মোল্লা জসিমউদ্দিন: সোমবার দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ এক প্রাথমিক নিয়োগ মামলায় নিয়োগের ক্ষেত্রে ছাড়পত্র দিল। প্রাথমিক শিক্ষক পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে তাঁদের সামনে আর কোনও বাধা রইলো না। প্রাথমিক নিয়োগ সংক্রান্ত মামলায় প্যানেল প্রকাশের উপর যে স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছিল, তা তুলে নিল সুপ্রিম কোর্ট।
এরফলে ১১ হাজার ৭৬৫ জনের চাকরির ক্ষেত্রে আর কোনও সমস্যা রইল না।প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ আগেই জানিয়েছিল, -‘ নিয়োগ নিয়ে সব প্রস্তুতি শেষ করেছেন তাঁরা’। তবে আদালতের নির্দেশে ওই নিয়োগ নিয়ে জটিলতা তৈরি হওয়ায় উদ্বেগে ছিলেন প্রাথমিকের চাকরি প্রার্থীরা। গত ২০২২ সালে প্রাথমিক টেট পরীক্ষা হওয়ার পর অনেকেই চাকরির আশায় অপেক্ষা করছেন। কিন্তু জটিলতা তৈরি হয় বিএড ও ডিএলএড নিয়ে।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ ছিল, প্রাথমিক শিক্ষক পদে চাকরির ক্ষেত্রে বিএড ডিগ্রিধারীরা আবেদন করতে পারবেন না। প্রাথমিক শিক্ষক পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে ডিএলএড পাশ করা বাধ্যতামূলক।তবে , ২০১৪ সালের টেট পরীক্ষার সময় এই বিষয়টি বাধ্যতামূলক ছিল না। পরবর্তীকালে আদালতের নির্দেশের জেরে জটিলতা তৈরি হয়।২০১৪-র টেট উত্তীর্ণ প্রার্থীরা তাই ২০২০ সালে ডিএলএড কোর্সে ভর্তি হন। এরপর ২০২২-এর নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়। কিন্তু সেই সময় ওই চাকরি প্রার্থীরা ডিএলএড-এর মার্কশিট বা শংসাপত্র হাতে পাননি। এরপরই চাকরি প্রার্থীদের একাংশ আদালতের দ্বারস্থ হয়। তাঁরা দাবি করেন, যাঁদের প্রশিক্ষণ শেষ হয়নি, তাঁরা নিয়োগের পরীক্ষায় বসতে পারবে না।কলকাতা হাইকোর্টে মামলা হলে সিঙ্গেল বেঞ্চের বিচারপতি অভিজিত্ গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রশিক্ষণ শেষ না হলেও পরীক্ষায় বসতে পারবেন প্রার্থীরা। ডিভিশন বেঞ্চ ওই নির্দেশ খারিজ করে দেয়। এরপর সুপ্রিম কোর্ট ওই প্যানেল প্রকাশে স্থগিতাদেশ দেয়।
কিন্তু পর্ষদ জানিয়েছিল, -‘প্যানেল তাদের কাছে তৈরি আছে’। এদিন সুপ্রিম কোর্ট স্থগিতাদেশ তুলে নেওয়ায় এবার নিয়োগের কাজ শুরু হবে বলেই আশা করছেন চাকরি প্রার্থীরা। প্রাথমিক শিক্ষক পদের এই নিয়োগ প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে কাউন্সেলিং, ইন্টারভিউ সবকিছুই সম্পন্ন হয়েছে ইতিমধ্যেই। মামলা চলার কারণে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা যায়নি। এবার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে যাঁরা প্রশিক্ষণ নিচ্ছিলেন তাঁরাও পারবেন অংশ নিতে। ছয় সপ্তাহের মধ্যে তাঁদের ইন্টারভিউ নিতে হবে। তারপর রিপোর্ট দিতে হবে আদালতকে।তবে এই সংক্রান্ত সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন থাকায় জটিলতা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু সুপ্রিম নির্দেশে স্থগিতাদেশ উঠে যেতেই মিলল স্বস্তি। ১১ হাজার ৭৬৫ জন চাকরি প্রার্থীর নিয়োগের পথে আর কোনও সমস্যা নেই।
এদিন দেশের সর্বোচ্চ আদালত জানায়, যাঁরা ২০১৪ এবং ২০১৭ সালে প্রাথমিক টেট পরীক্ষায় পাশ করেছিলেন, তাদের প্যানেল প্রকাশ করে তাঁদের নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। এর পাশাপাশি ২০২২ সালের অপেক্ষারত চাকরিপ্রার্থীদেরও নিয়োগ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।প্রসঙ্গত , ২০২২ সালে প্রাথমিক টেট পরীক্ষার পর থেকেই চাকরি পাওয়ার আশায় দিন গুনছিলেন প্রার্থীরা। তবে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দেয়, যাঁদের বিএড ডিগ্রি রয়েছে, তাঁরা প্রাথমিক শিক্ষক পদে চাকরির আবেদন করতে পারবেন না। নিয়োগের ক্ষেত্রে ডিএলএড প্রশিক্ষণে পাশ করা বাধ্যতামূলক।
২০১৪ টেট পরীক্ষার সময় এই বিষয়টি বাধ্যতামূলক ছিল না বলেই শীর্ষ আদালতের নির্দেশে জট তৈরি হয়। ২০১৪ সালের উত্তীর্ণ প্রার্থীরা তাই ২০২০ সালে ডিএলএড প্রশিক্ষণ নেওয়া শুরু করেন। তবে ২০২২-এ নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হলেও ওই চাকরি প্রার্থীরা ততদিনে ডিএলএড-এর শংসাপত্র হাতে পাননি। এরফলে চাকরি প্রার্থীদের একাংশ আদালতে এ নিয়ে মামলা করে। কলকাতা হাইকোর্ট হয়ে মামলা গড়ায় সুপ্রিম কোর্টে। অবশেষে সেখানে মিলল আইনী স্বস্তি।