পুবের কলম,ওয়েব ওয়েব: ভারতের সৈকত ‘নোংরা’, ‘অস্বাস্থ্যকর’ ‘দুর্গন্ধে ভরা’। মালদ্বীপের মন্ত্রীর এই মন্তব্যের পর থেকে শোরগোল পড়ে গিয়েছে দেশজুড়ে। ইতিমধ্যেই ট্রেন্ডিং হয়েছে হ্যাশট্যাগ বয়কট মালদ্বীপ । শুধু তাই নয়, মালদ্বীপ যাত্রা বাতিল করছেন অনেকেই। আগে থেকে টিকিট কাটা থাকলেও তা ক্যানসেল করে দিয়েছেন বলেই জানিয়েছেন। এমনকী তার বদলে পর্যটনস্থল হিসেবে লাক্ষাদ্বীপে ছুটির কাটানোর কথা জানিয়েছেন নেটিজেনরা।
উল্লেখ্য, গত ৪ জানুয়ারি সোশাল মিডিয়ায় লাক্ষাদ্বীপ ভ্রমণের ছবি ও ভিডিয়ো পোস্ট করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সমুদ্রদ্বীপের সেই অপূর্ব ছবি দেখে মুগ্ধ হন নেটিজেনরা।
সিনহা নামের এক ব্যক্তি সেই ভিডিয়ো এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করে লেখেন, “দারুণ পদক্ষেপ! এটা মালদ্বীপের নতুন চিনা পুতুল সরকারের জন্য বড় ধাক্কা। তাছাড়া এর ফলে লাক্ষাদ্বীপে পর্যটন বাড়বে।”
এর জবাব ৫ জানুয়ারি জাহিদ রমিজ লেখেন, “সত্যিই ভালো পদক্ষেপ। কিন্তু আমাদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করা ভুল হবে। ভারতের সমুদ্র সৈকতগুলো নোংরা আর দুর্গন্ধে ভরা। ওই অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে কারা যাবে? শুধু তাই নয়, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ‘জোকার’ এবং ইসরাইলের ‘পুতুল’, ‘দালাল’ বলেও সম্বোধন করেন মালদ্বীপের যুব ক্ষমতায়ন মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী মরিয়াম শিউনা।
তবে, শুধু মরিয়ম শিউনা বা মালদ্বীপের সাংসদ জাহিদ রমিজ একা নন। মালদ্বীপ সরকারের অনেক গন্যমান্য ব্যক্তিই প্রধানমন্ত্রী মোদির লাক্ষাদ্বীপ সফর নিয়ে কটাক্ষ করেছেন। যা স্বাভাবিকভাবেই ভালো চোখে নেননি ভারতীয়রা। দ্বীপরাষ্ট্রের মন্ত্রীর ওই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে সামাজিক মাধ্যমে হুলস্থুল পড়ে যায়। যার জেরে সোশ্যাল সাইট থেকে ওই পোস্ট সরিয়ে নেওয়া হয়। তবে, বিতর্ক থামেনি।
এদিন মন্ত্রীর বক্তব্যের তীব্র আপত্তি জানিয়েছে ভারতীয় হাই কমিশনার। তারপর রবিবার সংশ্লিষ্ট বিষয়ে নড়েচড়ে বসেন মালদ্বীপ সরকার। এদিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে নিয়ে নিজেদের মন্ত্রীর কদর্য আক্রমণ থেকে সুকৌশলে দূরত্ব তৈরি করে তারা।
দ্বীপরাষ্ট্রের তরফে স্পষ্ট করে দেওয়া হয়, মন্ত্রী মারিয়ম শিউনা বা অন্যান্যরা মোদির বিরুদ্ধে অবমাননাকর মন্তব্য করেছেন, তা তাঁদের ব্যক্তিগত মত। সেটা মালদ্বীপ সরকারের অবস্থান নয়। রবিবার মালদ্বীপ সরকারের তরফে একটি বিবৃতিতে বলা হয়, ‘বিদেশি নেতা এবং উচ্চপদস্থ ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়ায় যে সব অবমাননাকর মন্তব্য করা হয়েছে, সেগুলি মালদ্বীপ সরকারের নজরে পড়েছে। ওইসব মত ব্যক্তিগত। সরকার বিশ্বাস করে যে মত প্রকাশের স্বাধীনতা গণতান্ত্রিক ও দায়িত্বশীল উপায়ে ব্যবহার করা উচিত। এবং এমন উপায়ে ব্যবহার করা উচিত না যা ঘৃণা, নেতিবাচকতা বাড়িয়ে দেয়। তবে এই ধরনের অবমাননাকর মন্তব্য যারা করবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সরকার পিছপা হবে না ।
বলিউড তারকাদের পছন্দের ডেস্টিনেশন মালদ্বীপ। জন্মদিন হোক বা নিউ ইয়ার, ছুটি কাটাতে সেখানে ছোটেন তাঁরা। মালদ্বীপের মন্ত্রীর কুৎসিত এবং অবমাননাকর টুইটের জবাব দিয়ে অক্ষয় কুমার, শ্রদ্ধা কাপুর, জন আব্রাহামরা এগিয়ে এসে মুখ খুললেন লাক্ষদ্বীপের স্বপক্ষে। মালদ্বীপের চেয়ে কম সুন্দর নয় ভারতের সমুদ্র সৈকত এক সুরে বললেন তাঁরা।
মালদ্বীপের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি মহম্মদ নাশিদও প্রধানমন্ত্রী মোদি সম্পর্কে মরিয়ম শিউনার ওই অবমাননাকর মন্তব্যের নিন্দা করেছেন। মালদ্বীপের মন্ত্রীর মন্তব্যের নিন্দা করে তিনি।