বিশেষ সংবাদদাতাঃ সম্প্রতি ফেসবুক কর্ত্তৃপক্ষ ভারতের সিপিআই(মাওবাদী) সহ বেশ কিছু সংগঠনকে ‘বিপজ্জনক’ বলে আখ্যায়িত করে এই সব সংস্থার মন্তব্য ফেসবুক ওয়ালে নিয়ন্ত্রণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ১০০ পৃষ্ঠার যে ‘বিপজ্জনক ব্যক্তি এবং সংস্থা’র তালিকা তৈরি করেছে ফেসবুক তার মধ্যে ফিলিস্তিন রিলিফ ফাণ্ড থেকে শুরু করে খালিস্তান টাইগার ফোর্স, খলিস্তান জিন্দাবাদ ফোর্স, নাগাল্যাণ্ডের এনএসসিএন, অসমের ইউএলএফ, মণিপুরের পিএলএফ, গারো ন্যাশানাল আর্মি, কাঙলেইপাক কমিউনিস্ট পার্টি, আইএস, আল কায়েদা, লস্কর–এ–তইবা ইত্যাদি মোট ৪০০০ ব্যক্তি এবং সংগঠনের নাম রয়েছে। কিন্তু ‘সনাতন সংস্থা’ নামে যে সংগঠন সাংবাদিক গৌরী লঙ্কেশ, নরেন্দ্র দাভোলকর এবং এম এম কালবুর্গির মতো যুক্তিবাদীদের হত্যা করেছে বলে প্রমাণিত তার নাম নেই। নেই সেই ‘অভিনব ভারত’ নামে সংগঠনের নামও , যার সঙ্গে প্রজ্ঞা সিং ঠাকুর জড়িয়ে মালেগাঁওতে ২ বার বিস্ফোরণ ঘটায় বলে মহারাষ্ট্রের অ্যান্টি টেররিস্ট স্কোয়াড এর তদন্ত দল রিপোর্ট দিয়েছিল। সেই মামলা এখনও চলছে।
ফেসবুকের অফিসার ফ্রান্সিস হগেন কর্ত্তৃপক্ষকে অভিযোগ করেছিল যে, ভারতে সংঘপরিবার ভূয়ো ভিডিয়ো ফেসবুকে ছেড়ে বহু জায়গায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করছে। তাই তাদের নামও কালো তালিকায় রাখা দরকার।সংঘ পরিবারের নাম কালো তালিকায় রাখা তো দূরের কথা এরপর ফ্রান্সিসকে চাকরি ছাড়তে হয়েছিল।ফ্রান্সিস আমেরিকার সিকিউরিটি অ্যাণ্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনকে চিঠি লিখে এসব কথা জানিয়েছিলেন। তিনি ওই চিঠিতে জানান, পশ্চিমবঙ্গে এবং কিছু রাজ্যে বিশেষ করে মুসলিমদের বিরুদ্ধে ‘হেট স্পিচ’ ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে তা ফেসবুক কত্তৃর্পক্ষ ভালোভাবেই জানেন। জেনেও কেন নীরব তিনি বুঝতে পারছেন না।
আগে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল পত্রিকায় এই প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল যে, ভারতে ফেসবুকের উচ্চপদস্থ অফিসার আখিঁ দাস(এখন অবশ্য ইনি ফেসবুক ছেড়ে দিয়েছেন বলেই শোনা যায়)কীভাবে বিজেপির এক রাজনীতিবদকে বিপজ্জনক ব্যক্তির তালিকাভূক্ত করার প্রক্রিয়া রুখে দেন। যে কর্মী ওই কাজ করেছিলেন তাঁকে অন্যত্র বদলি করে দেওয়া হয়।ওই বিজেপি রাজনীতিক ফেসবুকে লিখেছিলেন, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের গুলি করে মারা উচিত।
ওই মহিলা অফিসার আরও অন্তত ৩ জন বিজেপি রাজনীতিবিদের ‘হেট স্পিচ’ ফেসবুকের ওয়ালে লেখা সত্বেও ব্যবস্থা নিতে দেননি বলে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছিল ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল–এ। বরং দেখা গিয়েছিল, ফেসবুকের সিদ্ধান্ত নির্ণায়ক কমিটি বজরং দল এবং বিজেপির নেতাদের লেখালেখি নিয়ে কিছু না বলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।অথচ সিআইএর কালো তালিকাভূক্ত সংগঠন হল বজরং দল, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। কিন্তু ফেসবুক কর্ত্তৃপক্ষ ভারতে এদের সম্পর্কে খুব উদার মনোভাব পোষণ করতে আগ্রহী।ফেসবুকের বিরুদ্ধে অভিযোগ হল, এরা আজ পর্যন্ত ৩ থেকে ৫ শতাংশ হেট স্পিচ আটকাতে সক্ষম হয়েছে।ফেসবুক তার কার্যক্ষমতার ৮৭ শতাংশ কাজে লাগায় আমেরিকা সম্পর্কে যাতে না কোনও ভুল তথ্য মানুষের কাছে যায়, তা দেখতে।অথচ ফেসবুকের মোট ব্যবহারকারীর মাত্র ১০ শতাংশ আমেরিকান।এই খবর ‘দ্য ইন্টারসেপ্ট’ পত্রিকায় গত ১২ অক্টোবর সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছে।
আরও খবর পড়ুনঃ
- পবিত্র হজ পালনে সৌদি আরবে ১৪ হাজীর মৃত্যু, নিখোঁজ ১৭ জন
- কোটায় ফের প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার্থীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার
- সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে পুনরায় নিট পরীক্ষা, জানালেন কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান
- আটকে পড়া পর্যটকদের সাহায্য করতে সিকিমে হেল্পডেস্ক চালু নবান্নের, দেওয়া হল হেল্পলাইন নম্বর
- অস্ত্রোপচার শেষে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলেন অভিষেক