পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: ক্রমান্বয়ে নানা কৌশলে ভারতের ভূমি নিজেদের মানচিত্রে ঢুকিয়ে নিচ্ছে চিন! এই অভিযোগ বরাবরের। এবার ভারত’কে প্যাঁচে ফেলতে মালদ্বীপে ঘাঁটি গাড়তে চলেছে চিনা নজরদারি জাহাজ। ‘শিয়াং ইয়াং হং-৩’ নামের ওই জাহাজটি ইতিমধ্যে দক্ষিণ চিন সাগর হয়ে মলাক্কা পেরিয়ে সুন্দা প্রণালীতে পৌঁছে গিয়েছে। সূত্রের খবর অনুসারে, আগামী ৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে জাহাজটি রাজধানী মালেতে পৌঁছাবে। মালদ্বীপের রাষ্ট্রপতি মুহাম্মদ মুইজ্জুর সাম্প্রতিক চিন সফর এবং চিন-মলদ্বীপ সম্পর্কের নতুন সমীকরণেই কী ‘শিয়াং ইয়াং হং-৩’ –এর আগমন? উঠছে প্রশ্ন। আর গোটা ঘটনায় নতুন করে চিন্তা বাড়িয়েছে দিল্লির।
উল্লেখ্য, ভারত-চিন দ্বন্ব বিবদমান। দেশের উপর নজরদারি চালাতে বহুদিন ধরে আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছে চিন। সম্প্রতি ‘লাক্ষাদীপ বনাম মালদ্বীপ’ ইস্যুতে উত্তপ্ত হয় গোটা দেশ। শুরু হয় টুইট তরজা। সংশ্লিষ্ট ঘটনায় দুই দেশের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে উভয়পক্ষ। একই সময়ে চিন সফর করেন মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মুইজ্জু। দ্বীপরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট মুহাম্মদ মুইজ্জু ‘চিনা-ঘেঁষা’ বলেই পরিচিত। কূটনৈতিক টানাপড়েনের এই আবহে চিনা ‘গুপ্তচর’ জাহাজের আগমন নাটকীয় মোড় আনতে পারে বলেই অনুমান।
অতীতে একাধিক চিনা নজরদারি জাহাজ ভারতের প্রতিবেশী আরেক দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কার হাম্বানটোটা বন্দরে সাময়িক ঘাঁটি গেড়েছিল। গোটা ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছিল দিল্লি। পরবর্তীকালে ভারতের আপত্তিতে সেই জাহাজ গুলি হাম্বানটোটা বন্দরে ভিড়তে দেয়নি রনিল বিক্রমসিঙ্ঘের সরকার।
মালদ্বীপ অবশ্য ‘শিয়াং ইয়াং হং-৩’ নামে চিনা জাহাজ নিয়ে সাফাই দিতে ভোলেনি। মঙ্গলবার মুইজ্জু সরকার এক বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, চিনা জাহাজের কাজ সামুদ্রিক গবেষণা করা, সামরিক নজরদারি নয়। চিনের কূটনৈতিক অনুরোধ মেনেই সিদ্ধান্ত বলে জানিয়েছে তারা। মালদ্বীপের ওই সাফাই মানতে নারাজ ভারত। দিল্লির উপর নজরদারি চালানোর জন্য জাহাজটি নোঙর করছে বলে বিদেশমন্ত্রকের এক আধিকারিক জানিয়েছেন। এতে চিনের আগ্রাসন নীতি স্পষ্ট হল বলেও আখ্যা দিয়েছেন তিনি। চিনের ‘আগ্রাসী’ মনোভাবের বিরুদ্ধে আগেও বহু দেশ সরব হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে দিল্লি কী পদক্ষেপ নেয়, সেটাই এখন দেখার।
প্রসঙ্গত, ১৫ মার্চের মধ্যে ভারতীয় সেনাকে মালদ্বীপ ছাড়ার ‘আর্জি’ জানিয়েছে মুইজ্জুর সরকার। মুইজ্জুর সেনা সরানো সংক্রান্ত নির্দেশের নেপথ্যে চিনের হাত দেখছেন কেউ কেউ।