পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: হিজাব, বোরকা খুলে পরতে হবে পশ্চিমা পোশাক। না হলে কড়া শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে মুসলিম পড়ুয়াদের। এমনই নির্দেশিকা জারি করে ফের একবার খবরের শিরোনামে মুম্বইয়ের আচার্য ম্যারাঠি কলেজ। এতদিন পর্যন্ত হিজাবের ওপরই নানারকম নিষেধাজ্ঞার কথা শোনা যেত বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। কিন্তু সরাসরি কোনও স্কুল-কলেজ- বিশ্ববিদ্যালয় পশ্চিমা পোশাকের সপক্ষে এমন গলা ফাটায়নি, যেমনটা দেখা গেল মুম্বইয়ের আচার্য ম্যারাঠি কলেজে। হিজাব তো দূর কি বাত দেশীয় সংস্কৃতিতেও যেন আপত্তি তাদের। সরাসরি পড়ুয়াদের পশ্চিমা পোশাক পরে আসার নির্দেশ দিল কলেজ কর্তৃপক্ষ। এদিন কলেজের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে এই তথ্য দিয়েছেন তারা। শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান ধর্ম-কর্মের জায়গা নয়। কলেজে এলে নির্দিষ্ট ড্রেস-কোড বজায় রাখতে হবে। জঙ্গি পোশাক চলবে না ইত্যাদি ব্যাখ্যা দিয়ে অতীতে বহু কলেজে হিজাবে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে স্কুল-কলেজ কর্তৃপক্ষ। কর্নাটক, মধ্যপ্রদেশের পর এবার হিজাব, বোরকা, নিকাব নিয়ে ফের একবার ড্রামা ক্রিয়েট করল মুম্বইয়ের আচার্য ম্যারাঠি কলেজ। তবে এবার শুধু হিজাব-নিকাবই না সরাসরি ভারতীয় পশাককেও যেন ‘হেয়’ করল কলেজ কর্তৃপক্ষ।
এদিন কলেজের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে একটি নির্দেশিকা জারি করে বলা হয়েছে, জুন-২০২৪ আসন্ন নতুন শিক্ষাবর্ষ থেকে কলেজ প্রাঙ্গণে বোরকা, হিজাব, নিকাবে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হল। বিশেষ করে কলেজের দ্বিতীয়-ও তৃতীয় বর্ষের ছাত্রীদের ধর্মীয় পোশাক পরে আসতে নিষেধ করা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তি অমান্য করলে কড়া শাস্তির কথাও জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, কলেজের কমনরুমে উক্ত পোশাক খুলে একটি নির্দিষ্ট ড্রেস পরিধান করে ক্লাসে ঢুকতে পারবে। নিয়মের অন্যথা হলে ক্লাসে ঢুকতে বা ক্লাস করতে দেওয়া হবে না ওই পড়ুয়াকে। ছেলেদের জন্য ড্রেস কোড শার্ট আর ট্রাউজার্স। অন্যদিকে মেয়েদের শালীন ভারতীয় বা ওয়েস্টার্ন পোশাক পরার নির্দেশ। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে মুসলিম পড়ুয়াদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার তৈরি হয়েছে। কেউ কেউ কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে পোষাক কোড পুনর্বিবেচনার আবেদন করেছে। তবে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যখন নিরাপত্তারক্ষীরা প্রাথমিকভাবে বোরকা-পরা মেয়েদের কলেজে প্রবেশ করতে বাধা দেয়।
মুম্বইয়ের চেম্বুরের ওই কলেজে নির্দিষ্ট পোশাকবিধি রয়েছে বলে কয়েক জন মুসলিম ছাত্রীকে বোরকা পরিহিত অবস্থায় ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি বলে স্থানীয় সূত্রের খবর। ঘটনার জেরে ওই ছাত্রীদের মধ্যে কয়েক জনের অভিভাবক এবং স্থানীয়দের একাংশ ওই কলেজের সামনে বিক্ষোভ দেখান। শেষ পর্যন্ত পুলিশি হস্তক্ষেপে ঘেরাও উঠে যায়।