তেল আবিব, ৬ মে: প্রায় সাত মাস ধরে চলা ইসরাইল-হামাস যুদ্ধের সমাপ্তি কোথায়! তা এখনও স্পষ্ট নয়। দফায় দফায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা হলেও তা ফলপ্রসূ হয়নি। দীর্ঘসময় ধরে চলা যুদ্ধের ইতি টানা যে প্রয়োজন তা স্পষ্ট হল ইসরাইলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের কথায়। গত রবিবার গাজায় যুদ্ধবিরতি এবং ইসরাইলি বন্দিদের মুক্তির জন্য একটি প্রস্তাব দেয় মিশর। যদিও এই প্রস্তাব মানতে চাননি ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু।
এদিকে, মিশরের ওই প্রস্তাব মেনে নেওয়া উচিত বলেই মন্তব্য করলেন ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট। প্রস্তাব মানতে নেতানিয়াহুর প্রতি আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি। পাবলিক ব্রডকাস্টার কেএএন (KAN) এক প্রতিবেদনে বলেছে, “ইসরাইলি মন্ত্রিসভার এক বৈঠকে গ্যালান্ট বলেছেন হামাস গোষ্ঠীর সঙ্গে চুক্তি করাটা সুবিধার হবে। এতে ইসরাইলি বন্দিদের ফিরিয়ে আনা অনেকটাই সহজ হবে। অবশ্যই এই প্রস্তাব অনুমোদন হওয়া দরকার। প্রতিরক্ষামন্ত্রী গ্যালান্ট ব্যক্তিগতভাবে নেতানিয়াহুকে চুক্তিটি অনুমোদনের আহ্বান জানিয়েছিলেন।”
বৈঠকে গ্যালান্ট বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই ইসরাইলি বন্দিদের ফিরিয়ে আনতে হবে। এজন্য চুক্তিতে সহমত হওয়া প্রয়োজন।’ ইসরাইলি প্রতিরক্ষামন্ত্রীর বক্তব্যকে সমর্থন করেছিলেন মন্ত্রিসভার অন্যান্য সদস্যরাও। যদিও নেতানিয়াহু এবিষয়ে আপত্তি জানিয়েছিলেন। উল্লেখ্য, হামাসের হাতে বন্দি রয়েছে ১৩০ জনেরও বেশি ইসরাইলি। শনিবার মিশরে গাজায় যুদ্ধবিরতি এবং ইসরাইলি বন্দিদের মুক্তি নিয়ে আলোচনা হয়। গাজায় যুদ্ধবিরতির আলোচনায় ‘ইতিবাচক অগ্রগতির’ কথা জানায় মিশরের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম আল-কাহেরা।
এর আগে ইসরাইলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী গ্যালান্ট হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিলেন, “হামাস আমাদের সঙ্গে কোনো চুক্তিতে পৌঁছাতে চাইছে না। এর অর্থ গাজা উপত্যকার দক্ষিণাঞ্চলের রাফাহ শহরে হামলা ‘আসন্ন’।” হামাসের তরফে স্পষ্ট জানানো হয়, গাজায় সব ধরণের হামলা বন্ধ করলে তবেই তেল আবিবের সঙ্গে বন্দিদের মুক্তি নিয়ে চুক্তি করবে।
এদিকে, কদিন আগেই ইসরাইলি প্রতিরক্ষামন্ত্রীর রাফায় হামলার হুঁশিয়ারি এবং সোমবার যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব মানতে নেতানিয়াহুকে আহ্বান। সবমিলিয়ে স্পষ্ট হচ্ছে, যুদ্ধ নিয়ে দু’ভাগে বিভক্ত ইসরাইলি প্রশাসন। নেতানিয়াহু যুদ্ধের পক্ষ নিলেও অন্যান্য কর্তারা চাইছে আলোচনায় বসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে হবে।