পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: দেশজুড়ে সিএএ লাগু হওয়ার পর থেকে অসমে নতুন করে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা দাবি করলেন, রাজ্যে এনআরসির চূড়ান্ত তালিকা থেকে যে ১৯ লক্ষ মানুষের নাম বাদ গিয়েছে তাদের মধ্যে মুসলিম রয়েছে ৭ লক্ষ। এক টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে হিমন্ত আরও বলেন, এনআরসি’র চূড়ান্ত তালিকা থেকে ৫ লক্ষ বাঙালি হিন্দু, ২ লক্ষ অসমীয়া হিন্দু (কোচ-রাজবংশী, দাস, কলিতা ও শর্মা) এবং ১.৫ লক্ষ গোর্খার নাম বাদ গিয়েছে।
এনআরসি’র তথ্য অনুযায়ী, মোট ১৯ লক্ষ নাম বাদ পড়েছিল। কিন্তু, মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, সেই সংখ্যাটা ১৫.৫ লক্ষ (৭ লক্ষ মুসলিম ধরে)। তাহলে বাকি ৩.৫ লক্ষ লোক কারা সেই সম্পর্কে কোনও কথাই বলেননি হিমন্ত।
হিমন্ত অবশ্য ঘোষণা করেছেন, ৩-৬ লক্ষ এনআরসি ছুট হিন্দুরা সিএএ’তে ভারতীয় নাগরিকত্বর জন্য আবেদন করতে পারবে। উল্লেখ্য, অসমে ২০১৯ সালের ৩১ আগস্ট এনআরসি’র চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ হয়। এর উদ্দেশ্য ছিল–রাজ্যে বসবাসকারী অনথিভুক্ত উদ্বাস্তুদের থেকে প্রকৃত ভারতীয় নাগরিকদের আলাদা করা।
তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করার জন্য বাসিন্দাদের প্রমাণ করতে হয়েছিল যে তারা বা তাদের পূর্বপুরুষরা ১৯৭১ সালের ২৪ মার্চের মধ্যরাতের আগে অসমে প্রবেশ করেছিল। উল্লেখ্য, এর আগে এক সাক্ষাৎকারে হিমন্ত দাবি করেছিলেন, অসম থেকে খুব কম সংখ্যক লোকই সিএএ-তে নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করবে।
সেই একই সাংবাদিক সম্মেলনে হিমন্ত আরও দাবি করেন, ‘অসমে এনআরসি-তে বাদ যাওয়া মানুষ ছাড়া একজনও নাগরিকত্ব পাবেন না। আর যদি তার বাইরে নতুন কেউ নাগরিকত্ব পায় তাহলে সবার আগে আমি মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেব। তাঁর বক্তব্য অনুযায়ী, বিগত দিনে এনআরসিতে যেসব মানুষ অসমে নাগরিকত্ব হারিয়েছেন, তাঁরাই কেবলমাত্র সিএএ’র মাধ্যমে নাগরিকত্বের আবেদন করতে পারবেন।
অর্থাৎ ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত পাকিস্তান, বাংলাদেশ এবং আফগানিস্তান থেকে ধর্মীয় নিপীড়নের কারণে ভারত তথা অসমে আসা শরণার্থীদেরই কেবলমাত্র এই আইনের মাধ্যমে এ দেশের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। কিন্তু তাদের অবশ্যই হিন্দু, শিখ, জৈন, বৌদ্ধ, পার্সি অথবা খ্রিস্টান সম্প্রদায় ভুক্ত হতে হবে। অন্য কোনও সম্প্রদায়ের মানুষকে কিংবা ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের পরে আসা কাউকে নাগরিকত্ব দেওয়া হবে না।