নসিবুদ্দিন সরকার, হুগলি: বন্যায় ভেসেছে গ্রাম। ঘরবাড়ি জলের তলায়। দু’বছরের শিশুকন্যাকে কোলে নিয়ে প্রাণ বাঁচাতে মা মিনা রাব চলে আসেন বাপের বাড়িতে। কিন্তু তাতেও শেষ রক্ষা হল না। বাপের বাড়িতে হাই ড্রেনের জলে পড়ে মর্মান্তিক ভাবে মৃত্যু হল ওই শিশুর। ওই ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে।মর্মান্তিক ওই ঘটনাটি ঘটেছে তারকেশ্বর পুরসভার 14 নম্বর ওয়ার্ডে।
উল্লেখ্য, একটানা বৃষ্টিপাত ও ডিভিসির ছাড়া জলের প্রভাবে হুগলির একাধিক এলাকা বন্যা প্লাবিত হয়ে পড়েছে। তারকেশ্বর পুরসভার 14 নম্বর ওয়ার্ডও জলমগ্ন হয়ে পড়ে। তারকেশ্বর পুরসভার ভিতরে রয়েছে হাইড্রেন। ওই হাইড্রেন দিয়ে পুরসভা এলাকার ও তার বাইরের কিছু এলাকার জল গিয়ে জয়কৃষ্ণ বাজার এলাকায় রনের খালে পড়ে। মৃত শিশুকন্যাটির পরিবার সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সকাল দশটা নাগাদ শিশুটি তার মামার বাড়ির বাইরে খেলা করছিল। সেই সময়ে তার মা মিনা রাব সংসারের কাজে ব্যস্ত ছিলেন। শিশুটি খেলতে খেলতে মায়ের দৃষ্টির অলক্ষ্যে ওই হাই ড্রেনে পড়ে যায়। শিশুটির মা মিনা রাব ঘুণাক্ষরেও তা টের পাননি। ড্রেনের জলের স্রোতে ভাসতে ভাসতে শিশুটি প্রায় এক কিলোমিটার দূরে চলে যায়। শিশুটিকে ভাসতে দেখতে পায় স্থানীয় কিছু মানুষ। তারাই শিশুটিকে উদ্ধার করে তারকেশ্বর গ্রামীণ হাসপাতলে নিয়ে যায়।চিকিৎসকরা শিশুটিকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গত এক সপ্তাহ আগে বিহারের বন্যা হয়। বন্যার হাত থেকে বাঁচতে মিনা রাব তার দু বছরের শিশুকন্যাকে নিয়ে চলে আসেন বাপের বাড়ি তারকেশ্বরে। মিনা রাব তার শিশুকন্যাকে নিয়ে দাদার কাছেই থাক ছিলেন। শিশুকন্যার মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনায় মিনা দেবি কাঁদতে কাঁদতে বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন। কোনরকমে তিনি বলেন, “চোখের আড়াল করেছি বলেই ও চলে গেলো আমাকে ছেড়ে।”ওই ঘটনায় এলাকায় জুড়ে শোকের ছায়া।পুলিশ মৃতদেহ ময়না তদন্তে পাঠায়।