পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: ওড়িশার জাজপুরে মর্মান্তিক বাস দুর্ঘটনা। সোমবার রাতে পুরী থেকে কলকাতাগামী একটি যাত্রীবাহী বাস বরাবাঁটী সেতু থেকে ছিটকে পড়ে মৃত্যু হয়েছে কমপক্ষে ৫ জনের। গুরুতর আহত ৪৪ জন। মৃতদের মধ্যে একজন মহিলা বলে জানিয়েছেন ধরমশালা পুলিশ স্টেশনের ইন্সপেক্টর ইনচার্জ তপন কুমার বণিক। মৃতদের মধ্যে চারজন পূর্ব মেদিনীপুরের বাসিন্দা। বাসটি কটক থেকে পশ্চিমবঙ্গের দিঘার দিকে যাচ্ছিল। রাত ৯ টা নাগাদ এই দুর্ঘটনা ঘটে বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
চালক নিয়ন্ত্রণ হারানোর ফলেই এই দুর্ঘটনা বলে পুলিশ জানিয়েছে। দুর্ঘটনাগ্রস্ত বাসটিকে উদ্ধারের চেষ্টা করা হচ্ছে। দুর্ঘটনায় মৃতদের পরিবারকে তিন লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক। শোকজ্ঞাপন করেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আহতদের মধ্যে ২৪ জন পশ্চিমবঙ্গের, ১২ জন পূর্ব মেদিনীপুরের, ১ জন উত্তর দিনাজপুরের বাসিন্দা। কন্ট্রোল রুম খোলার সিদ্ধান্ত ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গ সরকারের। ওড়িশার মুখ্যসচিবের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন রাজ্যের মুখ্যসচিবের। মুখ্যমন্ত্রী মুখ্যসচিবের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়েছেন। আহতদের রাজ্যে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করেছে রাজ্য সরকারের। নবান্নে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। নম্বর-০৩৩ ২২১৪ ৩৫২৪।
শোকজ্ঞাপন করে নবীন পট্টনায়েক এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন, “জাজপুর জেলার বরাবাঁটী এলাকায় যাত্রীবাহী বাস দুর্ঘটনার খবরে আমি দুঃখিত। নিহতদের আত্মার শান্তি কামনা করছি এবং তাঁদের পরিবারের প্রতি আমার সমবেদনা রইল। এ ছাড়াও, আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি।”
বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এক্স হ্যান্ডেলে ট্যুইট করে লেখেন, ‘ গত রাতে ওড়িশার জাজপুর জেলায় একটি মর্মান্তিক বাস দুর্ঘটনায় বেশ কয়েকজন যাত্রীর মৃত্যু ও আহত হওয়ার খবরে আমি দুঃখিত। আমাদের রাজ্যের দমকল মন্ত্রী সুজিত বসু ঘটনাস্থলে রওনা দিয়েছেন। বাংলার প্রশাসন উদ্ধারকাজে সহায়তা করছে। বাংলা থেকে অ্যাম্বুলেন্স সহ যাত্রীদের ফিরিয়ে আনতে গাড়ি পাঠানো হয়েছে। মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে শয্যা মজুদ রাখতে বলা হয়েছে।নিয়ম অনুযায়ী মৃত ও আহতদের স্বজনদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। রাজ্য প্রশাসন, পশ্চিম মেদিনীপুর এবং পূর্ব মেদিনীপুর জেলার আধিকারিকরা ত্রাণ সহায়তা করছে। পূর্ব মেদিনীপুরের ক্ষতিগ্রস্ত ভাই ও বোনদের প্রতি আমার আমার সমবেদনা’।
পুলিশ সূত্রে খবর, দুর্ঘটনাগ্রস্ত বাসটিতে ৫০ জনেরও বেশি যাত্রী ছিল। আহতদের ১০টি অ্যাম্বুল্যান্সে স্থানীয় ধর্মশালা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। গুরুতর আহতদের পাঠানো হয়েছে কটকের এসসিবি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।
জাজপুরের মুখ্য জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক জানিয়েছেন, চালকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। আহতদের কটকের এসসিবি মেডিক্যাল কলেজ-হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান অনুযায়ী, বাসের চালক সম্ভবত মদ্যপ অবস্থায় ছিল। বাসটি বেপরোয়াভাবে চলছিল।