উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়, গোসাবাঃ আবার সবুজ আবিরে সেজে উঠল সুন্দরবন। সুন্দরবনের দ্বীপ ঘেরা গোসাবা বিধানসভার উপনির্বাচনে রেকর্ড ভোটে এবার বিজয়ী হলেন তৃণমূলের সুব্রত মণ্ডল। গোসাবার ইতিহাসে এই প্রথম এত ভোটে জিতে কোনও বিধায়ক নির্বাচিত হলেন।
সদ্য বিধায়ক নির্বাচিত হয়ে সুব্রত মণ্ডল বলেন– ‘নদী ও দ্বীপ ঘেরা সুন্দরবনের গোসাবার উন্নয়নই আমার প্রথম কাজ হবে। গদখালি সেতু নির্মাণ–স্বাস্থ্য কেন্দ্রের উন্নয়ন– পর্যটন মানচিত্রে থাকা এই এলাকাকে সাজিয়ে তোলাই আমার কাজ হবে। এছাড়া রাস্তা– বিদ্যুৎ যোগাযোগ– সেচ ব্যবস্থা সহ একাধিক কাজ করব। এখানকার মানুষ এত ভোটে আমাকে জয়ী করিয়ে আমার দায়িত্ব আরও বাড়িয়ে দিলেন।’
দীর্ঘ দিনের বাম দূর্গ বলে পরিচিত ছিল একসময়ের জয়নগর লোকসভার এই গোসাবা বিধানসভা কেন্দ্রটি। ২০১১ সাল থেকে টানা তিনবারের বিধায়ক ছিলেন তৃণমূলের জয়ন্ত নস্কর। গত এপ্রিল মাসের ভোটে জয়ন্ত নস্কর ২৩– ৭০৯ ভোটে বিজেপির চিত্ত প্রামাণিকককে পরাজিত করেছিলেন। কিন্তু গত ১৯ জুন হৃদরোগে আচমকা মৃত্যু ঘটে জয়ন্ত নস্করের। আর তাঁর বিধায়ক শূন্য এই আসনে ভোট নেওয়া হয় গত ৩০ অক্টোবর। মঙ্গলবার সকাল থেকে কেন্দ্রীয় বাহিনী ও রাজ্য পুলিশের নিরাপত্তার ঘেরাটোপে ক্যানিংয়ের ট্যাংরাখালি বঙ্কিম সরদার কলেজে গোসাবার উপনির্বাচনের ভোট গণনা অনুষ্ঠিত হয়। ২–৩০–০০৫ জন ভোটার নিয়ে গঠিত এই বিধানসভায় এবারের উপনির্বাচনে ১–৮৩–৪০০ জন ভোটার ভোটদানে অংশ নেন। ভোট পড়ে ৭৯.৮৪ শতাংশ। এদিন ১৬টি রাউন্ডে ২১টি টেবিলের মধ্যে দিয়ে এই ভোট গণনা করা হয়।
আরও পড়ুনঃজয়ী প্রার্থীদের শুভেচ্ছা বার্তা মমতার
এদিন সকাল বেলা থেকে ভোট গণনা শুরু হওয়ার পর থেকে প্রতি রাউন্ড যত এগিয়েছে তৃণমূল প্রার্থীর জেতার ব্যবধান ততই বেড়েছে। ১৬ রাউন্ড গণনার শেষে তৃণমূল প্রার্থী সুব্রত মন্ডলের প্রাপ্ত ভোট ১–৬১–৪৭৬– বিজেপি প্রার্থী পলাশ রানার প্রাপ্ত ভোট ১৮–৪২৩– আর এস পি প্রার্থী অনিল চন্দ্র মন্ডলের প্রাপ্ত ভোট ৩–০৭৮– নির্দল প্রার্থী তোতন মন্ডলের প্রাপ্ত ভোট ১২৬২ এবং নোটায় পড়েছে ৯৭১ টি ভোট। তৃণমূল প্রার্থী বিজয়ী হন ১–৪৩–০৫১ টি ভোটে। এই ভোটে পোস্টাল ভোট পান তৃণমূল ১২৪৩টি– বিজেপি ৮৫ টি– আর এস পি ৩ টি ও নির্দল ১ টি ভোট। এদিন গণনা কেন্দ্রের বাইরে সবুজ আবির মেখে উৎসবে মেতে ওঠেন তৃণমূল কর্মী সমর্থকরা। অসামান্য জয়ের পরে তৃণমূল প্রার্থীকে শুভেচ্ছা জানাতে গণনাকেন্দ্রে হাজির হন তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক তথা বিধায়ক সওকাত মোল্লা– বিধায়ক পরেশ রাম দাস– তৃণমূল সুন্দরবন জেলার সভাপতি তথা বিধায়ক যোগরঞ্জন হালদার– তৃণমূল সুন্দরবন জেলার যুব সভাপতি বাপি হালদার।