মুসরত আরা পারভিন, চাঁচলঃ তিনবছর কোনও খুনোখুনির ঘটনা ঘটেনি। বেশ শান্তই ছিল এলাকা। কিন্তু, সেতাবুর রহমানের খুনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ফের রক্তাক্ত হয়ে উঠল মালদার চাঁচল থানার চন্দ্রপাড়া এলাকা। রাতের বেলা বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে দলীয় নেতাকে খুনের অভিযোগ উঠল তৃণমূলেরই এক জনপ্রতিনিধি ও তার আত্মীয়ের বিরুদ্ধে। তৃণমূলের ওই নেতার পাশাপাশি অস্ত্রের আঘাতে জখম হয়েছেন এক মহিলাও। বর্তমানে তিনি মালদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। খুনের ঘটনার পরেই পুরো এলাকা ঘিরে রেখেছে পুলিশ। থমথমে এলাকায় উত্তজনার পারদ ইতিমধ্যেই চড়তে শুরু করেছে। জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি ও এলাকার বিধায়ক আবদুর রহিম বক্সী এলাকায় শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখার আবেদন জানিয়েছেন। পুলিশ একজনকে গ্রেফতার করেছে।
চন্দ্রপাড়া অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি আসমিন পারভেজের দাবি, এই ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির সম্পর্ক নেই। পারিবারিক বিবাদের কারণে এই ঘটনা ঘটে থাকতে পারে বলে তার মন্তব্য।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃত তৃণমূল নেতার নাম সেতাবুর রহমান (৩৬)। তিনি চন্দ্রপাড়া অঞ্চল তৃণমূলের সহ সভাপতি। মৃতের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতে ফোন করে সেতাবুরকে নিজেদের বাড়ি ডাকে অভিযুক্তরা। দলীয় সহকর্মীর ডাক পেয়ে বাড়ি থেকে প্রায় দেড়শো মিটার দূরে যান তিনি।
প্রায় ঘণ্টাখানেক পরেও সেতাবুর বাড়ি না ফেরায় তার পরিবারের লোকেরা তার খোঁজ শুরু করে। পরিবারে অভিযোগ ধারালো অস্ত্র দিয়ে সেতাবুরের ওপর হামলা চালিয়েছে খানপুর গ্রামের তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য শেরবানু বিবির স্বামী জামালুদ্দিন ও তার ভাই কামালুদ্দিন। কামালুদ্দিনের স্ত্রী নাইমা বিবি বাধা দিতে আসলে তাকেও কোপানো হয় বলে অভিযোগ। স্থানীয় বাসিন্দারা রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁদের উদ্ধার করে প্রথমে মালতিপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও পরে চাঁচল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করেন। চিকিৎসকরা দুজনকেই মালদা মেডিকেলে রেফার করে দেন। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলেই সেখানেই মৃত্যু হয় সেতাবুরের। ঘটনার পরেই মূল অভিযুক্তের একজন কামালুদ্দিনকে গ্রেফতার করে চাঁচল থানার পুলিশ।
সেতাবুরের স্ত্রী আলিয়ারা খাতুনের অভিযোগ, বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে ঠান্ডা মাথায় তার স্বামীকে খুন করা হয়েছে। দোষীদের চরম শাস্তি দাবি জানিয়েছেন তিনি। চাঁচল থানার আইসি সুকুমার ঘোষ জানিয়েছেন, একজন অভিযুক্ত গ্রেফতার হয়েছেন। অপরজনের খোঁজ চলছে। কি কারণে খুন করা হয়েছে সেবিষয়ে তদন্ত চলছে।