পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: ফের বিদেশের মাটিতে ভারতীয় ছাত্রের রহস্যমৃত্যু। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইওর ক্লিভল্যান্ডে ওই ভারতীয় ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। মৃতের নাম উমা সত্য সাই গড্ডে। শুক্রবার নিউইয়র্কে অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাস ছাত্রের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে তাকে দেশে ফেরানোর প্রস্তুতি শুরু করেছে বলে জানিয়েছে। ২০২৪ সালের শুরু থেকে এখনও পর্যন্ত চার মাসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ভারতীয় এবং ভারতীয় বংশোদ্ভূত অন্তত ১০ ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে।
দূতাবাস সূত্রে জানানো হয়েছে, ‘ক্লিভল্যান্ডে ভারতীয় ছাত্র উমা সত্য সাই গড্ডের আকস্মিত মৃত্যুতে আমরা গভীরভাবে শোকাহত। ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত শুরু হয়েছে, গড্ডে’র পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।’
নিউইয়র্কে ভারতের কনস্যুলেট জেনারেল এক্স হ্যান্ডেলে একটি পোস্টে জানিয়েছেন, ‘উমা গড্ডের মৃতদেহ দ্রুত ভারতে পৌঁছনোর জন্য সবরকম সহযোগিতা করা হচ্ছে।’ তবে গড্ডের মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে কিছু উল্লেখ করা হয়নি।
এর আগে মার্চে মুহাম্মদ আবদুল আরাফাত নামে এক ভারতীয় শিক্ষার্থী ওহাইও’র ক্লিভল্যান্ড এলাকা থেকে নিখোঁজ হন। এরপর পরিবারের কাছে মুক্তিপণও দাবি করা হয়। এখনও পর্যন্ত তার হদিশ মেলেনি। এ ছাড়া ইন্ডিয়ানার পার্দো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নীল আচার্য নামে এক শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার হয়। এর আগে জর্জিয়ায় বিবেক সাইনি নামে আরও এক ভারতীয় শিক্ষার্থীকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ ওঠে এক গৃহহীন ব্যক্তির বিরুদ্ধে। এই মাসেই বোস্টন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত অন্ধ্রপ্রদেশের ২০ বছরের ছাত্র পারুচুরি অভিজিৎ খুন হন। ক্যাম্পাস লাগোয়া একটি গাড়িতে তার দেহ গভীর জঙ্গলের মধ্যে উদ্ধার হয়। পারডু ইউনিভার্সিটির ২৩ বছর বয়সী ভারতীয়-আমেরিকান ছাত্র সমীর কামাথকে ৫ ফেব্রুয়ারি মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। গত ২ ফেব্রুয়ারি ৪১ বছর বয়সী ভারতীয়বংশোদ্ভূত আইটি এক্সকিউটিভ বিবেক তানেজা ওয়াশিংটনের একটি রেস্তোরাঁর বাইরে প্রাণঘাতী হামলায় জখম হন।
চলতি বছরের গোড়া থেকেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে একের পর এক ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনায় নিরাপত্তা প্রশ্নের মুখে। ঘটনায় উদ্বিগ্ন দিল্লির কেন্দ্র সরকার। শুধুমাত্র জানুয়ারি মাসেই সেখানে প্রাণ হারিয়েছিলেন চার পড়ুয়া। তখনই প্রশ্ন উঠেছিল আমেরিকার মাটিতে ভারতীয়দের নিরাপত্তা নিয়ে।
গত ফ্রেব্রুয়ারি মাসে হোয়াইট হাউস বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছিল, ‘জাতি বা ধর্মের ভিত্তিতে হিংসার কোনও যুক্তি নেই। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এসব বরদাস্ত করা হবে না। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও তাঁর প্রশাসন কঠোর পরিশ্রম করে চলেছেন। কোনও রকম হিংসা রুখতে চেষ্টা করা হচ্ছে। যারা হিংসা ছড়াচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধেও যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
একের পর এক ভারতীয় শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় উদ্বেগ বাড়ছে। ভারতীয় কনস্যুলেট প্রতিটি ঘটনায় তদন্ত এবং পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানিয়েছে।