পুবের কলম ওয়েবডেস্কঃ সমাজকর্মী ও সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিবাদী কন্ঠস্বর মোহাম্মদ আসিফ খানের অ্যাকাউন্টটি টুইটার স্থগিত করেছে।দেশে সংখ্যালঘু এবং মহিলাদের বিরুদ্ধে ঘৃণা ছড়ানোর ঘটনার প্রতিবাদ করে থাকেন আসিফ।এই পদক্ষেপ আবারও ভারতে সমালোচনামূলক কণ্ঠ সেন্সর করায় সোশ্যাল মিডিয়া জায়ান্টের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠল। অপর এক সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাক্টিভিস্ট সাকেত গোখলে বলেন, আসিফের অ্যাকাউন্টটি স্থগিত করা “বড় ধাক্কা ও উদ্বেগের বিষয়”।
একইভাবে সমাজকর্মী আশরাফ হুসেন হ্যাশট্যাগ টুইটের মাধ্যমে আসিফের অ্যাকাউন্ট স্থগিত করে দেওয়ার নিন্দা করেছেন।এমন স্ক্রিনশটও তিনি পোস্ট করেছেন। ৮০,০০০ এর বেশি অনুগামী রয়েছে আসিফের। শুক্রবার সকালে তিনি তার বন্ধুর কাছ থেকে একটি বার্তা পান।তাদের কাছ থেকে জানতে পারেন যে তার অ্যাকাউন্টটি স্থগিত করা হয়েছে।
স্থগিতের আগে তাঁর শেষ টুইটটি উমর গৌতমকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে ছিল, যাকে ‘জোরপূর্বক ধর্মান্তরের’ অভিযোগে উত্তর প্রদেশের সন্ত্রাসবিরোধী স্কোয়াড গ্রেপ্তার করেছে ।
আসিফ টু্ইটারে লিখেছিলেন, আপনি কি মনে করেন যে ৮০% হিন্দু জনসংখ্যার দেশে কোনও ব্যক্তি জোর করে বা ঘুষ দিয়ে ১০০০জনকে ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত করতে পারেন? ” আসিফ একটি সংহতি হ্যাশট্যাগ # স্ট্যান্ড উইথ উমর গৌতম লিখেছেন। “নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে” এই প্ল্যাটফর্মের নিয়ম লঙ্ঘনের জন্য তার অ্যাকাউন্ট স্থগিত করা হয়েছে বলেছে ট্যুইটার।
“এটি ট্যুইটারের উদ্ভট কাণ্ড,” আসিফ বলেন। ২০২০ সালের জানুয়ারিতে তাঁর অ্যাকাউন্টটি একবার স্থগিত করা হয়।
উল্লেখ্য, টুইটার, ইউটিউব, ফেসবুকের মতো সংস্থাগুলিকে আইনি ভাষায় মধ্যস্থতাকারী সংস্থা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। অর্থাৎ, এই প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে সাধারণ মানুষ তাদের নিজেদের বক্তব্য প্রকাশ করতে পারে। মধ্যস্থতাকারী সংস্থাগুলিকে এক ধরনের আইনি রক্ষাকবচ দেওয়া হয়। যার ফলে যে কেউ যে কোনো সময় তাদের বিরুদ্ধে যে কোনো ধারায় মামলায় করতে পারে না।ভারতে টুইটারের ক্ষেত্রে সেই আইনি রক্ষাকবচ তুলে নেওয়া হয়েছে।
বিরোধের সূত্রপাত হয় দিনকয়েক আগে উত্তরপ্রদেশে এক ব্যক্তিকে মারধরের ঘটনা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার পর। দৃশ্যত মুসলিম ওই ভদ্রলোককে প্রথমে কয়েকজন ঘিরে ধরে প্রবল মারধর করে। পরে তার দাড়ি কেটে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। টুইটারে সেই ভিডিও ভাইরাল হয়। উত্তর প্রদেশ সরকারের বক্তব্য, ওই ঘটনার সঙ্গে সাম্প্রদায়িক বিষয় জড়িত নয়। টুইটারকে ওই মন্তব্যগুলি সরিয়ে দিতে বলা হয়। কিন্তু টুইটার তা করেনি। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি এবং নেটিজেনদের একাংশের অভিযোগ, ‘যাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার, তাদের গায়ে হাত না দিয়ে টুইটারকে এবং প্রতিবাদীদের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হচ্ছে। শুধু তাই নয়, এই কাজের মাধ্যমে উত্তর প্রদেশ সরকার নিজেদের সাম্প্রদায়িক চরিত্র স্পষ্ট করছে। এর আগেও উত্তর প্রদেশে একের পর এক মারধরের ঘটনা ঘটেছে। অন্যদিকে কেন্দ্রীয় সরকার টুইটারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে বাকস্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা করেছে।’