পুবের কলম প্রতিবেদক, বারাসত: স্বেচছা রক্তদানে কেউ শতবার পেরিয়ে, কেউবা একশো পূর্ণের পথে। এমনই সব নজির গড়া ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে রবিবার বারাসাতের কাজীপাড়ায় মাস্টার কলোনিতে রক্তদান উৎসবে শামিল হল অন্য আবাসিকরা। উত্তরাচল ডেভেলপমেন্ট ট্রাস্ট আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে এদিন রক্তদাতাদের উৎসাহিত করতে উপস্থিত ছিলেন ১১৩ বারের রক্তদাতা তথা ওয়েস্ট বেঙ্গল ভলেন্টিয়ারি ব্লাড ডোনার্স ফোরাম এর প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক সত্তরোর্ধ অপূর্ব ঘোষ, ৫৩ বারের রক্তদাতা জনাব আলীর মতো ব্যক্তিরা। অন্যদের মধ্যে ছিলেন ফোরামের সাধারণ সম্পাদক শিক্ষক নুরুল ইসলাম, সাংবাদিক এনামুল হক প্রমুখ। অপূর্ব ঘোষ বলেন, রক্তদান একটি বহমান কর্মসূচি। এই অনুষ্ঠান শুরু করা যায় কিন্তু শেষ করা যায় না। যতদিন রক্ত আবিষ্কার না হয় এ উদ্যোগ নিতে যেতে হবে। সম্প্রতি রাজ্য সরকারও দুয়ারে সরকার শিবিরে রক্তদান কর্মসূচি রেখেছে। চাহিদার তুলনায় রক্তের সংগ্রহ কম থাকায়, একশ্রেণির মানুষ এটাকে নিয়ে ব্যবসা করছে যা অবিলম্বে বন্ধ হওয়া উচিত। তিনি জানান, এই মুহূর্তে রাজ্যে২৩ টি জেলায় ৮৯ টি সরকারি ব্লাড সেন্টার রয়েছে। সেগুলোতে পর্যাপ্ত রক্ত সংগ্রহ করতে হলে আরো বেশি মানুষকে রক্ত দিতে এগিয়ে আসতে হবে। তাহলে হাসপাতালে রক্ত নিয়ে এই কালোবাজারি বন্ধ হবে। তিনি বলেন রক্ত যেমন অন্যের জীবন বাঁচায়, তেমনি নিজের জীবনকেও নতুন করে গড়ে তোলে। রক্তদান করলে দেহে নতুন রক্ত তৈরি হয়, যা আমাদের শরীরকে সতেজ করে তোলে।
উত্তরাচল ডেভেলপমেন্ট ট্রাস্টের সম্পাদক আব্দুল ওদুদ মন্ডল বলেন, আইআইটির প্রাক্তন অফিসার বারাসতের ভাটরাপল্লির বাসিন্দা অপূর্ব ঘোষ, বিডিও অফিসে কর্মরত বারাসাতের পাল পাকুড়িয়ার বাসিন্দা জনাব আলীরা আমাদের কাছে আইকন। এত বেশিবার রক্ত দিয়ে তারা রেকর্ড গড়েছেন। সরকারি তরফে জাতীয় স্তরে তাদের পুরস্কৃত করা দরকার। এদিন অনুষ্ঠানে সাদেকুল করিম, মেহবুব মন্ডল, জেরিনা খাতুন, এরিনা খানমদের তৎপরতা ছিল চোখে পড়ার মতো। ট্রাস্টের পক্ষ থেকে অপূর্ব ঘোষ, নুরুল ইসলামরা ৫৩ বারের রক্ত দানকারী জনাব আলীকে উত্তরীয়, স্মারক ও উপহার দিয়ে সংবর্ধনা জ্ঞাপন করেন। অপূর্ব ঘোষকে সংবর্ধনা জানান ট্রাস্টের সম্পাদক আব্দুল ওদুদ মন্ডল। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন আব্দুল মাবুদ মন্ডল। উত্তরাচলের আবাসিকসহ প্রায় ৩০ জন এদিন রক্ত দান করেন।