পুবের কলম প্রতিবেদক, বসিরহাট: নীলকর ইংরেজদের বিরুদ্ধে বীর বিক্রমে লড়াই করে শহিদ হয়েছিলেন পরাধীন ভারতের কৃষক আন্দোলনের অবিসংবাদিত ইতিহাসখ্যাত কৃষকনেতা সৈয়দ মীর নিসার আলি ওরফে তিতুমীর। এই বীর যোদ্ধার জন্মদিনটি নিঃশব্দে পালিত হলো তাঁর শাহাদাতভূমি নারকেলবেড়িয়ায়। ২৭ জানুয়ারি ২৪৩ তম জন্মদিনে শহীদ তিতুমীরের বাঁশের কেল্লার স্মারক ভবনের সামনে শনিবার একটি ছোট্ট অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এই বীরশহীদকে স্মরণ করা হয়। জাতীয় পতাকা উত্তোলন, কবিতা, আলোচনা সভা ও জাতীয় সঙ্গীতের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শেষ হয়। আয়োজন করে শহীদ তিতুমীর মিশন ও গ্রামবাসীরা। প্রধান অতিথি ছিলেন শহীদ তিতুমীর স্মৃতি মাধ্যমিক শিক্ষা কেন্দ্রের মুখ্য সম্প্রসারক আব্দুর রাজ্জাক।
উপস্থিত ছিলেন মিশনের সভাপতি সোভান মন্ডল, সম্পাদক রবিউল হক, সহ সভাপতি নুরুল আমিন, সাজ্জাদ আলি, মোয়াজ্জেম আহমেদ, অবসর প্রাপ্ত শিক্ষক গোলাম রহমান, গোলাম রসুল, মুজিবর মন্ডল নারকেল বাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দারা। শহীদ তিতুমীর মিশনের সম্পাদক রবিউল হক আক্ষেপ করে বলেন, স্বাধীনতার ৭৫ বছর পেরিয়ে গেলেও তিতুমীর উপেক্ষিতই থেকে গেলেন। বাংলার এই লড়াকু মানবিক নেতা শহীদের মর্যাদা পেলেও তাঁর জন্মস্থান হায়দারপুর- চাঁদপুর এবং যুদ্ধক্ষেত্র নারকেলবেড়িয়াকে ‘হেরিটেজ ভিলেজ’ করার উদ্যোগ আজও গ্রহণ করা হলো না।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি বারাসতের নীলদর্পণ সভাঘরে সংখ্যালঘু উন্নয়ন বিষয়ক একটি সভায় পশ্চিমবঙ্গ মাইনরিটিস কমিশনের চেয়ারম্যান আহমেদ হাসান ইমরানকে এ ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি জানান লিখিতভাবে আবেদন করা হলে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। রবিউল হক বলেন, ইতিমধ্যে আমরা নারকেলবেড়িয়া শহিদ তিতুমীর মিশনের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে লিখিতভাবে জানিয়েছি।
বলাবাহুল্য, উত্তর ২৪ পরগনার বাদুড়িয়ার চাঁদপুর গ্রামে ১৭৮২ সালের ২৭ জানুয়ারি মীর নিসার আলি ওরফে তিতুমীর জন্মগ্রহণ করেন। নীলকর ইংরেজদের বিরুদ্ধে তিনি কৃষকদের নিয়ে আন্দোলন সংগঠিত করেছিলেন। বাদুড়িয়ার নারকেলবেড়িয়া গ্রামে একটি মসজিদ সংস্কার করে তারপাশে বাঁশেরকেল্লা নির্মাণ করেন। ১৮৩১ সালের ১৯ নভেম্বর ইংরেজদের গোলায় বাঁশেরকেল্লা ধুলিস্যাৎ হয়। অগণিত লড়াকু কৃষকের সাথে শাহাদাত বরণ করেন ভারতের মুক্তি সংগ্রামের পথিকৃৎ নিসার আলি ওরফে তিতুমীর।