পুবের কলম,ওয়েবডেস্কঃ কামাল মওলা মসজিদ না ভোজশালা মন্দির? এই বিতর্কের অবসান ঘটাতে মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্টের নির্দেশে শুক্রবার থেকে শুরু হবে ভোজশালার সমীক্ষা। বলা বাহুল্য, অবসান হয়েছে ‘বাবরি মসজিদ’ বিতর্ক।অযোধ্যায় সাড়ম্বরে উদ্বোধন হয়েছে রামমন্দির। জ্ঞানবাপী মসজিদ ও মথুরা কৃষ্ণ জন্মভূমি মন্দির বিতর্কের জল গড়িয়েছে আদালতে। মুসলিম ধর্মীয় ভাবাবেগ’কে উপেক্ষা করেই ইতিমধ্যেই জ্ঞানভাপীর ‘ব্যাস কি তহখানা’তে শুরু হয়েছে পূজার্চনা। এবার হিন্দুত্ববাদীদের নজর কামাল মওলা মসজিদের দিকে।
জানা গিয়েছে, মন্দির-মসজিদ বিতর্কের প্রেক্ষিতেই ভোজশালা সৌধ চত্বরের বৈজ্ঞানিক সমীক্ষা দাবি করে মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্টের ইন্দোর বেঞ্চের দ্বারস্থ হয় হিন্দুত্ববাদী একটি সংগঠন।
হিন্দুত্ববাদীদের দাবি, সৌধটি আসলে রাজা ভোজের তৈরি প্রাচীন সরস্বতী মন্দির। অন্যদিকে, মুসলিমদের দাবি ওই সৌধ হল কামাল মওলা মসজিদ।
সেই মামলার রায় দিতে গিয়ে ১১ মার্চ দুই বিচারপতি এসএ ধর্মাধিকারী ও দেবনারায়ণ মিশ্র বেঞ্চ বলেন, ‘দ্রুত সমীক্ষা শেষ করুন। ছবি ও ভিডিয়ো রাখবেন। আগামী শুনানির আগে আদালতে রিপোর্ট পেশ করতে হবে।’
সমীক্ষার জন্য ‘গ্রাউন্ড পেনিট্রেটিং রেডার’ ও সৌধের বয়স নির্ধারণ করতে ‘কার্বন ডেটিং’ প্রযুক্তি ব্যবহার করার নির্দেশ আদালতের তরফে এএসআই’কে দেওয়া হয়েছিল। পাশাপাশি, সৌধের সীমানা থেকে চারপাশে আরও ৫০ মিটার পর্যন্ত জায়গাতেও সমীক্ষা চালাতে হবে বলে জানিয়েছিল হাইকোর্ট।
হিন্দুমতে, এক হাজার বছর আগে, ধারে শাসন করত পরমার রাজবংশ। রাজা ভোজ ১০০০ থেকে ১০৫৫ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত রাজত্ব করেছিলেন। রাজা ভোজ ছিলেন সরস্বতী দেবীর একনিষ্ঠ ভক্ত। তিনি ১০৩৪ খ্রিস্টাব্দে একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তৈরি করেছিলেন। যা পরে ‘ভোজশালা’ নামে পরিচিত হয়। হিন্দুরা একে সরস্বতী মন্দির বলে মনে করে।
হিন্দুদের একাংশ মনে করেন, আলাউদ্দিন খিলজি ১৩০৫ খ্রিস্টাব্দে ভোজশালা ভেঙে দেন। পরবর্তীতে ১৪০১ খ্রিস্টাব্দে দিলওয়ার খান গৌরী ভোজশালার একটি অংশে মসজিদ নির্মাণ করেন। ১৫১৪ খ্রিস্টাব্দে মাহমুদ শাহ খিলজি আর একটি অংশে মসজিদ নির্মাণ করেন। ১৮৭৫ সালে খনন কাজ করা হয়েছিল। সেই খননে নাকি দেবী সরস্বতীর একটি মূর্তি পাওয়া গেছে। মেজর কিনকেড নামের এক ইংরেজ সেই মূর্তিটি লন্ডনে নিয়ে যান। বর্তমানে সেই মূর্তিটি লন্ডনের মিউজিয়ামে রয়েছে। হাইকোর্টে দায়ের করা আবেদনে লন্ডন থেকে ওই মূর্তি ফিরিয়ে আনার দাবিও জানানো হয়েছে।
বিশ্লেষকদের অনেকের মতে, চেতন মনেই বিভিন্ন কৌশলে মন্দির –মসজিদ রাজনীতি ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে জনসাধারণের মনে। এটা প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে, মন্দির মানেই রামমন্দির। দেবতা মানেই রাম।
যখন মন্দার অর্থনীতি হয়, তখন মন্দির রাজনীতি করতে হয় বলেও মনে করছে একাংশ!