পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: নিজের মাকে উপার্জনের অর্থ দেওয়া, তাঁকে সময় দেওয়ার কারণে কখনই একজন স্বামীর বিরুদ্ধে গার্হস্থ্য হিংসার অভিযোগ আনা যায় না। মুম্বইয়ের দায়রা আদালত ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের আদেশকে চ্যালেঞ্জ করে এক মহিলার স্বামী ও তার শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছে। আদালত তার পর্যবেক্ষণে জানিয়েছে, একজন পুরুষের তার মাকে সময় ও অর্থ দেওয়াকে পারিবারিক সংহিসতা বলে বিবেচনা করা যায় না।
আদালতকে স্বামী জানিয়েছেন, তার স্ত্রী তাকে কোনদিন স্বামী হিসেবে মেনে নেয়নি, এরপরেও কিছু মিথ্যা অভিযোগ তার উপর আরোপ করা হয়েছে। স্ত্রী’র নিষ্ঠুরতার কারণে তিনি আগেই পারিবারিক আদালতে বিবাহ-বিচ্ছেদের মামলা করেছিলেন। তাঁর স্ত্রী তাকে কিছু না জানিয়ে তাঁর এনআরই (অনাবাসী বহিরাগত) অ্যাকাউন্ট থেকে ২১ .৬৮ লক্ষ তুলে নিজের নামে একটি ফ্ল্যাট কিনে নিয়েছেন। মহিলার আবেদন মুলতুবি থাকাকালীন, ট্রায়াল কোর্ট (ম্যাজিস্ট্রেট) তাকে প্রতি মাসে তিন হাজারের রক্ষণাবেক্ষণের খরচ মঞ্জুর করে। ট্রায়াল কোর্টের আবেদনকে করে চ্যালেঞ্জ করে ওই মহিলা দায়রা আদালতে ফৌজদারি আবেদন দায়ের করেন।
মঙ্গলবার মুম্বইয়ের দিন্দোশি আদালতের অতিরিক্ত দায়রা বিচারক আশিস আয়াচিত বলেছেন, আবেদনকারি মহিলার আনা অভিযোগগুলি অস্পষ্ট। প্রমাণ করার মতো কিছুই নেই। এই অভিযোগগুলি দিয়ে প্রমাণ হয় না, আবেদনকারি মহিলা গার্হস্থ্য হিংসার শিকার হয়েছেন। বিচারক জানিয়েছেন, আমি এটা মনে করি না যে, ওই মহিলার সাবালক মেয়ের জন্য তার আর্থিক ভরণপোষণের প্রয়োজন আছে।
আদালত সূত্রে খবর, আবেদনকারি মহিলা রাজ্য সচিবালয় সহকারি পদে কর্মরত। সেখান থেকে তিনি নিয়মিত বেতন পান। আর্থিক ক্ষতিপূরণ চেয়ে তিনি মহিলাদের উপর গার্হস্থ্য সহিংসতা আইনে ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অভিযোগ দায়ের করেন। তার অভিযোগ স্বামী তার মায়ের অসুস্থতাকে লুকিয়ে তাকে বিয়ে করেছে। আবেদনকারি মহিলার আরও অভিযোগ, তার শাশুড়ি তাকে কাজ করতে বাধা দেয়, হেনস্থা করে। তার স্বামী ও শাশুড়ি এই নিয়ে তার সঙ্গে ঝগড়া করে।
আবেদনকারি মহিলা আদালতকে জানান, তার স্বামী ১৯৯৩ থেকে ২০০৪ পর্যন্ত কাজের সূত্রে বিদেশে থাকতেন। যখনই তিনি ছুটিতে বাড়িতে আসতেন, তিনি তার মাকে দেখতে যেতেন, প্রত্যেক বছর মাকে ১০ হাজার করে টাকা দিতেন। মায়ের চোখ অপারেশন করার জন্যও তার স্বামী শাশুড়িকে টাকা দিয়েছে। মহিলার অভিযোগ, শ্বশুরবাড়ির অন্যান্য সদস্যদের কাছে তিনি হেনস্থার শিকার হয়েছেন। তবে মহিলার শ্বশুরবাড়ির তরফে সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করা হয়।