পুবের কলম, ওয়েব ডেস্কঃ বিশ্বে ইন্টারনেট পরিষেবায় সরকারি লাগাম টানার ঘটনায় ২০২৩ সাল ছিল সবচেয়ে খারাপ বছর। সহিংসতা, যুদ্ধাপরাধ ও গণতন্ত্রের ওপর আক্রমণ এবং অনান্য নৃশংসতা দমন করতে বিভিন্ন দেশের সরকার ইন্টারনেট পরিষেবায় লাগাম পরায়। নিউইয়র্কভিত্তিক ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে অধিকার নিয়ে কাজ করা সংস্থা অ্যাকসেস নাউ ও ইন্টারনেট বন্ধের বিষয়ে কাজ করা প্ল্যাটফর্ম কিপইটঅন কোয়ালিশন বুধবার এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
মার্কিন এই সংস্থা ‘সংকুচিত গণমাধ্যম, ক্রমবর্ধমান সহিংসতা’ শীর্ষক এই প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সেখানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধের বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, ৩৯টি দেশের সরকার অন্তত ২৮৩ বার ইন্টারনেট পরিষেবায় বাধা দিয়েছে। যার ফলে লক্ষ লক্ষ মানুষের অধিকারকে খর্ব করা হয়েছে।
অ্যাকসেস নাউ ২০১৬ সাল থেকে বিভিন্ন দেশে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া নিয়ে তথ্য সংগ্রহ করছে। সংস্থা জানিয়েছে, ২০২৩ সাল ছিল সাম্প্রতিক কালের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ বছর। তারা জানিয়েছে, ভিন্নমত দমনের জন্য ১৫টি দেশ ৬৩ বার ইন্টারনেট-সেবা বন্ধ রাখা হয়। তাদের প্রকাশিত সেই তালিকায় সেই শীর্ষে আছে ভারত। এই নিয়ে পর পর ছ’বছর এই তালিকায় প্রথম হল ভারত। ২০২৩ সালে ভারতেই ইন্টারনেট বন্ধের ঘটনা ঘটেছে ১১৬ বার। অর্থাৎ বিশ্বের ইন্টারনেট বন্ধের ৪১ শতাংশ ঘটনায় ঘটেছে ভারতে। যা ভারতের অর্থনীতিতেও প্রভাব ফেলেছে ।এ পর্যন্ত স্রেফ ইন্টারনেট বন্ধের জন্য দেশের আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ ১.৯ বিলিয়ন ডলার। রিপোর্ট অনুসারে সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ মোকাবিলার জন্য গত বছর সরকার ৬৫ বার ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রেখেছিল। ভারতের সাতটি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে এক বছরে পাঁচ বা তার বেশি বার পরিষেবা বন্ধ ছিল।
এই রিপোর্ট থেকে এটা স্পষ্ট যে, মোদি জামানার শেষ কয়েক বছর দেশে অশান্তি এবং অসহিষ্ণুতা দুটোই বৃদ্ধি পেয়েছে। যা নিয়ন্ত্রণে মানুষের অধিকার হরণ করতেও হয়েছে। অ্যাকসেস নাউয়ের সিনিয়র পলিসি কাউন্সেল নম্রতা মহেশ্বরী বলেন, “২০২৩ সালে টানা ষষ্ঠ বারের মতো পুরো ভারত জুড়ে সরকার অন্য যে কোনও দেশের চেয়ে বেশি বার ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে গণতন্ত্রকে আঘাত করেছে। মণিপুর থেকে পাঞ্জাব পর্যন্ত, ভারতীয় কর্তৃপক্ষ অন্যায়ভাবে জনগণের বাক স্বাধীনতা, তথ্য এবং সমাবেশের অধিকার লঙ্ঘন করেছে।”