বিশেষ প্রতিবেদন: বিশ্ব অর্থনীতির জন্য বিরাট ঝুঁকি তৈরি করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ক্রমবর্ধমান ঋণের বোঝা। বর্তমানে দেশটির সরকারি ঋণের পরিমাণ গিয়ে দাঁড়িয়েছে ৩৪ ট্রিলিয়ন ডলার, যা বিশ্ব অর্থনীতির স্থিতিশীলতাকে হুমকির মুখে ফেলেছে।
জাতীয় ঋণসীমা বৃদ্ধি নিয়ে গত বছর যুক্তরাষ্ট্রে রীতিমতো অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল। সেবার সরকার কোনও রকমে পরিস্থিতি সামলে নিলেও সংকট কাটেনি। বরং দেশটির অর্থনীতি এখনও ভয়াবহ অবস্থায় রয়েছে। এ বছরও মার্কিন অর্থনীতিতে বড় ধরনের বিপর্যয়ের আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সমস্যা হচ্ছে, দেশটির অর্থনীতিতে যেকোনও ধরনের বিপর্যয় দেখা দিলে তার পুরো প্রভাব পড়বে ডলারের ওপর। আর এতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে ডলারের ওপর নির্ভরশীল বিশ্ব অর্থনীতি। বিশ্লেষকরা বলছেন, কোভিডের সময় যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি ঋণের পরিমাণ অনেকখানি বেড়ে যায়। কারণ সে সময় অর্থনৈতিক ক্ষতি মেটাতে বিপুল পরিমাণ প্রণোদনা দেওয়া হয়েছিল। সেই রেশ কাটতে না কাটতেই ইউক্রেন ও ইসরাইলের যুদ্ধে যুক্ত হয়ে সেখানে বিপুল পরিমাণ খরচ করছে বাইডেন প্রশাসন।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে মার্কিন সরকারের ঋণ ব্যাপক হারে বেড়েছে। প্রায় প্রতি ১০০ দিনে এই ঋণ প্রায় এক ট্রিলিয়ন ডলার করে বাড়ছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ ও ক্রমবর্ধমান সরকারি ঋণ বিশ্বের আর্থিক স্থিতিশীলতা দোলা দিচ্ছে। কারণ যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি ব্যয় বৃদ্ধি, ক্রমবর্ধমান সরকারি ঋণ এবং উচ্চ সুদহারের কারণে বিশ্বের অন্যান্য দেশেও সুদের হার বৃদ্ধির ঝুঁকি বাড়ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগের তথ্যানুযায়ী, ২০২২ সালের শেষ দিকে যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি ঋণ ছিল ৩১ ট্রিলিয়ন ডলার। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে এসে সেই ঋণ ৩৪ ট্রিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছে। অর্থাৎ এক বছরে ঋণের পরিমাণ তিন ট্রিলিয়ন ডলারেরও বেশি বেড়ে গেছে। বর্তমানে এই ঋণের পরিমাণ ৩৪.৪ ট্রিলিয়ন ডলার।
ঋণমান সংস্থা মুডিস ইনভেস্টর সার্ভিস মন্তব্য করেছে, যুক্তরাষ্ট্রের রাজস্ব সক্ষমতায় বড় ধরনের ঝুঁকি বাড়ছে। এই অবস্থায় অবিলম্বে সরকারি ব্যয় না কমানো হলে রাজস্ব ঘাটতি ব্যাপকভাবে বেড়ে যাবে। তাই ২০২৪ সালেই বিশ্ব অর্থনীতিতে বড় ধরনের বিপর্যয়ের শঙ্কা রয়েছে। মার্কিন অর্থনীতির যেকোনও বিপর্যয়ের প্রভাব পড়তে পারে বিশ্ব অর্থনীতিতে।