ইরানে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন জনাব ইব্রাহিম রাইসি। কিন্তু তার আগেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার উপর নিষেধাজ্ঞা চাপিয়ে দিয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বক্তব্য– ইরাক-ইরান যুদ্ধের পর ইরানে যে বিচার পর্ব চলে তাতে নাকি রাইসি অনেককেই মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন। বর্তমান নিবন্ধে সেই প্রেক্ষাপট খতিয়ে দেখা হয়েছে। আর লিখেছেন আহমদ হাসান ইমরান
আর কিছুদিন পর ৫ আগস্ট ইরানের নয়া নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি তাঁর সাংবিধানিক পদে শপথ নেবেন। নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে তিনি আয়াতুল্লাহ আলি খামেয়েনি-র পর ইরানের সব থেকে শক্তিশালী ব্যক্তিত্ব হিসেবে পরিগণিত হবেন। আর এমনিতেও ইরানের সুপ্রিম লিডার আয়তুল্লাহ খামেয়েনি-র উত্তরাধিকারী হিসেবে অনেকে ইব্রাহিম রাইসি-কেই চিহ্নিত করে রেখেছেন।
ইরানের জনগণের ভোটে তিনি নির্বাচিত হয়েছেন। কিন্তু তাঁর এই নির্বাচনে বিশ্বের বেশ কিছু রাষ্টÉ ও সংস্থা মোটেই খুশি নয়। ইব্রাহিম রাইসি প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হওয়ায় তাঁরা বেজায় চটেছেন।
তা রাইসি-র অপরাধ কি? তাঁকে বলা হচ্ছে– তিনি একজন কট্টরপন্থী। তিনি পাশ্চাত্য কথিত ‘ডেথ কমিশন’-এর সদস্য হিসেবে শত শত বন্দিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন। রাইসি হচ্ছেন প্রথম ইরানী প্রেসিডেন্ট– যাঁর উপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। অবশ্য যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে রাইসি প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে ২০১৯ সালে।
হালাবজায় কেমিক্যাল অ্যাটাকের পর
নিহত শিশুকে ধরে
রেখেছেন মুমূর্ষু মা
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের ইব্রাহিম রাইসি-র এই প্রবল বিরোধিতার প্রেক্ষাপটটিও খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। এ প্রসঙ্গে মনে রাখতে হবে– ১৯৮০ সালে পাশ্চাত্যের সহায়তায় ইরাকের প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেন ইরানের উপর তীব্র সামরিক হামলা চালিয়েছিল। ইরান তখন ইমাম খোমেইনির নেতৃত্বে সদ্য ইসলামি বিপ্লবে বিজয়ী হয়েছে। ১৯৭৯ সালে ইরানের শাহেনশাহ মুহাম্মদ রেজা শাহ পহালভি ক্ষমতাচ্যুত হন। কিন্তু তার আগেই তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আশ্রয় নেন। গণতান্ত্রিক পাশ্চাত্য দুনিয়া ছিল রেজা শাহ পহালভি-র বাদশাহীতন্ত্রের ঘোরতর সমর্থক। আর ইরানী জনগণের ইসলামি বিপ্লব? পাশ্চাত্য দুনিয়ার ঘোরতর প্রতিপক্ষ ও শত্রু হিসেবে চিহ্নিত ছিল। তাই দেখা যায়– রেজা শাহকে ক্ষমতায় রাখতে না পেরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন– ফ্রান্স প্রভৃতি পাশ্চাত্য দুনিয়ার বাঘা বাঘা রাষ্ট্রগুলি ইরানের ইসলামি রাষ্ট্রের পতনের জন্য নানা ধরনের ষড়যন্ত্র শুরু করে। আর এই লক্ষ্যে প্রথম পদক্ষেপটি হল– তারা ইরাকের স্বৈরশাসক সাদ্দাম হোসেনকে ইরানের বিরুদ্ধে দলে টেনে ইরানের উপর হামলা চালাতে উদ্বুদ্ধ করে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহ পাশ্চাত্যের দেশগুলি সাদ্দাম হোসেনকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল– তারা অর্থ ও অস্ত্র দিয়ে সাদ্দামকে পুরোপুরি সহায়তা দেবে। আর বিনিময়ে সাদ্দাম হোসেন পাবেন ইরানের অনেকগুলি তৈল ক্ষেত্র ও ইরানি এলাকা। দ্বিতীয়ত– সাদ্দাম হোসেনের লাভ হবে যে শিয়া-প্রধান ইরাকে খোমেইনি-র ইসলামি বিপ্লব রফতানি হবে না। সাদ্দাম হোসেন নিজে ছিলেন সুন্নি। এছাড়া পশ্চিমারা নিশ্চয়ই সাদ্দাম হোসেনকে আরও অনেক প্রলোভন দিয়েছিল। তার মধ্যে সম্ভবত একটি ছিল যে– পশ্চিমারা তেল সমৃদ্ধ কুয়েত দখলের জন্য ইরাককে ছাড়পত্র দেবে। ইরাক-ইরান যুদ্ধের মাত্র দুই বছর পর ৯০-এর প্রথমে কিন্তু সাদ্দাম হোসেন কুয়েত দখল করেছিলেন। কিন্তু পশ্চিমাদের সেই কথিত এবং অকথিত সাহায্য শেষপর্যন্ত সাদ্দামের কপালে জোটেনি।
আর ইরাক-ইরান যুদ্ধের প্রেক্ষাপটেই ইব্রাহিম রাইসি-র বিরুদ্ধে যত অভিযোগ। ‘ডেথ কমিশন’ থেকে শুরু করে কট্টরপন্থী সব কিছুই। আদতে কিন্তু ইব্রাহিম রাইসি ধর্মীয় একজন স্কলার। তিনি ইরানের মাশহাদ শহরে বেড়ে ওঠেন। এই মাশহাদ শহর রয়েছে শিয়াদের অষ্টম ইমাম রেজার মাজার। আর সেই কারণে এই শহর শিয়াদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ইব্রাহিম রাইসি কৌম-এর বিখ্যাত মাদ্রাসায় পড়াশোনা করেন। তাঁর শিক্ষক ছিলেন ইরানের বর্তমান সুপ্রিম লিডার আলি হুসেইনি খামেইনি সহ বেশ কিছু প্রসিদ্ধ মুসলিম উলামা ও স্কলার।
প্রথম থেকেই বিচারক হিসেবে ইব্রাহিম রাইসি ক্রিমিনাল ও অপরাধীদের বিরুদ্ধে অনমনীয় অবস্থান নিয়েছেন। মনে রাখতে হবে– প্রখ্যাত মাদ্রাসায় শিক্ষা গ্রহণের সঙ্গে সঙ্গে তিনি আইনের উপর পিএইচডি ডিগ্রিও হাসিল করেন। ১৯৭৯ সালে রেজা শাহ পহালভি-র রাজতন্ত্রকে সরিয়ে ইসলামি বিপ্লব অনুযায়ী ক্ষমতা গ্রহণের জন্য যে তীব্র ও রক্তক্ষয়ী আন্দোলন চলে– তাতে ইব্রাহিম রাইসি নিজেও অংশগ্রহণ করেছিলেন। ইসলামি বিপ্লবের পর ইব্রাহিম রাইসি প্রসিকিউটর হিসেবেও খ্যাতি লাভ করেন। ১৯৮৫ সালে তিনি রাজধানী তেহরানে ডেপুটি প্রসিকিউটর হিসেবে যোগ দেন। এরপর তিনি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্টিত ছিলেন। তিনি ২০১৭ সালে ইরানের প্রেসিডেন্ট পদেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। জনগণের ৩৮ শতাংশ ভোট পেয়েও তিনি তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী বর্তমান প্রেসিডেন্ট হাসান রোহানির কাছে পরাজিত হন। এ বছরে যে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হল তাতে তিনি বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছেন। তার আগে ইরানের সুপ্রিম লিডার আয়াতুল্লাহ খামেইনি তাঁকে দেশের প্রধান বিচারপতি পদে নিযুক্তি দেন।
বিচারপতি হিসেবে ইব্রাহিম রাইসি যে বেশ কিছু মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন তা তিনি কখনই অস্বীকার করেননি। পশ্চিমা বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা ও পাশ্চাত্ব্যের রাষ্ট্রগুলি বহুবার তাঁর সমালোচনা করেছে। তিনি যাদের যাবজ্জীবন কারাদন্ড এবং মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন তার সমর্থকরা সেই প্রেক্ষাপটটি পশ্চিমাদের স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। সদ্য ইসলামি বিপ্লবে বিজয়ী ইরানের উপর পশ্চিমাদের সমর্থনে ইরাকের শাসক সাদ্দাম হোসেন ১৯৮০ সালে এক রক্তক্ষয়ী ও প্রাণঘাতী হামলা চালায়। সাদ্দামের সঙ্গে ছিল পশ্চিমাদের দেওয়া মারাত্মক সব অস্ত্রশস্ত্র। কিন্তু তা সত্ত্বেও সাদ্দাম হোসেন ইরানকে পরাজিত করতে পারেনি। ইরানের রেভ্যুলেশনারি গার্ড ও ইসলামি বিপ্লবের প্রতি বিশ্বস্ত সেনাবাহিনী ইরাকের প্রবল হামলাকে রুখে দেয়। এই যুদ্ধ চলেছিল দীর্ঘদিন– প্রায় ৮ বছর। কিন্তু ইমাম রুহুলল্লাহ খোমেইনির তেজদৃপ্ত আধ্যাত্মিক ও দুনিয়াবি নেতৃত্ব সাদ্দামের অধীনে জড়ো হওয়া বিভিন্ন দেশের প্রচ্ছন্ন জোটকে পরাজিত করে। সাদ্দাম হোসেন ৮ বছর পর ১৯৮৮ সালে যুদ্ধ বিরতি করতে বাধ্য হন। কিন্তু তার আগে সাদ্দাম হোসেন ইরানের বেসামরিক ব্যক্তিদের উপরও হত্যাযজ্ঞ চালাতে কসুর করেননি। তাঁর সব থেকে বড় যুদ্ধাপরাধ হচ্ছে– তিনি শুধু আমেরিকা– ব্রিটেন– ফ্রান্স প্রদত্ত সমরাস্ত্রই ব্যবহার করেননি– একইসঙ্গে তিনি ব্যবহার করেছেন ইরানের বেসামরিক জনগণের উপর মাস-কিলিং বা গণবিধ্বংসী অস্ত্র। এর মধ্যে সব থেকে উল্লেখযোগ্য হল– প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর নিষিদ্ধ রাসায়নিক গ্যাস এবং মারণাস্ত্রও সাদ্দাম হোসেন ইরানী সামরিক বাহিনী ও জনগণের উপর নির্বিচারে ব্যবহার করেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে– ইরানের হালাবজা-য় রাসায়নিক অস্ত্রে শিশু-নারী-বৃদ্ধ সহ শত শত বেসামরিক মানুষের করুণ ও যন্ত্রণাদায়ক মৃত্যু। বিধ্বংসী এই রাসায়নিক অস্ত্র সাদ্দামকে সরবরাহ করেছিল ইরানকে পরাজিত করার জন্য পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলি। ইরান কিন্তু পরাজিত হয়নি। বরং সাদ্দামকে যুদ্ধ বিরতি মেনে নিতে বাধ্য করেছিল। সামরিক ও নৈতিক বিজয় হাসিল করার পরই ১৯৮৯ সালে খোমেইনি ইন্তেকাল করেন।
১৯৮৮ সালে যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর ইরান যে বিপুল সংখ্যক বন্দিকে গ্রেফতার করেছিল তাদের বিচার শুরু হয়। পাশ্চাত্য মানবাধিকার সংস্থা ও রাষ্ট্রগুলি যাকে ‘ডেথ কমিশন’ বলে অভিহিত করেছেন। ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের সেই বিচার প্রক্রিয়ায় তরুণ ইব্রাহিম রাইসিও ছিলেন একজন বিচারক। মনে রাখতে হবে– ৮ বছরের এই যুদ্ধ শেষে কোনও বন্দি বিনিময় চুক্তি হয়নি।
যে শত শত ইরাকি সেনা– গোয়েন্দা অফিসার– ইরান বিরোধী বিভিন্ন দেশের ইনটেলিজেন্স এজেন্ট– গুপ্তচর– রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের ষড়যন্ত্রে শামিল এবং অন্য সকল চক্রান্তকারীদের ইরান গ্রেফতার করেছিল– ১৯৮৮ সালের পর তাদের বিচার পর্ব শুরু হয়। ইরাকের এই সব লোকেরা যারা বহু নিরপরাধ মানুষের মৃত্যুর জন্য দায়ী– তাদের বিচার প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়েছিলেন ইরানের বর্তমান নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি। মনে রাখতে হবে– এই যুদ্ধে ইরানের কয়েক লক্ষ সেনা এবং শিশু-বৃদ্ধ-নারী-সহ সাধারণ মানুষ প্রাণ হারিয়েছিলেন। পঙ্গু ও কেমিক্যাল অস্ত্রে জীবন্মৃত হয়ে রয়েছেন আরও কয়েক লক্ষ মানুষ। এই মৃত্যু মিছিলের জন্য যারা দায়ী তাদেরকে কিন্তু ইরান ফায়ারিং স্কোয়াড-এর সামনে দাঁড় করিয়ে হত্যা করেনি। বরং তাদেরকে বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে যেখানে প্রয়োজন কেবল সেখানে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আর এই বিচারে অংশ নিয়েছিলেন ইব্রাহিম রাইসি। আর এটাই হয়ে গেল তাঁর বড় অপরাধ!
কিন্তু যারা কিংবা যাদের প্ররোচণায় লক্ষ লক্ষ মানুষকে হত্যা করা হয়েছে ও জীবন্মৃত অবস্থায় যারা পড়ে রয়েছে বিচারের দ্বারাও সেই খুনি ব্যক্তিদের ‘অপরাধী’ বলা যাবে না। কিংবা শাস্তিও দেওয়া যাবে না। এই হল পশ্চিমাদের মূল্যবোধ ও সুবিচারপূর্ণ নীতি!
প্রেসিডেন্ট পদে রাইসি নির্বাচিত হওয়ার পরই পশ্চিমাদের ব্যাপক শোরগোলের মুখে ইব্রাহিম রাইসি নিজে যা বলেছেন তাহল– ‘বিচারকের পদে থাকাকালীন আমি যে রায় দিয়েছি তার দ্বারা আমি মানব অধিকারকে রক্ষা করেছি।’ তিনি আরও বলেন– যারা মানুষের অধিকারকে ভঙ্গ করে এবং নিরাপত্তাহীনতা তৈরির চেষ্টা করে তাদের প্রতি ব্যবস্থা নিয়েছি। তিনি আরও বলেন– যদি কোনও আইন বিশারদ কিংবা বিচারক মানুষের অধিকার রক্ষার চেষ্টা করে এবং সমাজের সুরক্ষার নীতিকে ঊর্ধে তুলে ধরে তবে তার প্রশংসাই করা উচিত। কারণ– সে মানুষের প্রতি ভীতি প্রদর্শন এবং তাদের উপর হামলাকে নিবারণ করতে চেয়েছে। ইব্রাহিম রাইসি আরও বলেছেন– আমরা সেইসব দেশের কথা বলতে পারি যারা ভিন্ন দেশের বিপর্যয় সৃষ্টি করার জন্য সন্ত্রাসবাদী দল তৈরি করেছে। তাদেরকে অস্ত্র সাহায্য করছে।
নুরেমবার্গ মিলিটারি কোর্টে ফাঁসি হল
এইচ ফ্যাঙ্কের
বলা হয়ে থাকে– শ্রী হিটলার ও তাঁর সহযোগিরা নাকি কয়েক লক্ষ ইহুদিকে গ্যাস চেম্বার ও অন্যান্য স্থানে হত্যা করেছিলেন। তার জন্য ন্যুরেমবার্গে আন্তর্জাতিক মিলিটারি ট্র্যাইবুনাল গঠন করে নাৎসীদের বিচার করা হয়েছিল এবং অনেক ব্যক্তিকেই মৃত্যুদণ্ড ও যাবজ্জীবন প্রদান করা হয়। অনেককে ফাঁসি কাষ্টে দীর্ঘক্ষণ ঝুলিয়ে রেখে হত্যা করা হয়। ইসরাইলিরা এখনও তাদের কথিত হলোকাষ্টের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের এই বৃদ্ধ বয়সেও খুঁজে বের করে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করছে। এ নিয়ে অবশ্য প্রশ্ন ওঠে না। মার্কিন যুক্তরাষ্টÉও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার মুখে প্রায় বিনা কারণে এশিয় রাষ্ট্র, জাপানের হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে অ্যাটম বোমা নিক্ষেপ করে লক্ষ লক্ষ মানুষকে হত্যা করে। যুদ্ধ বিশারদরা বলছেন– এর কোনও প্রয়োজনই ছিল না। জাপান তখন আত্মসমর্পণ করতেই যাচ্ছিল। কেউ কিন্তু বলে না– নিরাপরাধ বেসামরিক জাপানীদের হত্যা করার দায়ে মার্কিন সেনা নায়ক ও তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ট্রুমানের বিচার করতে হবে। আর ভিয়েতনাম– আফগানিস্তান– সিরিয়া– ইরাক– ফিলিস্তিনিদের কথা না বলাই ভাল। অসহায়দের উপর ধ্বংসযজ্ঞ ও তাদের মৃত্যুর সংখ্যা নতুন প্রজন্মের কাছে লুকিয়ে রাখাই বোধহয় শ্রেয়। কারণ– কে এই হত্যাকারীদের বিচার করবে, সিরিয়া– ফিলিস্তিনি ও ইরাকে জেনোসাইডের বিচার করার কেউ নেই। যা বিচার হবে তা হবে পশ্চিমাদের স্বার্থে– মিত্র ইসরাইলের স্বার্থে।
৫ আগস্ট প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি-র শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী জনাব নরেন্দ্র মোদিকে ইরান আমন্ত্রণ করেছে। আর সংকেত দেওয়া হয়েছে– ভারত এই আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছে। তবে নয়াদিল্লি থেকে কে যাবেন তেহরানে– সেই সিদ্ধান্ত এখনও হয়নি।