পুবের কলম প্রতিবেদক: এমন অনেকেই রয়েছেন যারা মনে করেন, চিকিৎসার জন্য সেরা ঠিকানা দক্ষিণ ভারত। অথচ এমনও দেখা যায়, দক্ষিণ ভারত থেকেই কলকাতায় চিকিৎসা করাতে এসেছেন রোগী। তেমনই, সেরা চিকিৎসা পরিষেবা পাওয়ার আশায় এ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের বহু মানুষ বাড়ির কাছের হাসপাতালে না গিয়ে ভিড় জমান কলকাতার বিভিন্ন হাসপাতালে। তবে, স্বাস্থ্য দফতরের সমীক্ষা বলছে, কলকাতার তুলনায় জেলাস্তরের বিভিন্ন হাসপাতাল এখন পরিষেবা প্রদানে এগিয়ে রয়েছে। আর এর ফলে, রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কলকাতায় রোগীদের রেফারের সংখ্যাও কমানো সম্ভব হয়েছে।
রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতি মাসে রাজ্যের কোন চিকিৎসক কত জন রোগীকে দেখছেন, তিনি কত সংখ্যক অপারেশন করছেন, কোন হাসপাতাল থেকে কত জন রোগীকে রেফার করা হচ্ছে অন্য হাসপাতালে, কোন হাসপাতালে প্রসবের সময় কত জন মায়ের মৃত্যু হচ্ছে, জন্মের পর কতজন শিশুর মৃত্যু হচ্ছে, ছুটি নিয়ে চলে যাচ্ছেন কোন রোগী, কোন হাসপাতালে কত সংখ্যক রোগীর এক্স-রে, ইউএসজি করা হচ্ছে, কত জন রোগীকে ভর্তি রাখা হচ্ছে, এমন ২০টি বিষয় নিয়ে সমীক্ষা করা হয়।
ওই ২০টি বিষয়ের পারফরমেন্সের ভিত্তিতে তৈরি রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, কলকাতার বিভিন্ন হাসপাতালের তুলনায় এখন পরিষেবা প্রদানে এগিয়ে রয়েছে এ রাজ্যের বিভিন্ন জেলার বিভিন্ন হাসপাতাল। এই বিষয়ে রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা সিদ্ধার্থ নিয়োগী বলেন, ‘এর ফলে আগের থেকে রোগী রেফারও এখন অনেক কমেছে। রাজ্যের সরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবার সার্বিক উন্নতির বিষয়টি দেখা হচ্ছে।’
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে রাজ্যের সেরা পাঁচটি মেডিক্যাল কলেজের তালিকায় এসেছে যথাক্রমে বাঁকুড়া, কলকাতার আইপিজিএমইঅ্যান্ডআর, মালদহ, বারাসত এবং জলপাইগুড়ির মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল। অর্থাৎ, এই তালিকায় একমাত্র এসএসকেএম তথা পিজি হাসপাতাল ছাড়া কলকাতার অন্য চারটি সরকারি মেডিক্যাল কলেজ নেই। অর্থাৎ, রাজ্যের পাঁচটি সেরা এই হাসপাতালের তালিকায় চারটিই রয়েছে জেলাস্তরে। তবে মেডিক্যাল কলেজ স্তরের হাসপাতাল নয়। জেলা হাসপাতাল হিসাবে ওই সমীক্ষায় সেরা হাসপাতাল হয়েছে টালিগঞ্জের এম আর বাঙুর হাসপাতাল। চিকিৎসক পিছু অপারেশনের সংখ্যা হোক কিংবা আউটডোরে বেশি সংখ্যক রোগীকে পরিষেবা দেওয়ার বিষয়টি। ওই সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে এ সব ক্ষেত্রেও জেলাস্তরের বিভিন্ন হাসপাতাল এগিয়ে রয়েছে। ওই সমীক্ষা অনুযায়ী এ রাজ্যে মা ও শিশুমৃত্যুর ঘটনাও কমতে দেখা যাচ্ছে জেলাস্তরের বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজে।