পুবের কলম, ওয়েব ডেস্কঃ রাজকোটে গেমিং জোনে আগুনের ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ২৭ জনের। যার মধ্যে রয়েছে ৯টি শিশুও। এ দিকে এই ঘটনার পর সরাসরি রাজ্য সরকারকে কাঠগড়ায় তুলেছে গুজরাট হাইকোর্ট। দুর্ঘটনাটিকে প্রাথমিকভাবে ‘মানবসৃষ্ট বিপর্যয়’ বলে অভিহিত করে, চারটি জেলার পুর প্রশাসনের কাছ থেকে উত্তর চাওয়া হয়েছে। রবিবার গুজরাট হাইকোর্টের একটি বিশেষ বেঞ্চ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করেছে। এমনকি হত্যার পরিমাণ নয়, অপরাধমূলক হত্যাকাণ্ডের জন্য টিআরপি বিনোদন পার্কের মালিক এবং ম্যানেজার-সহ ছয়জনের বিরুদ্ধে একটি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। ইতিমধ্যে ‘গেম জোনের’ মালিক ও ম্যানেজারকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বিচারপতি বীরেন বৈষ্ণব এবং বিচারপতি দেবান দেশাইয়ের বেঞ্চ বলেছেন, কর্তৃপক্ষের প্রয়োজনীয় অনুমোদন না নিয়েই এই ধরনের গেম জোন তৈরি করা হয়েছে। বেঞ্চ আহমেদাবাদ, ভাদোদরা, সুরাট এবং রাজকোট মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের আইনজীবীদের সোমবার আদালতে সামনে উপস্থিত হওয়ার এবং আইনের কোন বিধানের অধীনে এই ইউনিটগুলি তাদের এখতিয়ারের অধীনে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বা অব্যাহত রয়েছে তা ব্যাখ্যা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
শনিবার সন্ধ্যায় রাজকোটের টিআরপি ‘গেম জোন’-এ একটি ভয়বহ অগ্নিকাণ্ডে ১২ বছরের কম বয়সী ১২ শিশু-সহ মোট ২৭ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, স্কুল ছুটির কারণে, প্রচুর সংখ্যক শিশু তাদের বাবা-মায়ের সঙ্গে মজা গেমিং জোনে এসেছিল। এই দুর্ঘটনার তদন্তে পাঁচ সদস্যের বিশেষ তদন্তকারী দল (এসআইটি) গঠন করা হয়েছে। তিনদিনের মধ্যে সিটকে এই মর্মে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
কর্মকর্তাদের মতে, শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। আধিকারিকরাও নিশ্চিত করেছেন যে দোতলা বিল্ডিংটিতে আগ্নিকাণ্ডের ছাড়পত্র বা টিআরপি বিনোদন পার্কের মালিকের কাছ থেকে কোনও ‘নো অবজেকশন’ সার্টিফিকেট নেই।
দমকলের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বিদ্যুতের পাশাপাশি গেমিং জোনে ছিল একটি জেনারেটর। তার জন্য দেড় থেকে দু’হাজার পেট্রোল মজুত করে রাখা ছিল। এছাড়াও গো কার রেসিংয়ের জন্যও প্রায় দেড় হাজার লিটার পেট্রোল মজুত করে রেখেছিল গেমিং জোন কর্তৃপক্ষ। আর সেই কারণেই পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার নেয়।
উল্লেখ্য, মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র প্যাটেল রবিবার সকালে নানা-মাওয়া সড়কের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ঘটনায় প্রতিক্রিয়া জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন যে, তিনি ‘অত্যন্ত ব্যাথিত’। এই ঘটনায় প্রতিক্রিয়া জানিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতিও। অগ্নিকাণ্ডে নিহতদের পরিবারকে রাজ্য সরকারের তরফে ৪ লাখ টাকা অনুদান ঘোষণা করা হয়েছে। এরপর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের তরফ থেকেও মৃতদের আত্মীয়দের জন্য ২ লাখ টাকা এবং আহতদের জন্য ৫০ হাজার টাকা অনুদান হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।