পুবের কলম ওয়েব ডেস্কঃ বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলিতেই দলিত হিন্দুদের মধ্যে বৌদ্ধধর্ম গ্রহণের প্রবণতা বাড়ছে। সমাজে তাঁদের সঙ্গে যেভাবে অমানবিক বৈষম্য করা হয়, তাঁদের প্রতি বিমাতৃসুলভ আচরণ করা হয় তার প্রতিবাদ জানাতেই ও সমাজে মর্যাদার সঙ্গে বাঁচতে তাঁরা বৌদ্ধধর্মের প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছেন। আর এবার ধর্মান্তরের ঘটনাটি ঘটেছে গুজরাতে। ক’দিন আগেই গুজরাতে বিধানসভা ভোটের ফল ঘোষণা হয়েছে। তাতে সমস্ত রেকর্ড টপকে গিয়েছে পদ্মশিবির। তারপরই এই ঘটনা ঘটল। সবথেকে তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, কোথাও ধর্মান্তরের ঘটনা ঘটলে তেডেফুঁড়ে ময়দানে নামে গেরুয়া শিবির। এক্ষেত্রে অবশ্য তার ব্যতিক্রম ঘটনা নজরে এসেছে। বিশ্ব হিন্দু পরিষদের (ভিএইচপি) মতো দল এই ঘটনা নিয়ে বলছে, এই নিয়ে তাদের কোনও আপত্তি নেই।
ফের দলিত হিন্দুদের বৌদ্ধধর্ম গ্রহণের ঘটনাকে কেন্দ্র করে সরগরম পরিস্থিতি। এবার গুজরাতের মহিসাগর জেলায় ৪৫জন দলিতের ধর্মান্তরের ঘটনা সামনে এসেছে। জানা গিয়েছে, মহিসাগরের বালাসিনোরে একটি হোটেলে এই ধর্মান্তরণের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে ৪৫ জন দলিত বৌদ্ধধর্ম গ্রহণ করেন। মহিসাগর, পঞ্চমহল ও খেদা এই তিন জেলার মোট ৪৫ জন হিন্দু দলিত বৌদ্ধ ধর্মে দীক্ষিত হন। ধমান্তরিতরা জানিয়েছেন, আইন ও সমস্ত সরকারি নিয়ম-নীতি মেনেই তাঁরা হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করে বৌদ্ধধর্ম গ্রহণ করেছেন। এক মাস আগে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে ধর্ম পরিবর্তনের অনুমতি নিয়েছিলেন। কোনও বলপ্রয়োগ বা প্রলোভন নয়, সম্পূর্ণ স্বেচ্ছায় তাঁরা বৌদ্ধধর্ম গ্রহণ করেছেন।
কথিত লাভ জিহাদ, ধর্মান্তরের মতো ঘটনা ঘটলে সবার আগে যাদের রে-রে করে ময়দানে নামতে দেখা যায় সেই ভিএইচপিও বিষয়টি নিয়ে বিশেষ মাতামাতি করছে না। তাদের যুক্তি, বৌদ্ধধর্মও হিন্দু ধর্মের একটি অংশ। বৃহস্পতিবার ভিএইচপি’র তরফে জানানো হয়েছে, গুজরাতের মহিসাগর জেলার বালাসিনর তালুকে ৪৫ জনের একটি দল বৌদ্ধধর্মে ধর্মান্তরিত হয়েছে। তারা মোটেই এর বিরোধিতা করছে না। মঙ্গলবার এই ধর্মান্তরের ঘটনাটি ঘটেছে।
ভিএইচপি’র রাজ্য মুখপাত্র হিতেন্দ্রসিংহ রাজপুতের কথায়, বৌদ্ধধর্ম হিন্দুধর্মের একটি অংশ। তবে হিন্দু দেব-দেবীদের অমর্যাদা হলে আমরা মেনে নেব না। তবে কিছু লোক মানুষকে ধর্মান্তরিত করার প্রলোভন দেখাচ্ছে। যদিও একটি অংশের অভিযোগ, আইনের তোয়াক্কা না করেই এই ধর্মান্তরের ঘটনাটি ঘটেছে। জেলাশাসকের থেকে অনুমতি মেলার আগেই এই ধর্মান্তরের ঘটনা ঘটানো হয়েছে। অভিযোগ, গুজরাতে ধর্মের স্বাধীনতা আইন ২০০৩-এর বিধান অনুসারে ধর্মান্তরের জন্য জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের থেকে অনুমতি নিতে হয়। সেই অনুমতি না নিয়েই ওই ৪৫ জন দলিত বৌদ্ধধর্মে ধর্মান্তরিত হয়েছেন।
যদিও বৌদ্ধ ধর্ম গ্রহণকারীদের তরফে কমলেশ মায়াবংশী বলেন, আইনের কোনও লঙ্ঘন করা হয়নি। যাঁরা হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করতে চেয়েছিলেন তাঁরা নিয়ম অনুযায়ী এক মাস আগে জেলা কালেক্টরের কাছে আবেদন করেছিলেন। নিয়ম অনুযায়ী, আবেদনের ১৫ মিনিটের মধ্যে তার অনুমোদন দিতে হবে। আর অনুমোদন যদি নাও দেওয়া হয় তাহলেও আবেদনটি গ্রহণযোগ্য বলে বিবেচিত হবে। সেইমতো আমরা বৌদ্ধধর্ম গ্রহণ করেছি।