পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: ধুলিঝড়ে বিপর্যস্ত মুম্বইয়ের বাণিজ্যনগরী। দমকা হাওয়ায় ঘাটকোপার এলাকায় হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে একটি সুউচ্চ হোর্ডিং। এই হোর্ডিং ভেঙে কমপক্ষে ১৪ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। আহত প্রায় ৭৪ জন। পুলিশ সূত্রে খবর, ধুলো ঝড় ও অসময়ে বৃষ্টির প্রভাবে ঘাটকোপার এলাকায় বেআইনিভাবে লাগানো ১০০ ফুট উঁচু হোর্ডিংটি ভেঙে পড়েছে। আহতের মধ্যে ৩১ জনকে রাজাওয়াদি হাসপাতাল থেকে চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে, বাকি ৩৫ জনের চিকিৎসা চলছে, তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছে বিএমসি। বাকি আটজনের চিকিৎসা চলছে বেসরকারি হাসপাতালে। ঘটনাস্থলে যান মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডে। ঘটনায় শিন্ডে মৃতদের পরিবার পিছু ৫ লক্ষ টাকা ও আহতদের দ্রুত সুস্থতার আশ্বাস দিয়েছেন। সেইসঙ্গে ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনা এড়াতে মুম্বইয়ের সমস্ত বিলবোর্ডের অডিট করার নির্দেশ দিয়েছেন।
বিলবোর্ড সংস্থা মেসার্স ইগো মিডিয়া প্রাইভেট লিমিটেডের মালিক ভাবেশ ভিন্দে এবং অন্যান্যদের বিরুদ্ধে পান্থনগর থানায় ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক ধারায় অপরাধমূলক হত্যাকাণ্ডের জন্য একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মুম্বাই পুলিশ কমিশনার বিবেক ফাঁসালকার বলেন, শহরে হোর্ডিং ভেঙে পড়া ঘটনার জন্য যারা দায়ী তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মঙ্গলবার সকালেও দুর্ঘটনাকবলিত স্থানে উদ্ধার তৎপরতা চলছে বলে জানিয়েছে বৃহনমুম্বাই মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ (বিএমসি)। এছাড়া জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর (এনডিআরএফ) কয়েকটি দল ঘটনাস্থলে রয়েছে। ধ্বংস্তূপের নিচে কেউ আটকে আছেন কি না, তারা তা খতিয়ে দেখছে।
তবে এই বিপর্যয়ের মধ্যেই প্রশ্ন উঠছে বিলবোর্ড লাগানো নিয়ে। জানা গিয়েছে, ইগো মিডিয়া নামে একটি সংস্থা ওই বিলবোর্ড টাঙিয়েছিল। কিন্তু ওই এলাকাটি পুলিশ ওয়েলফেয়ার কর্পোরেশনকে লিজে দিয়েছিল মহারাষ্ট্র সরকারের পুলিশ হাউজিং বিভাগ। তবে ওই চত্বরে চারটি হোর্ডিং টাঙাতে ইগো মিডিয়াকে অনুমতি দিয়েছিলেন রেল পুলিশের এসিপি। কিন্তু এই হোর্ডিং টাঙানোর আগে মুম্বই কর্পোরেশনের থেকে নো অবজেকশন সার্টিফিকেট নেয়নি ইগো মিডিয়া।
ইতিমধ্যেই ইগো মিডিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে মুম্বই পুলিশ। পাশাপাশি রেল পুলিশের এসিপি এবং রেলওয়ে কমিশনারকে নোটিশ পাঠিয়েছে মুম্বই কর্পোরেশন। বিলবোর্ড টাঙানোর অনুমতি বাতিল করতে অনুরোধ করা হয়েছে ওই নোটিশে। তবে ইগো মিডিয়ার তরফে গোটা বিষয়টি নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি। বিতর্কিত চারটি হোর্ডিংয়ের মধ্যে একটিই ভেঙে পড়েছে সোমবার। বিএমসি বিজ্ঞাপন সংস্থাটিকে অবিলম্বে ঘটনাস্থলের কাছাকাছি বাকি ৩টি হোর্ডিং খোলার নির্দেশ দিয়েছে।