পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: সুদানের সেনাবাহিনী এবং আধাসামরিক বাহিনী রাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) মধ্যে চলমান সংঘাত বন্ধে ২৪ ঘণ্টার অস্ত্রবিরতি ব্যর্থ হয়েছে। দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে এখনও পর্যন্ত প্রায় ৩০০ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান। দিন-দিন সুদানের দুই জেনারেলের ক্ষমতা দখলের লড়াই আরও তীব্র হচ্ছে। এমন অবস্থায় দেশটির রাজধানী খার্তুম ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য পালাচ্ছে হাজার হাজার মানুষ। রাজধানীর কেন্দ্রেও তীব্র সংঘর্ষের খবর মিলেছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) প্রধান টেড্রস আধানম ঘেব্রিয়াসুস এক ট্যুইটে বলেন, ‘সুদানের পরিস্থিতি ক্রমশ উদ্বেগজনক এবং হৃদয়বিদারক হয়ে উঠছে। এ পর্যন্ত প্রায় ৩০০ জন মারা গেছেন এবং ৩ হাজার জনেরও বেশি আহত হয়েছেন।
আমি সব প্রাণহানির নিন্দা জানাই। বিশেষ করে অসামরিক নাগরিক এবং স্বাস্থ্যসেবা অবকাঠামোর ওপর হামলার তীব্র নিন্দা জানাই।’
ঘেব্রিয়াসুস আরও বলেন, ‘যখন হাজার হাজার আহত ব্যক্তির জরুরি সেবার প্রয়োজন তখন নিরাপদে স্বাস্থ্যসেবা অবকাঠামোতে প্রবেশাধিকার, বিদ্যুৎ, খাদ্য, পানি, কর্মী এবং চিকিৎসা সরঞ্জামের অভাবের কারণে অনেক স্বাস্থ্যসেবা সঠিক সময়ে দেওয়া অসম্ভব হয়ে উঠেছে।’
আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতায় ২৪ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতির কথা হয়েছিল সুদানের দুই জেনারেলের মধ্যে। মনে করা হচ্ছিল, আমআদমির কথা ভেবে এবার হয়তো অস্ত্র নামিয়ে রাখবেন সেনাবাহিনীর জেনারেল বুরহান ও আধাসেনার জেনারেল দাগালো। এই অস্ত্রবিরতি বুধবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে কার্যকর হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সন্ধ্যা ৬টার পর দুই পক্ষের মধ্যে ফের লড়াই শুরু হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে আধাসেনা আরএসএফ অভিযোগ করেছে, সেনাবাহিনীই আগে তাদের ওপর আক্রমণ চালিয়েছে। জবাবে সেনাবাহিনী আরএসএফ-কে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আখ্যা দিয়ে বলেছে, আধা সামরিক বাহিনী ‘মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছে’।
এ দিকে, সুদানে গৃহযুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যে আটকে বহু ভারতীয়। এখনও পর্যন্ত সেদেশে মৃত্যু হয়েছে এক ভারতীয়র। এই আবহে সেই দেশে থাকা ভারতীয় নাগরিকদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে ব্রিটেন, আমেরিকা, সংযুক্ত আরব আমিরশাহী এবং সউদি আরবের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে ভারত। তথ্য বলছে, সুদানে আটকে রয়েছেন ২,৮০০ ভারতীয়। ভারতের বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর বলেন, ‘দিল্লির অগ্রাধিকার হল সকল ভারতীয়র সুরক্ষা নিশ্চিত করা।’ ভারতের বিদেশমন্ত্রক জানিয়েছে, সুদানে ভারতীয়দের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে আমিরশাহী এবং সউদি আরব যথাসম্ভব সাহায্য করবে ভারতকে। নাগরিকদের নিরাপত্তার কথা ভেবে নয়াদিল্লিতে ইতিমধ্যেই একটি কন্ট্রোলরুম খোলা হয়েছে। খার্তুমে অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাসের সঙ্গে সেই কন্ট্রোলরুম যোগাযোগ রাখছে।