দেবশ্রী মজুমদার, বীরভূম: এবার ভ্যাকসিন বিভ্রাটের খবর বীরভূমে। বলা যায় মধ্যপ্রদেশের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটল বীরভূমে। বিজেপিশাসিত রাজ্য মধ্যপ্রদেশে বাবার মোবাইলে ভ্যাকসিন নেওয়ার শংসাপত্র আসে ১৩ বছরের ছেলের। এবার প্রায় একই কাণ্ডের সাক্ষী থাকল বীরভূম। দ্বিতীয় ডোজের টিকাকরণ নিয়েছেন ছেলে অমর মণ্ডল। আর শংসাপত্র এল ছেলের আইডিতে মৃত পিতা ঈশ্বর দুলাল মণ্ডলের নামে। আর ছেলের শংসা পত্রের প্রিন্ট এল অন্য জনের ভোটার আইডি নম্বরে।
শুধু এখানেই শেষ নয়, সেলের বাজারের মতো, তিনটির সঙ্গে একটা ফাউ। কারণ মিললো চোদ্দ বছর আগে মৃত বাবার টিকাকরণের শংসাপত্র। তাও আবার বয়স কমিয়ে অর্থাৎ ছেলের বয়সে। অথচ যাঁকে নিয়ে এত কাণ্ড সেই দুলালবাবু সরকারি নথিতে মৃত দুহাজার সাত সালে ২০০৭ সালে। অর্থাৎ করোনার আবির্ভাবের তেরো বছর বা আজ থেকে চোদ্দ বছর আগে তিনি প্রয়াত। শেষমেশ তাঁরই টিকাকরণ সম্পূর্ণ হল মর্ত্য থেকেই।
এহেন ভৌতিক কাণ্ডের ব্যাপারে মুখে কুলুপ এঁটেছে বিভাগীয় স্বাস্থ্য দফতর। আর বিভাগীয় দফতরের কর্মদক্ষতায় তাজ্জব পরিবার। ক্ষুব্ধও।
জানা গেছে, অমর মণ্ডলের বাড়ি তারাপীঠের কাছে কবিচন্দ্রপুর গ্রামে। চলতি বছরের পয়লা এপ্রিল মা তোলাবতী মণ্ডল ও স্ত্রীকে নিয়ে পেশায় চাঁছির প্যাড়া বিক্রেতা খরুণ পঞ্চায়েতের বেলিয়া গ্রামের উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রে কোভিড টিকা নিতে যান। পরবর্তীকালে নির্দিষ্ট দিনে দ্বিতীয় ডোজও নেন তাঁরা। তিন জন টিকা নিলেও, মিলল চার চারটি শংসাপত্র!
প্রতিবেশী বুদ্ধদেব দাস বলেন, কলিতে বোধ হয় সবই সম্ভব। যত অদ্ভুতুরে কাণ্ড। তাঁর ক্যাফেতেই প্রিন্ট করাতে আসেন অমর মণ্ডলেরা। চোদ্দ বছর আগে মৃত পিতা দুলাল মণ্ডলের নামে ছেলের আইডি নম্বর দিয়ে ছেলের বয়স বসিয়ে টিকাকরণের শংসাপত্র বের হয় কি করে? আবার অন্যজনের আইডিতে ছেলে অমর মণ্ডলের শংসা পত্র বের হয় কি করে? শুধু তাই নয়, মা তোলাবতী মণ্ডলের দ্বিতীয় ডোজ সম্পূর্ণ হলেও, বের হচ্ছে শুধুমাত্র প্রথম ডোজের শংসাপত্র।