পুবের, কলম, ওয়েবডেস্ক: ভারতের জেলে বন্দি রয়েছেন পাঁচ মুসলিম সহ চার কাশ্মিরী সাংবাদিক এমনই তথ্য তুলে ধরল সিপিজে (কমিটি ট্যু প্রোটেক্ট জার্নালিস্ট)। ২০২২-এর ‘নাম্বার অফ জেলড’, শীর্ষক একটি প্রতিবেদনে এই পরিসংখ্যান তুলে ধরেছে সিপিজে।
প্রতিবেদনে সংস্থাটি বলেছে যে, জেলবন্দি সাংবাদিকদের সংখ্যা নতুন করে বৈশ্বিক রেকর্ডে পৌঁছে গেছে। ভারত সংবাদমাধ্যমের প্রতি তার আচরণের জন্য বিশেষ করে জম্মু ও কাশ্মীর জননিরাপত্তা আইন, প্রতিরোধমূলক আটক আইনের ব্যবহার নিয়ে সমালোচনার সম্মুখীন হয়েছে। কাশ্মীরি সাংবাদিক আসিফ সুলতান,ফাহাদ শাহ এবং সাজাদ গুলকে কারাগারের আড়ালে রাখার পরে তাদের পৃথক মামলায় আদালতের আদেশে জামিন দেওয়া হয়।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ভারতের সন্ত্রাসবিরোধী বেআইনি কার্যকলাপ (প্রতিরোধ) আইনের অধীনে কারাগারের পিছনে থাকা সাংবাদিকদের মধ্যে রয়েছেন আনন্দ তেলতুম্বে, সিদ্দিক কাপ্পান এবং মনন দার।
রিপোর্ট অনুযায়ী, কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টদের বার্ষিক জেল শুমারিতে দেখা গেছে যে, ২০২২ সালের ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত পর্যন্ত ৩৬৩ জন সাংবাদিক তাদের স্বাধীনতা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। এই রেকর্ড গত বছরের তুলনায় ২০ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। এই সংখ্যা বৈশ্বিক সংবাদমাধ্যমের একটি অবনতিশীল দিককে নির্দেশ করছে।
সিপিজে জানাচ্ছে ইরান, চিন, মায়ানমার, তুর্কি বেলারুশে সেরা পাঁচ সাংবাদিক জেলবন্দী।
সংস্থার মতে, ‘কোভিড -১৯’ এবং ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার যুদ্ধের ফলে অর্থনৈতিক পতনের কারণে বিপর্যস্ত বিশ্বে অসন্তোষগুলিকে ঢাকতে মিডিয়াকে দমিয়ে রাখার জন্য সরকারগুলি ক্রমবর্ধমান নিপীড়নমূলক নীতি ব্যবহার করে চলেছে।
সিপিজে তার প্রতিবেদনে, সংখ্যালঘুদের উপর চলমান দমন-পীড়নের কথাও উল্লেখ করেছে। সংস্থাটি প্রতিবেদনে বলেছে, স্বৈরাচারী নেতারা কীভাবে সংবাদপত্রের স্বাধীনতাকে শ্বাসরোধ করার চেষ্টা করছে তার জ্বলন্ত উদাহরণ হল সাংবাদিকদের কারারুদ্ধ করা।
সংস্থাটি আরও বলেছে যে, সরকারগুলি ‘ভুয়ো খবর’ কৌশলকে আইনের মতো সম্মান করছে এবং সাংবাদিকদের অপরাধী প্রমাণ করার জন্য অপরাধমূলক মানহানির মামলা করছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বেশ কয়েকটি দেশে আইনের শাসন এবং বিচার ব্যবস্থার অপব্যবহার করা হচ্ছে এবং সরকারগুলি সাংবাদিক এবং তাদের পরিবারের উপর গুপ্তচরবৃত্তি করার জন্য প্রযুক্তিকে কাজে লাগাচ্ছে।
রাশিয়া থেকে নিকারাগুয়া, আফগানিস্তান পর্যন্ত দেশগুলিতে মিডিয়াকে সেন্সরশিপের ভয় দেখানোর কারণে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনভাবে কাজকর্ম করার পরিবেশ ধবংস হয়ে যাচ্ছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, সরকারের এই দমনপীড়ন নীতিগুলি দেশভেদে পৃথক হলেও, নথিভুক্ত মামলাগুলি সরকারি নিষ্ঠুরতা ও প্রতিহিংসার মেটানোর একটি সাধারণ মাধ্যম বলা যেতে পারে।