পুবের কলম প্রতিবেদক: এবার কলকাতা পুরসভার সদর দফতরকেই প্রতারণার জন্য বেছে নিল প্রতারক। অভিযোগ, প্রতারক সশরীরে কলকাতা পুরসভাতে হাজিরা দিয়ে টাকা নিয়ে পালিয়ে গিয়েছে। জানা গিয়েছে, বড়বাজারের বাগরি মার্কেটের একটি গিফটের দোকানে এক আগন্তুক নিজেকে কলকাতা বিদ্যুৎ সরবরাহ সংস্থার প্রতিনিধি বলে পরিচয় দিয়ে দোকানের মালিককে জানায়, বিদ্যুতের বিলে অনেক টাকা বকেয়া রয়েছে। সেই টাকা না মেটালে বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দেওয়া হবে।
জানা গিয়েছে, আগন্তুকের পরনে ছিল কালো গোল গলার গেঞ্জি, শেওলা রঙের জ্যাকেট, মাথায় টুপি, হালকা হলদে রঙের প্যান্ট ও জুতো। টুপি দিয়ে ঢাকা ছিল মুখের একাংশ। দোকানের মালিক হীতেশ বনশালি জানান, ‘ঘরে ঢুকেই ওই ব্যক্তি জানায়, দোকানের বিদ্যুৎ বিল বাবদ সাত হাজার ছ’শো কুড়ি টাকা বকেয়া রয়েছে। ওই টাকা না দেওয়া হলে দোকানের বিদ্যুতের লাইন কেটে দেওয়া হবে। দোকানের নামে একটি ইলেকট্রিক বিলও দেখানো হয়।’
এরপরে, রাহুল গুপ্ত নামে এক কর্মচারীর হাতে নগদ টাকা দিয়ে হীতেশ তাঁকে ওই ব্যক্তির সঙ্গে যেতে বলেন। রাহুলও মালিকের নির্দেশমতো টাকা নিয়ে দোকান থেকে বেরিয়ে আসেন। রাহুলের দাবি, দোকান থেকে বেরিয়ে তাঁরা দু’জন বড়বাজারের কাছ থেকে বাস ধরে সোজা এসপ্ল্যানেডে নামেন। এরপরে রাহুলকে নিয়ে ওই ব্যক্তি চলে যায় কলকাতা পুরসভার সদর দপ্তরে। রাহুলকে বলা হয়, এখানেই বিদ্যুতের বিল জমা হয়। এটাই বিদ্যুৎ সংস্থার অফিস। রাহুলকে ব্যালকনির কাছে বসিয়ে টাকা চেয়ে ওই ব্যক্তি বলে, ‘এখানে বসুন। আমি বিলটা জমা দিয়ে আসি।’ রাহুলও সেইমত অপেক্ষা করতে থাকেন। এরপর, তিন-চার ঘন্টা কেটে গেলেও কেউ না আসায় সন্দেহ হয় রাহুলের। শুরু হয় খোঁজাখুঁজি। তখনই বিষয়টি নজরে আসে পুর-কর্মীদের। রাহুলকে তাঁরা জানান, এটা পুরসভার অফিস। বিদ্যুতের বিল কেন জমা নেওয়া হবে?
রাহুল পুরসভার কর্মীদের বিষয়টি জানিয়ে বলেন, ‘আমি কলকাতার বিশেষ কিছুই চিনি না। কোন্নগরের বাড়ি থেকে এসে দোকানে ঢুকলে আর বেরোতে পারি না। লোকটা সেই সুযোগই নিল।’ এরপর, পুরসভায় মোতায়েন পুলিশকর্মীদের কথা শুনে নিউ মার্কেট থানায় অভিযোগ জানান রাহুল। তবে, ঘটনাটি বড়বাজারের বলে তাঁকে বড়বাজার থানায় পাঠানো হয়। সেখানেই পুরো বিষয়টি জানিয়ে লিখিত অভিযোগ করেন দোকানের মালিক হীতেশ।