দেবশ্রী মজুমদার, শান্তিনিকেতন : দাবদাহে প্রাণের বসন্ত উৎসবের আয়োজন করতে চলেছে বিশ্বভারতী। তবু ভালো, আবারও দেখা যাবে, মনিপুরী নৃত্যের সিঙ্গেল স্টেপের ফিউশনে অপূর্ব শোভাযাত্রা। বিলম্বিত বসন্ত উৎসব নিয়ে যেমন বিতর্ক হয়েছে, তেমনি বসন্ত উৎসবের বৈতালিকের কারণে বুধবারে সাপ্তাহিক মন্দির অনুষ্ঠানও বাদ থাকছে। এমনটাই জানালেন বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ আধিকারিক অতীগ ঘোষ।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, যেহেতু হেরিটেজ সাইট এই বিশ্ববিদ্যালয়। তাই অনেক ভিড় এড়াতে বিলম্বিত বসন্তের আয়োজন। এত বিলম্বিত বসন্ত উৎসব নিয়ে আশ্রমিকরা অনেকেই সমালোচনা করেছেন। তবুও শেষমেশ বসন্ত উৎসব হওয়ার উদ্যোগকে প্রশংসা করেছেন অনেকেই। বেশ কয়েক বছর ধরে পৌষমেলা থেকে বসন্ত উৎসব নিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক উপেক্ষা লক্ষ্য করেছে সবাই।
প্রবীণ আশ্রমিক তথা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বংশধর সুপ্রিয় ঠাকুর বলেন, কেন যে এরা এত দেরিতে বসন্ত উৎসব করছে কেন জানিনা। নির্দিষ্ট দিনে করলে কী হয়? শুনেছি, হেরিটেজ সাইটে ভিড় হলে অসুবিধা। কিন্তু একটু বেশি সুরক্ষা নিয়ে করা যেত। অতীতেও বিভিন্ন সময় বসন্ত উৎসব হয়েছে। ১৯২৩ সালের মাঘীপূর্ণিমায় শান্তিনিকেতনে বসন্তের গানের আসর বসেছিল। ফাল্গুনী পূর্ণিমায় আশ্রম সম্মিলনীর অধিবেশনে আবারও হয় বসন্তোৎসব।
১৯২০-র দশকে বিশ্বভারতী হওয়ার আগের পর্বেও দোলের দিন শান্তিনিকেতনে বসন্ত-উদ্যাপন হয়েছিল। কবির কনিষ্ঠ পুত্র তখন বালক শমীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৩১৩ বঙ্গাব্দের শ্রীপঞ্চমী তিথিতে শান্তিনিকেতনে ‘ঋতু-উৎসব’, করেছিলেন। যাকে কেউ কেউ ‘বসন্তোৎসবে’র সূচনা বলে থাকেন। তবে চৈত্রের শেষে কোনদিন বসন্ত উৎসব আগে হয় নি।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাতটায় গৌরপ্রাঙ্গনে শাস্ত্রীয় সঙ্গীত অনুষ্ঠিত হয়। ওখানেই রাত্রি ন’টায় বৈতালিক হয়। ফের বুধবার পাঁচটায় গৌরপ্রাঙ্গনে বৈতালিক হবে। সকাল সাড়ে ছ’টায় থাকছে যথারীতি শোভাযাত্রা ও অনুষ্ঠান। সন্ধ্যা সাতটায় গৌরপ্রাঙ্গনে হবে নৃত্যনাট্য শ্যামা। আগত সকলের জন্য বিভিন্ন প্রবেশ পথ নির্দিষ্ট করা হয়েছে।