবার বন্ধ রাখার কথা ঘোষণা করলেন। ইট তৈরীর প্রয়োজনীয় সামগ্রীর দাম বৃদ্ধি চাহিদা কম প্রভৃতি কারণে বর্তমানে বেহালদশা কারবারের বলে দাবি ব্যবসায়ীদের। যেখানে এক বছর আগে কয়লা ৯০০০ টাকা টন প্রতি পাওয়া যেত সেটা বর্তমানে প্রায় ১৬ হাজার টাকাতে ঠেকেছে। ইট কারবারে জিএসটি ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১২% ঘোষণা করেছে কেন্দ্র সরকার। এছাড়াও কেন্দ্র সরকার সরকারি প্রকল্পের বাড়ির টাকা বরাদ্দ কেন্দ্র সরকার বাংলার জন্য কমিয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ। তাছাড়া বালি ১০০ ঘনফুট বালি ২০০০ টাকা তে পাওয়া যেত সেটা দ্বিগুণ হয়ে বর্তমানে ৪০০০টাকা।
সরকারি প্রকল্পের বাড়িতে বিপুল সংখ্যায় ইটের চাহিদা ছিল একসময় কিন্তু বর্তমানে তা শূন্যে এসে ঠেকেছে। সরকারি প্রকল্পের কাজে ইটের ব্যবহার বন্ধ। ফলে একদিকে কাঁচামালের দাম বৃদ্ধি অন্যদিকে চাহিদা একেবারেই তলানীতে। সেই বর্তমান পরিস্থিতিতে ইটের কারবার বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বীরভূম জেলার ব্যবসায়ীরা। বীরভূম জেলায় সরকারি অনুমোদিত এবং পরিবেশ মন্ত্রকের ছাড় পাওয়া ইটভাটার সংখ্যা ২১৬ এবং অনুমোদনের অপেক্ষায় প্রায় একশো পঁচাত্তর টির বেশি ইটভাটা।
এই কারবারের সঙ্গে লক্ষাধিক মানুষের প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে রুজি-রুটি জড়িয়ে আছে। ফলে বর্তমান পরিস্থিতিতে তারা প্রায় সকলেই প্রবল সমস্যার সম্মুখীন হবেন বলে দাবি ব্যবসায়ীদের। বীরভূম জেলায় ইটভাটা মালিক সমিতির সভাপতি সুবোধ ঘটক বলেন,” বর্তমান অতি মারি পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকার গত বছর রয়েলটি ৫০% মুকুব করেছিল।
এছাড়াও পরিবেশ মন্ত্রকের ছাড় ছাড়া ৫ফুট পর্যন্ত মাটি কাটার অনুমতি দিয়েছিল। ফলে আমাদের কারবার করতে সুবিধা হচ্ছিল। কিন্তু কেন্দ্র সরকার কয়লার দাম কার্যত দ্বিগুণ করেছে জিএসটি দ্বিগুন এর থেকেও বেশি বাড়িয়েছে। সরকারি প্রকল্পের টাকা বরাদ্দ করতে রাজ্য সরকারের উপর বিমাতৃসুলভ আচারণ ফলে সংশ্লিষ্ট বাড়ি তৈরীর ক্ষেত্রে একটা বিপুল সংখ্যায় ইটের চাহিদা থাকে যেটা বর্তমানে বন্ধ। একদিকে উৎপাদন খরচ কয়েক গুণ বেড়ে যাচ্ছে আর চাহিদা শূন্যে এসে ঠেকেছে। এই পরিস্থিতিতে আমরা বাধ্য হয়ে কারবার বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি অবিলম্বে সমস্যা সমাধানের দাবি করছি”।