উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়, জয়নগর: সুন্দরবনের মুকুটে জুড়ল নতুন পালক। সুন্দরবনের মধু ও জয়নগরের মোয়ায় জিআই দিয়েছে কেন্দ্র। মোয়া ও মধু শিল্পের সঙ্গে যুক্তদের শুভেচ্ছা জানালেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকি আড়াই কোটি টাকা ব্যয়ে জয়নগরে তৈরি হবে ‘মোয়া হাব’ বলেও ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী। মঙ্গলবার জয়নগর বিধানসভার বহড়ু হাই স্কুলের মাঠ থেকে মোট ৫৪২ কোটি টাকার প্রকল্প উদ্ধোধন করলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগর ১ নং ব্লকের বহড়ু হাইস্কুলের মাঠে এদিন নানান প্রকল্পের উদ্বোধন, শিলান্যাস এবং সরকারি পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি এদিন বিভিন্ন প্রকল্পের উদ্ধোধন, শিলান্যাস এবং পরিষেবা প্রদান করেন। এদিন দুপুর একটা নাগাদ গঙ্গাসাগর থেকে হেলিকপ্টারে জয়নগর থানার উওর দূর্গাপুর মুচিপাড়ার মাঠে অস্থায়ী হেলিপ্যাডে নেমে প্রায় দেড় কিমি রাস্তা পায়ে হেঁটে রাস্তার পাশে থাকা কয়েক হাজার মানুষের অভিবাদন গ্রহন করেন মুখ্যমন্ত্রী। রাস্তার পাশে থাকা বহু মানুষের সাথে কথা বলেন তিনি। তাদের খোঁজ খবর নেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “আমি এখান থেকে নবান্নে যাব। শাস্ত্রীয় সঙ্গীত শিল্পী রশিদ আলি অসুস্থ রয়েছে। আমায় সবটাই দেখতে হবে। তার পরে বাবুঘাটে গিয়ে গঙ্গা সাগর মেলার উদ্বোধন করবো।”
এদিন সংবাদ মাধ্যমকে ও তীব্র ভাষায় সমালোচনা করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “কিছু টিভি চ্যানেল আছে সারাদিন দেখায় ওই রাস্তা খারাপ, জল নেই। আমি বলি তোমাদের অনেক টাকা আছে। যেটা কেন্দ্র দিচ্ছে না তোমরা দিয়ে দাও। আমরা সব করে দেব। বিজেপি উল্টো পাল্টা ভিডিয়ো ছাড়ে। এটা বিশ্বাস করবেন না। থানায় ডায়েরি করুন। ১২ সালে আমরাই প্রথম গ্রেফতার করেছিলাম সারদার মালিককে। এজেন্সিরা ওদের সম্পত্তি নিলেন। সেগুলো ফেরত দিলেন? চিটফান্ড সিপিএম এনেছিল। ওদের কেউ গ্রেফতার হয়েছে? সব ব্যাপারেই তৃণমূল। আসলে তৃণমূলের নামে ওরা কাঁপে। তাই তৃণমূলের বাড়ি বাড়ি গিয়ে সাজিয়ে নাটক করে তৃণমূলের নেতা নেত্রীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। ভাবছে ভোটের আগে সবাইকে গ্রেফতার করলে এলাকা খালি হবে। আর পুরো বিজেপি ডুগডুগি বাজাবে। অত সোজা নয়। বিনা যুদ্ধে এক ইঞ্চি জমি ছাড়ব না।”
বিরোধীদের আক্রমণ করে মমতা বলেন, “বিজেপি অনেক লোক এপাশে ওপাশে টাকা দিয়ে ঢুকিয়েছে। ৩৪ বছরে সিপিএম মানুষের মুণ্ডু নিয়ে খেলেছে।ওদের সঙ্গে আপোষ করব না। আজ টিভির পর্দায় বসে বড় বড় কথা বলে। কী করছিল ওরা ৩৪ বছরে? নাপিত-ধোপা-স্কুল-কলেজ বয়কট, কৃষিজমি দখল করেছে। এখন মানুষ কত ভাতা পাচ্ছে। আজই ২০ হাজার মানুষ সরকারি পরিষেবা পেলেন। চামচিকিরা যেভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছে আপনার অর্জিত পয়সা লুঠ করে নিয়ে যাবে। সিজার লিস্টও পাবেন না। মুখ্যসচিবকে জানতে চাইব, বগটুইতে যে জিনিস পত্র নিয়েছিল সিবিআই সেগুলি কি ফেরত পাওয়া গিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, কুম্ভমেলার সময় ওরা টাকা দেয়। আর গঙ্গা সাগরের সময় কচুকলা? আমাদের লোকেদের উপর অনেক অত্যাচার চলছে। ইন্ডিয়া চলছে একটা এজেন্সি দিয়ে। বিলকিস বানু মামলায় অভিযুক্তদের ছেড়ে দেওয়া হল। সেখানে আমাদের সাংসদ মহুয়া মৈত্র ছিলেন। তাঁকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে এটা কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেসের জয়।কালকে আমায় জিজ্ঞাসা করছিল রাম মন্দির নিয়ে কী বক্তব্য। আমার যেন আর কোনও কাজ নেই। এই একটাই কাজ। আপনারা করুন ভোটের আগে গিমিক শো। আমি বলেছি, ‘ধর্ম যার যার ঈশ্বর সবাই’। কেউ কেউ বলছে আমি গুণ্ডাদের নেতা। সারা জীবন করে এলাম মানুষের কাজ। আমি নেতা নই। আমি কর্মী এবং মানুষের পাহাড়াদার।