পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক : ২০২৩-এর আগস্টের দিকে কলকাতার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে র্যাগিং কাণ্ডে তোলপাড় হয়েছিল রাজ্য-রাজনীতি। নদিয়ার বগুলা থেকে পড়তে আসা এক নাবালক ছাত্রের বিশ্ববিদ্যালয়ের বারান্দা থেকে পড়ে মৃত্যু হয়। বেশ কয়েকজন ছাত্রকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তদন্ত এখনও চলছে। কিন্তু সেই ঘটনার পরেও বিকৃত-মন মানসিকতার যে কোনও পরিবর্তন হয়নি, তার প্রমাণ পাওয়া গেল কেরলের ওয়েনাড়ের পশু চিকিৎসা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি হস্টেলে। এক্ষেত্রেও সিনিয়র দাদা ও সহপাঠীদের র্যা গিংয়ের শিকার হলেন এক পড়ুয়া।
পশু চিকিৎসা পাঠরত ওই ছাত্রের ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালানো হয়। অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয় সিদ্ধার্থন জে এস নামে ২০ বছরের ওই পড়ুয়া। গত ১৮ ফেব্রুয়ারি হস্টেলের বাথরুম থেকে তাঁর দেহ উদ্ধার হওয়ার পর প্রাথমিকভাবে ওই ঘটনার তদন্ত চালাচ্ছিল পুলিশ। সম্প্রতি ঘটনার তদন্তভার গিয়েছে সিবিআই-এর হাতে। আর তারপরই পুলিশের কেস ফাইল থেকে একাধিক তথ্য সামনে এসেছে। জে এস সিদ্ধার্থন কেরলের ওয়েনাড় জেলার ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সায়েন্সেস কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন।
পুলিশ সূত্রে খবর, টানা ২৯ ঘণ্টা ধরে ওই ছাত্রের ওপর নানাভাবে নির্যাতন চালানো হয়েছিল। সিবিআই-এর হাতে কেরল পুলিশ যে আত্মহত্যার ঘটনার কেস ফাইল তুলে দিয়েছে সেখানেই এমনটাই উল্লেখ করা হয়েছে। ১৬ ফেব্রুয়ারি সকাল ৯টা থেকে ১৭ ফেব্রুয়ারি দুপুর ২টো পর্যন্ত অত্যাচার চলেছিল সিদ্ধার্থনের উপর। নির্মম র্যা গিংয়ের ঘটনায় বেল্ট পর্যন্ত ব্যবহার হয়েছিল বলে অভিযোগ উঠে এসেছে। নির্যাতনে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে সিদ্ধার্থন। চরম পরিণতির পথ বেছে নেয়। গত ১৮ ফেব্রুয়ারি হস্টেলের বাথরুমে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে ওই ছাত্র। ঘটনায় নতুন করে এফআইআর রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে সিবিআই। সন্দেহভাজনের তালিকায় রয়েছে ২০ জন। মৃতের পরিবারের অভিযোগ ছাত্রদের উপর হামলার পিছনে এসএফআইয়ের ছাত্র-কর্মীরা জড়িত। বেশ কয়েকজন এসএফআই কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
ছাত্র র্যাগিংয়ের ঘটনায় চাপ বাড়ছিল পিনারাই বিজয়ন সরকারের। শেষে গত ৯ মার্চ বিজয়ন আশ্বস্ত করেছিলেন ঘটনাটির সিবিআইকে দিয়ে তদন্ত করা হবে। সেই মতো সিবিআই তদন্ত শুরু করেছে।