পুবের কলম ওয়েব ডেস্ক: গাম্বিয়ায় ৬৬ শিশুর অস্বাভাবিক মৃত্যুর পর ভারতে তৈরি কাশির সিরাপ নিয়ে সতর্ক করল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অর্থাৎ হু। দিল্লির মেইডেন ফার্মাসিউটিক্যালসের তৈরি ওই সিরাপ যাতে অন্য কোনও দেশে আর ব্যবহার না করা হয়, সেই নিয়েও হু এর তরফে বার্তা দেওয়া হয়েছে।
হরিয়ানার সোনিপতের মেইডেন ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড দীর্ঘদিন ধরেই শিশুদের জন্য নানান রকমের কাশির সিরাপ তৈরি করে আসছে। এই সংস্থার তৈরি ওরাল সলিউশন, কোফেক্সমালিন বেবি কাফ সিরাপ, মেকঅফ বেবি কাফ সিরাপ ও ম্যাগরিপ এন কোল্ড সিরাপ এই চারটি ওষুধ নিয়ে সতর্কবার্তা দিয়েছে হু।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, ওই চারটি সিরাপ পরীক্ষা করে দেখা গেছে সেগুলোর মধ্যে অস্বাভাবিক মাত্রায় ডাইথিলিন গ্রাইকল এবং এথিলিন গ্লাইকল রয়েছে। যা শিশুদের জন্যই খুবই ক্ষতিকারক এবং প্রাণনাশক। যা সেবন করলে শরীরে বিষক্রিয়া হতে পারে বলেও জানা গেছে।
ইতিমধ্যেই এই বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে হু। যে সংস্থার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ উঠছে, তাদের সঙ্গেও যোগাযোগ করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। তবে এই প্রসঙ্গে এখনও পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করেনি মেইডেন ফার্মা।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের জুলাই মাসের শেষের দিকে গাম্বিয়ায় হঠাৎ করে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের মধ্যে মারাত্মক কিডনি জটিলতায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ব্যাপকভাবে শনাক্ত হতে থাকে। আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পেতে থাকলে এই বিষয়ে তদন্ত শুরু করার নির্দেশ দেন দেশটির সরকার।
তদন্তের পর জানা যায়, স্থানীয়ভাবে বিক্রি করা একটি প্যারাসিটামল সিরাপ সেবনের তিন থেকে পাঁচ দিন পর কয়েকটি শিশু কিডনি জটিলতায় অসুস্থ হয়ে পরে। এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতে দেখে গাম্বিয়ার চিকিৎসকরা জুলাই মাসে এই বিষয়ে সতর্কতা জারি করেন।
"The four medicines are cough and cold syrups produced by Maiden Pharmaceuticals Limited, in India. WHO is conducting further investigation with the company and regulatory authorities in India"-@DrTedros https://t.co/PceTWc836t
— World Health Organization (WHO) (@WHO) October 5, 2022
চলতি বছরের আগস্ট মাসে কমপক্ষে ২৮ জন শিশুর মৃত্যু হয়। তবে মৃত্যুর সংখ্যা এখন ৬৬ জনে দাঁড়িয়েছে বলে বুধবার হু এর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। তবে মৃত্যুর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে স্থানীয় প্রশাসন ও স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ। এই ঘটনায় রীতিমত তোলপাড় শুরু হয়েছে দেশটিতে।
উল্লেখ্য, মেডেন ফার্মাসিউটিক্যালস তার ভারতীয় কারখানাগুলোতে এই ওষুধগুলি উৎপাদন করে থাকে। কোম্পানিটির ওয়েবসাইট থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, এই সব ওষুধ ভারতের পাশাপাশি এশিয়া, আফ্রিকা ও আমেরিকার মতো দেশগুলোতে রফতানি করা হয়।