পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: ফারাহ মালিক ভানজি। ভারতের ধনী মুসলিম মহিলাদের মধ্যে অন্যতম তিনি। শুধু পুরুষরাই নন, এমন অনেক নারী আছে যারা বর্তমানে বিপুল অর্থ-বিত্তের মালিক। আর ফারাহ মালিক ভানজি হচ্ছে তার জ্বলন্ত উদাহরণ। নানাবিধ কারণে বর্তমানে নারীর উপার্জন বিষয়ে প্রচুর আলোচনা-সমালোচনা ও তর্ক-বিতর্ক চলছে। অতি রক্ষণশীলরা নারীদের উপাজর্নের বিষয়টি এখনও মেনে নিতে পারেননি। অথচ ইসলাম সর্বদা নারীদের শালীন পরিবেশে শিক্ষা, কাজ ও চলাফেরার কথা বলে। শরিয়ত নির্ধারিত গণ্ডির মধ্যে থেকে নারীরা অবশ্যই শিক্ষা অর্জনসহ অর্থনৈতিক ও সামাজিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করতে পারবে। ইসলাম কোথাও নারীকে বন্দি করে রাখার কথা বলেনি। ইসলাম নারী শিক্ষার প্রতি যেমন গুরুত্বারোপ করেছে তেমনি নারী-পুরুষের ভোটাধিকারেও কোনো ধরনের পার্থক্য সৃষ্টি করেনি। এমনকি ইসলাম নারীকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হতে কাজ ও ব্যবসা-বাণিজ্যের অধিকারও প্রদান করেছে।
উল্লেখ্য, মেট্রো ব্র্যান্ডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর তফারাহ। সাধারণত প্রিমিয়াম জুতা বিক্রি করে এই ব্র্যান্ড। যার মোট মূল্য ২৬০০০ হাজার কোটি। মেট্রো কোম্পানির চেয়ারম্যান কোটিপতি রফিক মালিকের মেয়ে ফারাহ। তার ঠাকুর দা মালিক তেজানি ১৯৫৫ সালে মুম্বাইয়ে এটি প্রতিষ্ঠা করেন। তবে ফারাহ’র হাত ধরে মেট্রো ব্র্যান্ড খুচরো বাজারে নতুন যুগের সূচনা করে। জানা গেছে, ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত, কোম্পানির বাজারের মূলধন ছিল ৩৫,১১৭ কোটি টাকা। রফিক মালিকের পাঁচ মেয়ের মধ্যে ফারাহ দ্বিতীয়। বাবা, ১২ এপ্রিল পর্যন্ত রফিকের রিয়েল-টাইম নেট মূল্য ২১,৬৯৭ কোটি টাকা।
এক সাক্ষাৎকারে ফারাহ জানিয়েছেন, ফুটওয়্যার শিল্পে ফারাহর ২০ বছরেরও বেশি অভিজ্ঞতা রয়েছে। মেট্রো ব্র্যান্ডস লিমিটেডের প্রযুক্তি রোডম্যাপ এবং সাপ্লাই চেইন পুনর্গঠন করার আগে মার্কেটিংয়ে তার কর্মজীবন শুরু করেন। প্রয়াত বিলিয়নেয়ার বিনিয়োগকারী রাকেশ ঝুনঝুনওয়ালার স্ত্রী রেখা মেট্রো ব্র্যান্ডের সংখ্যালঘু শেয়ারের মালিক।
কোম্পানির টেকনোলজির রোডম্যাপকে নতুন করে ডিজাইন করা থেকে শুরু করে স্কেচার্স, ক্রোকস এবং ক্লার্কসের মতো গ্লোবাল টাইটানদের সঙ্গে কৌশলগত জোট গঠন করা পর্যন্ত, ফারাহ শিল্পক্ষেত্রে মেট্রো জুতার অবস্থানকে অন্য মাত্রায় নিয়ে গেছে।
দেশের ১৩৬ টি শহরে ৫৯৮ টিরও বেশি স্টোরের সঙ্গে ব্যবসায় যুক্ত রয়েছে।
ব্যবসাকে উপার্জনের বৈধ মাধ্যম হিসেবে অনুমোদন দিয়েছে ইসলাম। নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য ব্যবসায় অংশগ্রহণ করা বৈধ। এ ব্যাপারে নারীদের জন্য পৃথক কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। পবিত্র কুরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহ তাআলা ব্যবসাকে হালাল করেছেন এবং সুদকে হারাম করেছেন’ (সুরা বাকারা: ২৭৫)।
মহানবীর (সা.) যুগেও নারীরা শালীনতা ও পর্দা রক্ষা করে ব্যবসা-বাণিজ্যে অংশগ্রহণ করেছেন। স্বয়ং তাঁর জীবনসঙ্গিনী হজরত খাদিজাও (রা.) মক্কার বিখ্যাত ব্যবসায়ী ছিলেন। পবিত্র কুরআন ও মহানবীর (সা.) হাদিসে অসংখ্য প্রমাণ রয়েছে, যা নারীর ব্যবসা-বাণিজ্যের বৈধতার পক্ষেই অবস্থান করে।