পুবের কলম,ওয়েবডেস্কঃ জ্ঞানভাপী মসজিদের সিল করা বেসমেন্ট অর্থাৎ তহখানায় হিন্দুদের পুজো করার অনুমতি দিল বারাণসীর জেলা আদালত । সিল করা এই বেসমেন্টকে বলা হচ্ছে ‘ব্যস কা তয়খানা’। বুধবার শুনানির শুরুতেই জেলা প্রশাসনকে ভক্তদের পুজোর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন বিচারক। শ্রী কাশী বিশ্বনাথ মন্দির ট্রাস্টকে এর জন্য একজন পূজারিকে মনোনীত করতেও বলা হয়। তহখানা হল মসজিদের নীচের ভূগর্ভস্থ পাতালঘর। জ্ঞানভাপী মসজিদের নীচে এমন চারটি ঘর রয়েছে। এর মধ্যেই দক্ষিণ দিকের ঘরটিতে পুজো করার অনুমতি দিল আদালত।
বুধবারের যে মামলাটির রায় হল, তা দায়ের হয়েছিল ১৯৯৩ সালে। আদালত সূত্রে জানানো হয়েছে, জ্ঞানভাপী মসজিদের ওই অংশটি জনৈক ব্যস পরিবারের, যারা এখন বারাণসীতে থাকেন না। ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত মসজিদের ওই অংশে হিন্দুদের পুজোপাঠের অনুমতি ছিল। সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা, অশান্তির কারণে তৎকালীন মুলায়ম সিং সরকার পুজোর অনুমতি বাতিল করে দেয়। সেই থেকে মামলা চলছিল জেলা আদলতে।
হিন্দু পক্ষের তরফে বুধবার আদালতে হাজির ছিলেন আইনজীবী বিষ্ণুশঙ্কর জৈন। তিনিই জানান, আদালতের রায়ের কথা। জৈন বলেন, ‘ব্যাস কা তহখানা’য় হিন্দুদের প্রার্থনা করার যাবতীয় আয়োজন করতে হবে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে। সাত দিনের মধ্যেই ওই তহখানার অধিকার নিজের হাতে নেবেন তিনি। এর মধ্যেই পুজোর আয়োজনও করতে হবে তাঁকে। সেই সঙ্গে তহখানার অন্দরের নিরাপত্তা এবং যাতে সেখানে কোনও কিছু বদলানো না হয়, সে দিকেও নজর দিতে হবে তাঁকেই। আদালত তাঁকে তেমনটাই বলেছে বলে জানান ওই আইনজীবী। জ্ঞানভাপী মামলার অন্য পক্ষ আঞ্জুমান ইন্তেজামিয়া মসজিদ কমিটির কৌঁসুলী আখালাখ আহমেদ জানিয়েছেন, তিনি এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে উচ্চতর আদালতে আবেদন করবেন। এ ব্যাপারে মসজিদ কমিটির একটি আবেদনের শুনানির দিন ৮ ফেব্রুয়ারি নির্ধারণ করেছে আদালত।
এএসআই তার রিপোর্টে দাবি করেছে মসজিদের ওজুখানা চত্বরে অসম্পূর্ণ শিবলিঙ্গের অস্তিত্বও পাওয়া গিয়েছে। সেই সঙ্গেই হনুমান, বিষ্ণু, নন্দীর মূর্তি থাকার কথাও তারা রিপোর্টে উল্লেখ করেছে। তাদের দাবি সেখানে নাকি মধ্যযুগীয় দেবদেবীর মূর্তি ও ভাস্কর্যও আছে। সেখানে নাকি অর্ধেক হনুমান ও অর্ধেক সাপের দৈব ভাস্কর্যও মিলেছে। মসজিদের এই অংশ হিন্দুদের হাতে তুলে দেওয়ার দাবি জানায় বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। একইসঙ্গে পুজো করার অনুমতি চেয়ে ইলাহাবাদ হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল হিন্দু পক্ষ। অজুখানা খোলার দাবি এবং সার্ভের জন্য আবার সুপ্রিম কোর্টেও আবেদন জানানো হয়েছে। এমনটা নয়া নয়। এর আগেও এএসআই এর নিরপেক্ষ কাজ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন খ্যাতনামা ঐতিহাসিক ইরান হাবিব। তবে তিনি যে ক্ষেত্রে আপত্তি করেছিলেন তার রায় হয়ে গিয়েছে ‘আস্থা’য়।