পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক : একটা সময় রাজনীতির আঙিনায় বিভিন্ন কারণে মধ্যগগনে ছিল ধনকুবের শিল্পপতি গৌতম আদানির নাম। ঠিক এক বছর আগে ২৪ জানুয়ারি আমেরিকার শেয়ার বিশ্লেষক সংস্থা হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের আদানি সংক্রান্ত একটি রিপোর্ট সামনে আসে, সেই তথ্য ভারত সহ গোটা বিশ্বকে কাঁপিয়ে দিয়েছিল। ওই রিপোর্টে ‘মোদি ঘনিষ্ঠ’ আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে কারচুপি করে শেয়ার বাড়ানোর কথা সামনে আসে। এবার হিন্ডেনবার্গের সেই রিপোর্ট নিয়ে মুখ খুললেন ধনকুবের গৌতম আদানি। তাঁর দাবি, ‘বিদেশি শত্রু’র মিথ্যে অভিযোগে বিপর্যয়ের মুখে পড়ত দেশ। আদানি আরও দাবি করেন, তাঁর সংস্থার বিরুদ্ধে এই ধরনের মিথ্যে এবং ভিত্তিহীন অভিযোগ নতুন কিছু ঘটনা নয়। আগেও হয়েছে। কিন্তু তিনি বিচলিত হননি। সেই কারণে সারা দেশে যখন এই নিয়ে চাপানউতোর চলছিল, তিনি নিরুত্তাপ ছিলেন, উদ্বিগ্ন হননি।
ধনকুবের ব্যবসায়ী আরও বলেন, এবারে ব্যবসার বাজারের পাশাপাশি রাজনৈতিক পরিসরেও তাঁকে আক্রমণ করা হয়েছে। হিন্ডেনবার্গ ছাড়াও বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির আক্রমণের প্রসঙ্গের পাশাপাশি সংবাদমাধ্যমের একাংশের বিরুদ্ধেও ক্ষোভ প্রকাশ করেন আদানি। ধনকুবের এই শিল্পপতি বলেন, কিছু ব্যক্তির প্ররোচনায় আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচার চলেছে। প্রচারের জেরে শেয়ার বাজারে প্রভাব পড়েছে। আর ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা তাঁদের সঞ্চয় হারিয়েছেন। কিন্তু শত্রুরা কিছুই করে উঠতে পারেনি, তাদের সমস্ত ছক বানচাল হয়েছে। আদানি বলেন, ষড়যন্ত্রকারীরা হেরে যাওয়ায় বিপর্যয়ের মধ্যে পড়েনি দেশ। যেহেতু পরিকাঠামো, সমুদ্রবন্দর এবং বিমানবন্দর পরিচালনা করে এই শিল্প সংস্থা। আদানি আরও বলেছেন যে, আমি এটা মনে করি না যে, এই ধরনের শত্রুতা আর হবে না। তবে বিশ্বাস করি, এই অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে আমরা আরও শক্তিশালী হয়ে উঠব। ভারতের আর্থিক বৃদ্ধি তথা উন্নয়নের গল্পে আমাদের নম্র অবদান অব্যাহত থাকবে। আমাদের সংকল্প অটুট রয়েছে।
উল্লেখ্য, হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ একটি বিনিয়োগ গবেষণা সংস্থা। তাদের মূল লক্ষ্য হল শর্ট-সেলিংয়কে কাজে লাগিয়ে মুনাফা করা। সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা নাথান অ্যান্ডারসন। সংস্থার দফতর নিউ ইয়র্কে। ১৯৩৭ সালে মার্কিন বাজারে অন্যতম আর্থিক কেলেঙ্কারি ছিল ‘হিন্ডেনবার্গ কাণ্ড’। সেই ঘটনার সূত্রেই নিজের সংস্থার নাম দিয়েছেন নাথান। হিন্ডেনবার্গের রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসতেই বিজেপি সরকার তথা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে তোপ দেগেছিল কংগ্রেস-সহ বিরোধী দলগুলো। এমনকী মামলা উঠেছিল সুপ্রিম কোর্টে। যদিও চলতি মাসেই ‘সেবি’র অভ্যন্তরীণ তদন্তের ভিত্তিতে আদানি গোষ্ঠীর পক্ষে রায় দেয় প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন শীর্ষ আদালতের বেঞ্চ। এই বিষয়ে নতুন করে ‘সিট’ গঠনের আবেদন নাকচ করে দেয় আদালত।
.