উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়, গঙ্গাসাগর: গঙ্গাসাগর ভাঙনের আশঙ্কায়, উদ্বিগ্ন প্রশাসন। কথায় আছে সব তীর্থ বারবার, গঙ্গাসাগর একবার। পুণ্যার্থীরা দুর দুরান্ত থেকে ছুটে আসেন পুণ্য লাভের আশায় এই সাগরে ডুব দিতে। মকর সংক্রান্তিতে পুণ্য লাভের আশায় কেউ গোমাতা দান করছেন সাগর তীরে আবার কেউ ডুব দিয়ে গঙ্গা আরতি করছেন।
কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে কপিল মুনির মন্দিরে দেখা দিচ্ছে অশনি সংকেত! ক্রমশ সাগর ভেঙ্গে মন্দিরের দিকে এগিয়ে আসায় সতর্ক হচ্ছে জেলা প্রশাসন। প্রতি বছর একটু একটু করে এগিয়ে আসছে সাগর যার ফলে মন্দির ও সাগরের দুরত্ব ক্রমশ কমছে। আগে কপিল মুনির মন্দির থেকে সাগরের দূরত্ব ছিল ১ কিলোমিটার। এখন নদীর পাড় ভেঙে তা ৪৫০ মিটার হয়েছে। এই ভাঙনের ফলে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে সাধু সন্ত থেকে প্রশাসনের কাছে। আগে মেলায় আসা ভক্তরা যে ঘাটে স্নান করত সেই ২ নং ঘাট এখন ভাঙনের কবলে। ফলে সাগর যত ভাঙছে তত উদ্বেগ বাড়ছে।
এই বিষয়ে সোমবার কপিল মুনি মন্দিরের এক সন্ত জানান, পাড় যেভাবে ভাঙছে তাতে আমারা শঙ্কিত! কোটালের সময় মন্দির সংলগ্ন বিভিন্ন এলাকায় জল চলে আসে, এমনকি মন্দিরের দেওয়ালে সেই জল ছুঁয়ে যায়। আমরা যে কুঠিটায় থাকি সেখানেও জল চলে আসে। তীর্থযাত্রীদের যে স্নানের ঘাট তা সাগরের কবলে ফলে আগামী দিন কি হবে তা নিয়ে চিন্তিত ও উদ্বিগ্ন। ভাঙন প্রসঙ্গে জেলাশাসক সুমিত গুপ্ত জানান, ২নং ঘাটের অবস্থা খুব খারাপ তাই বিকল্প একটি রাস্তা তৈরি করা হয়েছে। এছাড়াও মন্দিরের সামনে সাগর বিচে জায়গা রয়েছে, যেখানে পরবর্তী সময়ে কাজে লাগানো যাবে।
এই বিষয়ে রাজ্যের সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী বঙ্কিম চন্দ্র হাজরা বলেন, নদী ভাঙনে জেলা প্রশাসন শুধু উদ্বিগ্ন নয়, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীও প্রয়াস নিয়েছেন। তিনি গঙ্গা মেলার সূচনায় এসে ৮ ই জানুয়ারি ২ নং ঘাটের ওই স্থানে বেশ কিছুক্ষন দাঁড়িয়েছিলেন। রাজ্যের চার মন্ত্রী মেলা প্রাঙ্গণে সাংবাদিক বৈঠকে সাগরের ভাঙন প্রসঙ্গে মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস জানান, ইতিমধ্যে মন্ত্রিসভার সেচ মন্ত্রী পার্থ ভৌমিক ওই এলাকা পরিদর্শন করেছেন। মেলা শুরু হওয়ার প্রায় একমাস আগে তিনি বিষয়টি নিয়ে সেচ দফতরের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। রাজ্য সরকার এই বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে।তবে মন্দির সংলগ্ন ২ নং রোডের ব্যবসায়ীরা বলেন আমরা এবারে কোথায় যাবে। ভাঙতে ভাঙতে সাগরে ক্রমশ মন্দিরের কাছে চলে আসছে। কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে মেলার আগে ভাঙন সংস্কার কোনো কাজে এলো না।