বিশেষ প্রতিবেদন: ই-বর্জ্য বড় উদ্বেগের কারণ। ইলেকট্রনিক সরঞ্জামের মধ্যে সিসা; সিলিকন; টিন; ক্যাডমিয়াম; পারদ; দস্তা; ক্রোমিয়াম; নাইট্রাস অক্সাইড প্রভৃতি রাসায়নিক থাকে। এসব রাসায়নিক মাটি ও পানিকে দূষিত করছে। নানাভাবে তা মানুষের শরীরে প্রবেশ করে নানা রোগের ঝুঁকি তৈরি করছে।
গর্ভবতী মা ও শিশুদের ঝুঁকি বেশি। বিশ্বব্যাপী এমন পরিস্তিতিতে ই-বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংগঠন ‘ওয়েস্ট ইলেকট্রিকাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইকুইপেমেন্ট (ডব্লিউইইই) ফোরাম’ জানিয়েছে; কেবল এ বছরই ৫৩০ কোটি মোবাইল ফোন ই-বর্জ্যে পরিত হবে।
এর একটিও পুনর্ব্যবহারের উপযোগী বা রিসাইকেল করা হবে না। বিশ্ববাজারের তথ্য বিশ্লেষণ করে ই-বর্জ্যে পরিণত হতে চলা বিপুল সংখ্যক ডিভাইসের এই সংখ্যা অনুমানের চেষ্টা করেছে ডব্লিউইইই ফোরাম।
মোবাইল ফোন মালিকদের অনেকে পুরনো ডিভাইস রিসাইকেল করার বদলে নিজের কাছেই রেখে দিচ্ছেন বলেও উঠে এসেছে গবেষায়। ইলেকট্রনিক পণ্যের তারে ব্যবহৃত কপার বা রিচার্জেবল ব্যাটারি নির্মাে ব্যবহৃত কোবাল্টের মতো ধাতু আসে খনি থেকে।
ডিভাইসগুলো রিসাইকেল করা না হলে অথবা নষ্ট ডিভাইস থেকে এসব দামি ধাতু সংগ্রহ করার উদ্যোগ ও চেষ্টা না থাকলে নষ্ট হয় মূল্যবান ধাতুগুলো।
ডব্লিউইইই মহাপরিচালক প্যাসকেল লিরয় বলেন; ‘মানুষ যেটা উপলব্ধি করতে পারছে না; তা হল; তুচ্ছ মনে হওয়া জিনিসগুলোরও অনেক মূল্য আছে এবং একযোগে এর আকার বিরাট।’
বিশ্বব্যাপী মানুষের হাতে এখন ১;৬০০ কোটি মোবাইল ফোন আছে বলে অনুমান। এর মধ্যে ইউরোপের নাগরিকদের কাছে থাকা ডিভাইসগুলোর এক-তৃতীয়াংশই আর ব্যবহৃত হচ্ছে না।
ডব্লিউইইই জানিয়েছে; ওয়াশিং মেশিন থেকে শুরু করে ট্যাবলেট কম্পিউটার ও জিপিএস ডিভাইসের মতো বৈদ্যুতিক পণ্য থেকে সৃষ্ট ‘পাহাড়’ সমান বর্জ্যরে আকার ২০৩০ সাল নাগাদ প্রতি বছর ৭ কোটি ৪০ লক্ষ টন করে বাড়তে থাকবে। প্রতি বছর বিশ্বের মোট ই-বর্জ্যের মাত্র ১৭ শতাংশ পুরোপুরি রিসাইকেল করা হয়। ২০২৪ সালের মধ্যে এই হারকে ৩০ শতাংশে নেওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে ‘ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়ন’।