পুবের কলম, ওয়েব ডেস্কঃ প্রধানমন্ত্রীর ইকনিমিক অ্যাডভাইজরি কাউন্সিলের (ইএএম-পিএম) রিপোর্টের ভুল সংবাদ প্রচার হয়েছে বলে দাবি করেছে দ্য পপুলেশন ফাউন্ডেশন অফ ইন্ডিয়া(পিএফআই)। পিএফআই জনসংখ্যার প্রবণতা এবং প্রজনন/ যৌন স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করা একটি স্বাধীন আসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। গত দু’দিন ধরে দেশজুড়ে মুসলিম জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার নিয়ে হিন্দুত্ববাদীরা যে প্রচার করছে তার পরিপ্রেক্ষিতে এই সংস্থা সরব হয়েছে। সংস্থাটির দাবি, ধর্মের ভিত্তিতে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার গণনা হয়নি। কোনওভাবেই ধর্মের সঙ্গে জনসংখ্যার বৃদ্ধির হার জড়িত নয়।
লোকসভা ভোটের আবহে এই সমীক্ষার তথ্য সামনে আসার পর রাজনৈতিক দলগুলি একে অপরের বিরুদ্ধে বাগযুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। কেন্দ্রের শাসক বিজেপি কংগ্রেসের বিরুদ্ধে মুসলিম তোষণের অভিযোগ তুলে তোপ দেগেছে। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে এই ধরনের খবরও প্রচারিত হয়েছে। যা নিয়ে গভীরভাবে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে পিএফআই।
সংস্থাটির দাবি, গোটাটাই ভুল সংবাদ বেরিয়েছে। সমীক্ষার ভুল ব্যাখ্যা করা হয়েছে। যাতে করে দেশে মুসলিম জনসংখ্যা বৃদ্ধির বিষয়টি বিপদঘণ্টির মতো বেজে ওঠে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সমীক্ষার মূল নজর ছিল, গত ৬৫ বছর ধরে গোটা বিশ্বের ১৬৭টি দেশের সংখ্যালঘু ধর্মীয় গোষ্ঠীগুলির জন্মহার বৃদ্ধি। যার মধ্যে ভারতও ছিল। কিন্তু, তাকে অংশবিশেষ করে আতঙ্ক সৃষ্টির পরিবেশ তৈরি এবং কোনও একটি বিশেষ ধর্মের প্রতি বিদ্বেষ তৈরির চেষ্টা উচিত কাজ হয়নি।
ইএএম-পিএমের সাম্প্রতিক একটি রিপোর্ট উল্লেখ করে হিন্দুত্ববাদীরা বলছে, রিপোর্টে রয়েছে ১৯৫০ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত হিন্দু জনসংখ্যা ৭.৮২ শতাংশ কমেছে। অন্যদিকে, মুসলিম জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ৪৩.১৫ শতাংশ। পিএফআই বলেছে, ধর্মীয় গোষ্ঠীগুলির মধ্যে জন্মের হার কমছে। শুধু তাই নয়, মুসলিমদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে।
জনগণনার হিসেব বলছে, গত তিন দশকে মুসলিম জন্মহার কমেছে। বিশেষত, ১৯৮১-১৯৯১ পর্যন্ত মুসলিম জন্মহার ছিল ৩২.৯ শতাংশ. ২০০১-২০১১ সালে তা কমে দাঁড়ায় ২৪.৬ শতাংশ। এই নিম্নবর্তিতা হিন্দুদের থেকেও অনেক বেশি। দৃষ্টান্ত দিয়ে তারা বলেছে, ওই একই সময়ে হিন্দু জন্মহার ২২.৭ শতাংশ থেকে কমে হয়েছে ১৬.৮ শতাংশ।
২০০৫-০৬ থেকে ২০১৯-২১ সালের মধ্যে মোট জন্মহার মুসলিমদের মধ্যে কমেছে ১ শতাংশ। যেখানে ওই একই সময়ের মধ্যে হিন্দু জন্মহার কমেছে ০.৭ শতাংশ। এই প্রবণতা থেকে বোঝা যায় জন্মহার বিভিন্ন ধর্মের মানুষের মধ্যে মিশে যাচ্ছে। পিএফআইয়ের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর পুনম মুতরেজা বলেন, মুসলিম জনসংখ্যা বেড়েছে বলে সংবাদমাধ্যমের আংশিক খবরকে শিহরণ জাগানো খবর বলে প্রচার করা ঠিক হয়নি। তারা বৃহত্তর বিষয়কে আড়াল করার চেষ্টা করেছে। জন্মহার একটি পরিবারের শিক্ষা, রোজগারের উপর নির্ভর করে। কোনওদিনই ধর্মের উপর তা নির্ভরশীল নয়।