পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: ভোট প্রচারে মুসলিমদের লাগাতার আক্রমণ করছেন মোদি। কংগ্রেস-সহ বিজেপি-বিরোধী ধর্মনিরপেক্ষ দলগুলিকে আক্রমণ করার সময় তিনি মুসলিমদের আক্রমণ না করে থাকতে পারেন না। ওই দলগুলি এবং মুসলিমদের এক বন্ধনীতে ফেলে কটাক্ষ করে তিনি ভক্তদের খুশি করেন। আরতা নিয়ে সমালোচনা হলেই নিজেদের পছন্দের কোনও মিডিয়ায় বসে তিনি বেমালুম বলেন, ‘আমি মুসলিমদের বিরুদ্ধে কোনওদিন কিছু বলিনি।’ রবিবার বাংলায় ভোট প্রচারে এসেও তিনি বলেন, কট্টরপন্থী মুসলিমদের চাপে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের সাধু ও সন্তদের গালি দিচ্ছেন।’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিশেষ কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ করলে তার দায় মুসলিমদের নিতে হবে কেন? এই প্রশ্ন মোদিকে করবে কে? ফলে বাধাহীনভাবে তিনি মুসলিমদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। এমনটাই অভিযোগ।
সকালে উনি মুসলিমদের আক্রমন করছেন, আর বিকালে বলছেন, তিনি মুসলিমদের সম্পর্কে কোনও বাজে কথা বলেননি। এমন করে যে কেউ নিজের মন্তব্য বদলাতে পারে তা মোদিকে না দেখলে মালুম হতো না। রবিবার পিটিআইকে দেওয়া ইন্টারভিউয়ে মোদি বলেন, ‘কেবল আজ নয়, আমি কোনওদিনই মুসলিমদের বিরুদ্ধে আপত্তিকর কিছু বলিনি।’
বাঁশওয়াড়ায় বিজেপির সভায় মোদি বলেছিলেন, ‘প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ অতীতে বলেছিলেন দেশের সম্পদে সর্বাগ্রে অধিকার মুসলিমদের। সেই কারণেই সমীক্ষা করার পরিকল্পনা নিয়েছে কংগ্রেস। যাতে দেশবাসীর কষ্টার্জিত অর্থ মুসলিমদের মধ্যে বিলিয়ে দেওয়া যায়। হিন্দু মহিলাদের মঙ্গলসূত্র অনুপ্রবেশকারী এবং যাদের অনেক সন্তান হয় তাদের মধ্যে ভাগ করে দিতে চায় কংগ্রেস।’
তার এমন মন্তব্য গোটা দেশ দেখেছে। কিন্তু তারপরও তিনি প্রকাশ্যে বলেন, তিনি মুসলিমদের সম্পর্কে কোনও বিরূপ মন্তব্য কোনওদিন করেননি। দেশের বেশিরভাগ বড় মিডিয়ার নিয়ন্ত্রণ মোদি ঘনিষ্ট বড় শিল্পপতি ও ব্যবসায়ীদের হাতে। ফলে সকালে মুসলিমদের আক্রমণ করে বিকালে কোনও চ্যানেলে বসে বলাই যায় আমি জীবনে মুসলিমদের বিরুদ্ধে কিছু বলিনি। পালটা কোনও সাংবাদিক মোদিকে জিজ্ঞাসা করছেন না ‘কেন এমন অসত্য বলছেন? আপনি তো লাগাতার মুসলিমদের আক্রমন করে হিন্দু ভোটব্যাঙ্ক বানানোর চেষ্টা করছেন। তাহলে কোন মুখে আপনি অন্য দলকে তোষক বলেন?’ আসলে ওই সাংবাদিকরা জানেন, এমন কথা বললে তাদের পরিণতি কী হতে পারে। ফলে একই দিনে দুপুরে মুসলিমদের আক্রমন করে বিকালে কিংবা সন্ধ্যায় তিনি বলছেন ঈদের দিনে তাদের বাড়িতে রান্না হতো না। খাবার আসত আশেপাশের মুসলিম বাড়ি থেকে।
কংগ্রেস তার বিরুদ্ধে যা যা অভিযোগ করছে তিনিও কংগ্রেসের বিরুদ্ধে সেই একই অভিযোগ করছেন। এমনকী যে রাহুল তাঁকে সংসদে আদানি নিয়ে প্রশ্ন করে বিব্রত করেছেন, আজকাল সেই রাহুলের বিরুদ্ধেও তিনি আদানি-আম্বানিদের সঙ্গে ঘনিষ্টতার অভিযোগ করছেন। মোদির এমন আচরণ দেখে অনেকেই বলছেন, এই ভোট যে মোদির আত্মবিশ্বাসে চিড় ধরিয়েছে তা তার আচরণ থেকেই বোঝা যাচ্ছে।