মোল্লা জসিমউদ্দিন: মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের এজলাসে ফের পুলিশের তদন্ত নিয়ে বড়সড় প্রশ্নচিহ্ন উঠলো। বিষ্ণুপুরের বিজেপি নেতা ভোলানাথ মণ্ডলের রহস্যমৃত্যু মামলা কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের এজলাসে মামলার শুনানি চলে । বিচারপতি পুলিশি তদন্তের গতি প্রকৃতি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।
এদিন এই মামলায় বিচারপতি পর্যবেক্ষণে জানান ,-‘ প্রয়োজনে তদন্ত দেওয়া হবে অন্য তদন্তকারী সংস্থাকে’।এদিনের শুনানিতে বিচারপতি বলেন, “একজন চিকিত্সকের ১৬১ ধারায় পুলিশ জবানবন্দি নিয়েছে। কিন্তু সেই বক্তব্য নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে মামলাকারীর।”
মামলাকারীর দাবি, -‘ বয়ান গ্রহণের কোনও ভিডিয়ো রেকর্ডিং করা হয়নি। কেন করা হয়নি সেটা স্পষ্ট নয়’। বিচারপতি এদিন বলেন, “মামলাকারীদের প্রশ্নে যথেষ্ট যুক্তি রয়েছে, তাই পুলিশ স্বচ্ছভাবে, বিশ্বাসযোগ্য তদন্ত করে আগামী শুনানিতে রিপোর্ট দেবে। না হলে অন্য এজেন্সিকে তদন্তের দায়িত্ব দেবে আদালত।”
মামলাকারীর আইনজীবী জানান , “চিকিত্সক থেকে সাক্ষী – সবাইকে পুলিশ নিজের মতো করে বয়ান বলিয়ে নিয়েছে। তাই ভিডিয়োগ্রাফ করা হয়নি। আর ঠিক একই কারণে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে গোপন জবানবন্দি নেওয়া হয়নি। উল্টে সাক্ষীদের ভয় দেখাতে কোনও কারণ ছাড়াই নোটিস পাঠিয়ে চাপে রাখছে পুলিশ।”রাজ্য জানায়, “কোর্টের নির্দেশ মতো আমরা সব তদন্ত করছি। এখানে একটা অসুস্থ লোকের মৃত্যুকে রাজনীতির মোড়ক দিতে গিয়ে অন্য মাত্রায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা হচ্ছে।” যদিও বিচারপতি জানিয়ে দিয়েছেন, ‘১৩ মার্চের আগে মামলাকারী তাঁদের যাবতীয় অভিযোগ নিয়ে হলফনামা জমা দেবে’।
আগামী ১৩ মার্চ এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে। উল্লেখ্য, গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিষ্ণুপুর ১ ব্লকের দড়িকাওয়াডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েতের ২০৯ নম্বর বুথের বিজেপি প্রার্থী হয়েছিলেন ভোলানাথ মণ্ডল। নির্বাচনের পর ডায়মন্ডহারবার হাসপাতালে চিকিত্সাধীন থাকা কালীন তাঁর মৃত্যু হয়। পরিবার ও বিজেপির তরফ থেকে অভিযোগ তোলা হয়, -‘তৃণমূলের মারের ফলেই মৃত্যু হয়েছে ওই ভোলানাথের’। যদিও হাসপাতালের তরফে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট দেখে বলা হয়, -‘লিভারজনিত সমস্যার কারণেই মৃত্যু হয়েছে ভোলানাথের’। এই ময়নাতদন্তের রিপোর্ট নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে প্রশ্ন উঠে। আগামী ১৩ মার্চ এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে বলে জানা গেছে।