কৌশিক সালুই,বীরভূমঃনিম্নচাপের জেরে অকাল বর্ষণে মাথায় হাত চাষীদের। বীরভূম জেলায় গত শনিবার থেকে শুরু হওয়া নিম্নচাপের বৃষ্টিপাত কার্যত পাকা ধানে মই। পাকা ধানের পাশাপাশি আলু তৈলবীজ শীতকালীন শাকসবজি চাষেও ক্ষতির আশঙ্কায় চাষিরা। কৃষকের লোকসানের পাশাপাশি শাক সবজি বাজারে ফের আগুন লাগার সম্ভাবনা।
আশ্বিন মাসের ব্যাপক নিম্নচাপের বৃষ্টির পর ফের মাসখানেকের মধ্যে আরও একবার নিম্নচাপের বৃষ্টি বীরভূম জেলা জুড়ে। শনিবার সকাল সাড়ে আটটা থেকে রবিবার সকাল সাড়ে আটটা পর্যন্ত ২৪ ঘন্টায় জেলায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ৪৯.০৫ মিলিমিটার।
পাকাধান ক্ষেত থেকে বাড়িতে তোলার সময় অকাল বর্ষণে কার্যত মাথায় হাত জেলার ধান চাষীদের। মাঠে পড়ে থাকা ধানে এই বৃষ্টিতে যথেষ্ট ক্ষতি হতে চলেছে। বর্ষার সময় স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত হওয়ায় প্রধান অর্থকরী ফসলের ফলন আশানুরূপ হতে পারে সেই আশায় বুক বেঁধেছিল চাষিরা। নিম্নচাপের দৃষ্টি কার্যত সেই আশায় জল ঢালতে চলেছে।
শুধু মাঠে পড়ে থাকা পাকা ধান নয় আলু,তৈলবীজ এবং শাকসবজি চাষেও ক্ষতি হতে চলেছে। সাধারণত শীতকালে যে শাকসবজির দাম খুবই কম থাকে সেটা এবছর অনুমান বিশেষজ্ঞদের। বীরভূম জেলায় এবছরের বর্ষার ধান চাষ প্রায় ৩ লক্ষ সাত হাজার হেক্টর জমিতে হয়েছে। যা কৃষি দপ্তরের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করেছিল। অক্টোবর মাসের শুরুতে ধানের শীষ ধরতে শুরু করে আর তখনই পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাতের প্রয়োজন হয়। বীরভূম জেলায় আগস্ট মাস পর্যন্ত জেলাতে পর্যাপ্ত বৃষ্টি হলেও সেপ্টেম্বর মাসের প্রথমে বৃষ্টি কিছুটা ঘাটতি দেখা দেয়।
যদিও অক্টোবর মাসের সেই নিম্নচাপ ঘাটতি পূরণ করে। বর্তমান নিম্নচাপের অকাল বৃষ্টিতে নিচু এলাকার ধানের জমিতে জল জমে থাকলে তাতে ক্ষতি হবার আশঙ্কা থাকছে। এই বৃষ্টিতে শাক সবজি গাছে ছত্রাকের আক্রমণ হতে পারে। বপন করা আলু পচে যেতে পারে। আবার শাকসবজির ছোট চারা গাছ নষ্ট হয়ে যেতে পারে। শাকসবজির মাঠে সেক্ষেত্রে ছত্রাক নাশক ব্যবহারের পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। বীরভূম জেলা এগ্রোমেট শাখা শ্রীনিকেতন রথীন্দ্র কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের কৃষি ও আবহাওয়া বিশেষজ্ঞ সায়ক মাহাতো বলেন,” তামিলনাড়ু থেকে পশ্চিমবঙ্গ পর্যন্ত একটি নিম্নচাপ অক্ষরেখার ফলে পাকা ধান ঘরে তোলার সময় অকাল বর্ষণ হচ্ছে। মাঠে যাতে কোনভাবে জল জমে না থাকে তার জন্য কৃষক ভাইদের নজর রাখতে হবে। শাক সবজির ক্ষেত্রে ছত্রাকনাশক প্রয়োগ করতে হবে। শাকসবজির গাছ বা বপন করা আলু যেখানে পচে গিয়ছে সেখানে আবার নতুন করে চারা বা বীজ লাগানোর পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে”।