পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: চার বছর ধরে আপনারা কি অন্ধ হয়ে গিয়েছিলেন নাকি? সোমবার রাজকোট অগ্নিকাণ্ডের মামলার রায় দিতে গিয়ে শহরের পুরসভা এবং রাজ্য সরকারকে এমনটাই মন্তব্য করল গুজরাত হাইকোর্ট। এই ঘটনাকে মনুষ্যসৃষ্ট বিপর্যয় বলে বর্ণনা করে হাইকোর্ট বলেছে, বেআইনিভাবে এত বছর ধরে অনুমোদনহীন দুটি গেমিং জোন শহরের বুকে কী করে চলতে পারে? আপনারা অন্ধ , নাকি নাকে তেল দিয়ে ঘুমাচ্ছিলেন? ওই গেমিং জোনের কোনও ‘ফায়ার লাইসেন্স’ পর্যন্ত ছিল না। কতোটা বেপরোয়া হলে ভরা শহরের বুকে এমন অবৈধ কাজ রমরমা ভাবে চলে।
আদালত তার রায়ে এদিন আরও বলে, আমাদের স্থানীয় পুরসভা এবং রাজ্য সরকারের উপর আর কোনও ভরসা বা আস্থা নেই। পুলিশের বক্তব্য অনুযায়ী, ওখানে প্রচুর পরিমাণে অতিদাহ্য পদার্থ মজুত ছিল। অগ্নিকাণ্ডের সময় ওয়েল্ডিংয়ের কাজ চলছিল। যার ফুলকি থেকেই আগুন লেগেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা। রাজকোটের গেমিং জোনের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় শীর্ষ আইপিএস আধিকারিক সুবাস ত্রিবেদীর নেতৃত্বে বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) তদন্তভার গ্রহণ করেছে।
ঘটনাপ্রসঙ্গে রাজকোটের অ্যাসিস্ট্যান্ট পুলিশ কমিশনার (এসিপি) বিনায়ক পটেল জানিয়েছেন, এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় যাঁদের মৃত্যু হয়েছে, তাঁদের দেহগুলি এমন ভাবে ঝলসে গিয়েছে যে, শনাক্ত করতে যথেষ্ট বেগ পেতে হচ্ছে। মৃতদের পরিচয় জানতে ডিএনএ পরীক্ষাও করা হয়েছে বলে খবর। ৭২ ঘণ্টার মধ্যে গোটা ঘটনার রিপোর্ট তলব করা হয়েছে। অনেক শপিং মলেও এমন গেম জোন চালু রয়েছে শীঘ্রই এই বিষয়ে আমরা বিস্তারিত রিপোর্ট পাব। সেই মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এই আবহে একটা মর্মান্তিক খবর প্রকাশ্যে এসেছে। জানা গেছে, রাজকোটের গেমিং জোনে ঘুরতে গিয়ে ঝলসে মৃত্যু হয় নবদম্পতির। শনিবার সন্ধ্যায় স্ত্রী খেয়াতি ও শ্যালিকা হরিতাকে নিয়ে রাজকোটের গেমিং জোনে গিয়েছিলেন অক্ষয় ঢোলারিয়া নামে এক যুবক। সদ্যই বিয়ে হয়েছিল তাঁদের। আচমকাই তাঁদের সেই আনন্দকে গ্রাস করে আগুন। স্ত্রী এবং শ্যালিকাকে নিয়ে গেমিং জোন থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি তাঁরা। যার ফলে সেখানেই পুড়ে মৃত্যু হয় তিন জনের।