বিশেষ প্রতিবেদন: লোহিত সাগর ঘিরে উত্তেজনার পারদ তুঙ্গে উঠেছে। ইয়েমেনে আমেরিকা ও ব্রিটেনের যৌথ সামরিক অভিযান আগুনে ঘি ঢেলেছে। হুথি আনসারুল্লাহ বাহিনী ও পশ্চিমাদের পাল্টাপাল্টি হামলা-হুমকিতে সংঘাতময় অঞ্চল হয়ে উঠেছে রেড সি’র গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য-রুট। এমন পরিস্থিতিতে মধ্যপ্রাচ্যে আবারও যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে বলে আশঙ্কা বিশ্লেষকদের। গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি অভিযান শুরুর পর থেকে লোহিত সাগরে একের পর এক বাণিজ্যিক জাহাজে আক্রমণ চালাতে শুরু করে ইরান সমর্থিত হুথি আনসারুল্লাহ যোদ্ধারা। গাজায় ইসরাইলি হামলার জেরে লোহিত সাগরে ২ মাসেরও বেশি সময় ধরে অব্যাহত আছে হুথিদের হামলা। সুয়েজ খালের দক্ষিণ অংশ দিয়ে যাতায়াত করা ইসরাইলগামী বাণিজ্যিক জাহাজ লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে সশস্ত্র গোষ্ঠীটি। এর জেরে হুথিদের মোকাবিলায় জোট গঠন করেছে আমেরিকা। আমেরিকা, ব্রিটেনসহ এই জোটে যোগ দেয় অন্তত ২০টি দেশ। লোহিত সাগরে উত্তেজনা নিরসন ও অবাধে বাণিজ্য বজায় রাখতেই জোট গঠনের দাবি করা হয়। এরমধ্যেই ৯ জানুয়ারি লোহিত সাগরে এ যাবৎকালের সবচেয়ে বড় হামলা চালায় হুথিরা। গত ৫০ দিনে লোহিত সাগরে হুথিদের ২৬তম হামলা ছিল সেদিন। আমেরিকা এবং ব্রিটেনের নৌবাহিনীর জাহাজ লক্ষ্য করে একের পর এক মিসাইল ছোড়ে সশস্ত্র গোষ্ঠীটি। অন্তত ৫০টি বাণিজ্যিক জাহাজ সশস্ত্র গোষ্ঠীটির হামলার আওতায় ছিল বলে জানায় ওয়াশিংটন। ওই হামলার তিনদিনের মাথায় শুক্রবার ভোরে ইয়েমেনের কয়েকটি শহরে হুথি যোদ্ধাদের অবস্থান ও ঘাঁটি লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালায় মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোট। বিমান হামলায় অন্তত পাঁচজন হুথি সদস্য নিহত ও ছয়জন আহত হয়েছে।
এক বিবৃতিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, লোহিত সাগরে আন্তর্জাতিক সমুদ্রসীমায় চলাচলকারী জাহাজের ওপর হুথিদের হামলার জবাবে এসব হামলা চালানো হয়েছে। এ অবস্থায় লোহিত সাগর ঘিরে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। এই হামলার মধ্যদিয়ে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে বড় যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা। হুথি আনসারুল্লাহ প্রশাসনের উপ-বিদেশমন্ত্রী হুসেইন আল-ইজি মার্কিন জোটের হামলাকে ‘বর্বর’ অভিহিত করে বলেছেন, এই হামলার জন্য আমেরিকা ও ব্রিটেনকে চরম মূল্য দিতে হবে। ইয়েমেনে মার্কিন জোটের হামলার সমালোচনা করেছে হুথি গোষ্ঠীর সমর্থক ফিলিস্তিনের হামাস, প্যালেস্টিনিয়ান ইসলামিক জিহাদ ও লেবাননের হিজবুল্লাহ।